মঙ্গলবার, ০৯ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৭:১০:০৫

'আগামীকাল তাপমাত্রার আরো উন্নতি, কমবে শৈত্য প্রবাহ'

'আগামীকাল তাপমাত্রার আরো উন্নতি, কমবে শৈত্য প্রবাহ'

নিউজ ডেস্ক: রাজধানীতে আজ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামীকাল তাপমাত্রার আরো উন্নতি হয়ে ধীরে ধীরে কমে আসবে শৈত্য প্রবাহ। তবে, এ মাসের শেষে আরো একটি শৈত্য প্রবাহ হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোসাম্মৎ আয়েশা খাতুন বলেন, 'দেশে যে তীব্র শৈত্য প্রবাহ বিদ্যমান আছে। বিশেষ করে উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে যে তাপমাত্রা তা এখনও বিদ্যমান আছে। কিন্তু মিনিমাম তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। তাপমাত্রা বাড়লেও শৈত্যপ্রবাহ কিন্তু চলে যাবে না।'

এদিকে, তীব্র শীতে কাঁপছে দেশ। উত্তরাঞ্চলের মানুষ কাঁপছে ঠক ঠক করে। পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় গতকাল সোমবার তাপমাত্রা নেমেছিল ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এটিই ৫০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের সর্বনিম্তা মাত্রা। এর আগে ১৯৬৮ সালে বাংলাদেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড ছিল মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে ২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রংপুর বিভাগের অবশিষ্ট জেলাগুলোতেও গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করে।। গতকাল সৈয়দপুরে তাপমাত্রা নেমে যায় ২.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এসব অঞ্চলে প্রচণ্ড শীতে জনজীবন প্রায় বিপর্যস্ত। গতকাল শীতে পাবনায় ছয়জনসহ মোট ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।  

হঠাৎ এত ঠাণ্ডা নেমে আসায় মানুষের একেবারে দিশেহারা অবস্থা। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা মোকাবেলার প্রস্তুতি না থাকায় কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটছে। এক সময়ের মঙ্গাপ্রবণ রংপুর বিভাগের সর্বত্রই অভাবী মানুষের বাস। এরা অনেকেই নদীতীরবর্তী চরাঞ্চলে অথবা বিশাল ফসলের মাঠে অথবা বড় রাস্তার পাশে খড়ের তৈরি ছাউনি ও বেড়া নির্মাণ করে বাস করে। মুষ্টিমেয় কিছু ছাড়া রংপুর বিভাগে বেশির ভাগ কাঁচা ঘরবাড়িতে বাস করে মানুষ। ঘরে আশ্রয় নিয়েও কনকনে শীত প্রতিরোধ করতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। এ এক অসহনীয় অবস্থা। না রাতে ঘুমিয়ে শান্তি পাওয়া যাচ্ছে, না দিনে কাজে বের হয়ে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছেন। শান্তিতে রাত কাঠানোর জন্য না আছে ভারী লেপ-কম্বল এবং দিনের বেলা কাজে বের হওয়ার জন্য না আছে উপযুক্ত গরম জামা-কাপড়। হাঁড় কাঁপানো এ শীত শুধু যে রংপুর বিভাগে তা নয়। রাজশাহী বিভাগেও প্রচণ্ড ঠাণ্ডা হাওয়ায় নাকাল অবস্থা মানুষের। তবে রংপুর বিভাগের চেয়ে রাজশাহী বিভাগে ঠাণ্ডা তুলনামূলকভাবে একটু কম। আবহাওয়া অফিস বলছে, দু’টি বিভাগেই তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান জানিয়েছেন, ১৯৪৮ সাল থেকে আবহাওয়া অফিসে তাপমাত্রার রেকর্ড রয়েছে। দেখা যাচ্ছে ১৯৬৮ সালে শ্রীমঙ্গলে তাপমাত্রা নামে ২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। কিন্তু আজকে (গতকাল সোমবার) তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলের রেকর্ড ভেঙেছে।

রাজধানী ঢাকায় রংপুর অথবা রাজশাহী বিভাগের মতো এতটা ঠাণ্ডা পড়েনি। প্রায় দেড় কোটি মানুষ এখানে অল্প পরিসরে গাদাগাদি করে বাস করে বলে ঢাকার তাপমাত্রা খুব বেশি নামে না। ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা নেমে গেলেই খুব অস্বস্তিতে পড়েন ঢাকাবাসী। এখানে পাকা ভবনে যত মানুষ বাস করেন তার চেয়ে বেশি মানুষ বাস করেন শহরের মাঝখানে সরকারি জমিতে, রেল লাইনের পাশে ও নিম্নাঞ্চলে। এসব মানুষ বেশ বেকায়দায় পড়েছেন হঠাৎ এ প্রচণ্ড শীতে।

প্রচণ্ড শীতে মানুষের মধ্যে শুরু হয়েছে নানা ধরনের সমস্যা। কারো ডায়রিয়া, কেউ ভুগছেন হাঁপানিতে। আবার সর্দি-কাশি খুবই সাধারণ বিষয়। কেউ কেউ ভুগছেন প্রচণ্ড মাথা ব্যথায়। হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসকেরা সর্দি-কাশি, হাঁপানি ও ডায়রিয়ার রোগী বেশি আসছেন বলে জানান। চিকিৎসকদের চেম্বারে এত রোগী আসছেন যে রাত পর্যন্ত তাদের চেম্বারেই থাকতে হচ্ছে।
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে