বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৫, ০২:০১:৩৩

নিরাপত্তায় বিজিবি মোতায়েন

নিরাপত্তায় বিজিবি মোতায়েন

নিউজ ডেস্ক: বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল থাকা কেন্দ্র করে যেন নাশকতা না হয়, সে ব্যাপারে দেশজুড়ে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাজধানী ঢাকায় অন্তত ১৬ প্লাটুন ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান এবং মুজাহিদের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরেও নেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ ছাড়া ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মোকাবেলায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড মোকাবেলায় ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি 'অত্যন্ত ভালো' বলে দাবি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশকে সহযোগিতার জন্য সারাদেশে বিজিবি মোতায়েন করা হবে। সূত্র জানায়, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ দেশের বিভিন্ন কারাগার এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোয় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি রয়েছেন। পুলিশ সদর দপ্তরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এমনিতেই সতর্ক আছেন। এর পরও গতকাল সাকা ও মুজাহিদের ফাঁসির রায় রিভিউয়ের আবেদন আপিল বিভাগে খারিজের পর আরও বেশি সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে জামায়াত অধ্যুষিত জেলার পুলিশ সুপারদের বলা হয়েছে, যে কোনো মূল্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে। গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্য সমন্বয় করে নাশকতাকারীদের দমন করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, জামায়াতের পাশাপাশি বিএনপিতে সাকা চৌধুরীর অনুসারীদের কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে জামায়াত-শিবিরের নাশকতা ঠেকানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে পুলিশের। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার নাশকতার চেষ্টা হলে কঠোর হাতে দমন করা হবে। র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, রায় কার্যকরের আগের ও পরের বিষয় মাথায় রেখে র‌্যাবের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সারাদেশে র‌্যাবের ব্যাটালিয়নগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সতর্ক অবস্থায় থাকতে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় চেকপোস্ট ও টহল টিম বাড়ানোর পাশাপাশি নাশকতা দমনে গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। বিজিবি সূত্র জানায়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় গতকাল সন্ধ্যা থেকে ঢাকায় অন্তত ১৬ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকার বাইরে কয়েকটি জেলায় চলমান বিশেষ অভিযানে পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে বিজিবি রয়েছে। কোনো জেলায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন বিজিবির সহায়তা চাইলে তা দিতে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিজিবি সদস্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ডিএমপির বিভিন্ন জোনের একাধিক উপ-কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রায় কেন্দ্র করে জামায়াতের ডাকা হরতালের নিরাপত্তা মাথায় রেখে পুরো রাজধানীতে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিএনপি কার্যালয়ের আশপাশেও রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। বিমানবন্দরে সতর্কতা বৃদ্ধি : গতকাল বুধবার সাকা ও মুজাহিদের রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পরপরই ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বিমানবন্দরের মূল প্রবেশপথে ছয়জনের বদলে দশজন নিরাপত্তাকর্মী রাখা হয়েছে। অন্যান্য পয়েন্টেও নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার তানজিনা আক্তার বলেন, নাশকতা ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ নেই। বিমানবন্দর থানার ওসি কামাল উদ্দিন বলেন, গতকাল সকাল থেকে বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দারা সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। ১৯ নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/পিবি/পিপি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে