বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৫, ০২:১৪:১৯

বাকরুদ্ধ সাকার পরিবার

বাকরুদ্ধ সাকার পরিবার

ঢাকা : একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করে ফিরে গেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে সাক্ষাৎ শেষে পরিবারের ১৫ সদস্য ঢাকা কেন্দ্রীয় কারগার ত্যাগ করেন। তারা ভেতরে প্রায় এক ঘণ্টা ছিলেন। কারাগার থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি পরিবারের সদস্যরা। তারা গাড়িতে করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। এর আগে বেলা ১২টার পর তিনটি গাড়িতে করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্যের স্ত্রী, ছেলে, পুত্রবধূসহ পরিবারের ২২ জন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আসেন। এদের মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষাতের আবেদন করা হয়। ফলে বাকি সাতজনকে বাইরে বের করে দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। সাক্ষাতের অনুমতি পাওয়াদের মধ্যে রয়েছেন- সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী, তার ছেলে ফজলুল কাদের চৌধুরী, হুম্মাম কাদের চৌধুরী, ফারদিন কাদের চৌধুরী, পুত্রবধূ তানিয়া খন্দকার, মেয়ের জামাই জাফর ইমাম, ভাই গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, জামাল উদ্দিন কাদের চৌধুরী, বোন হাসিনা কাদের সিনহা, জোবায়দা মনোয়ার, শ্যালক হুম্মন আহম্মেদ কাদেল, ভাবি সেলিনা কাদের চৌধুরী, ভাগ্নি মাহবুবা চৌধুরী, ভাতিজা শাকিব কাদের চৌধুরী ও চাচাতো ভাই ইকবাল হোসেন। ভেতরে যাওয়ার আগেও পরিবারের সদস্যরা কেউ সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। গতকাল বুধবার কাশিমপুর কারাগার থেকে তাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসা হয়। এদিকে, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াত নেতা আলী আহসান মুজাহিদের রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় বুধবার থেকেই কারাগারের আশপাশে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা। উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার রায় পুনর্বিবেচনায় (রিভিউ) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আবেদন খারিজ করে আপিল বিভাগ। এর ফলে তার মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই খারিজ আদেশ দেয়। বেঞ্চের বাকি সদস্যরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। গত ৩০ সেপ্টেম্বর সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মুজাহিদের মানবতাবিরোধী মামলার চূড়ান্ত রায় প্রকাশ করে। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর নিয়ম অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করতে হয়। সে অনুযায়ী সময় শেষ হয়ে যাওয়ার একদিন আগেই পৃথকভাবে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা। গত ২৯ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির আদেশ বহাল রাখে আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া দুজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখে। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এর আগে ২০১৩ সালের ২৯ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ড রায়ের বিরুদ্ধে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী আপিল করেন। ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করে। হরতালে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের একটি মামলায় ২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে। পরে ১৯ ডিসেম্বর তাকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের ২৩টি অভিযোগে ২০১৩ সালের ৪ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মধ্যদিয়ে তার বিচারকাজ শুরু হয়। ১৯ নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে