বুধবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮, ১২:৩৫:২৩

বনানীর বিতর্কিত সেই রেইনট্রি হোটেল বৈধ হলো

বনানীর বিতর্কিত সেই রেইনট্রি হোটেল বৈধ হলো

দীন ইসলাম : দুই তরুণীর সম্ভ্রমহানীর ঘটনা নিয়ে বিতর্কিত বনানীর সেই ‘রেইনট্রি হোটেল’ বৈধতা পেয়েছে। আবাসিক ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদন নিয়ে হোটেল নির্মাণ করলেও এখন প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে বৈধ করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

রাজউকের সর্বশেষ বোর্ড সভায় রেইনট্রি হোটেলটি যে তারিখ থেকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে ওই তারিখ থেকেই বাণিজ্যিক ফি আদায়ের মাধ্যমে বাণিজ্যিকে রূপান্তরের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ফলে ‘রেইনট্রি হোটেল’ বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের আর কোনো বাধা রইলো না।

এর আগে গেল বছরের ২৮ মার্চ রেইনট্রি হোটেলেই জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে দুই তরুণীকে সম্ভ্রমহানী করা হয় বলে একই বছরের ৬ই মে করা মামলায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীদের একজন। এরপর থেকে হোটেলটির নাম দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে।

সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয় ঝালকাঠি-১ আসনের সংসদ সদস্য বজলুর রহমান হারুন ওরফে বিএইচ হারুন আলোচিত হোটেলটির মালিক। কিন্তু এমপি বলেন, আমি নই, আমার ছেলেরা এ হোটেলটি চালান। বনানী আবাসিক এলাকার ‘কে’ ব্লকের ২৭ নম্বর সড়কের ৪৯ নম্বর প্লটের ক্রয় সূত্রে মালিক বজলুর রহমান হারুনের স্ত্রী মুনিরা আক্তার।

এ প্লটেই প্রথমে আবাসিক ভবনের নকশা অনুমোদন নিয়ে বাণিজ্যিক ‘রেইনট্রি’ হোটেল নির্মাণ করা হয়। ২০১৬ সালের নভেম্বরে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রীর কাছে একটি আধা-সরকারি পত্র (ডিও লেটার) দেন সংসদ সদস্য বিএইচ হারুন। ওই ডিও লেটারে বনানীর ২৭ নম্বর সড়কের ৪৯ নম্বর প্লটটি বাণিজ্যিক করার অনুরোধ করা হয়।

তার ডিও লেটার দেয়ার আগেই রাজউকের এক সিদ্ধান্তে কপাল খুলে যায় বিএইচ হারুনের পরিবারের। গুলশান ও বনানী এলাকার বড় রাস্তার পাশের প্লটগুলো বাণিজ্যিক করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কারণ রেইনট্রি হোটেলের সামনের রাস্তা ৬০ ফুট প্রশস্ত। এছাড়া এটি কামাল আতাতুর্ক এভিনিউর সঙ্গে সংযুক্ত। রেইনট্রি হোটেলের জমির মালিক মনিরা আক্তার তার প্লটে রাজউকের নকশা অনুযায়ী বহুতল ভবন নির্মাণ করেন।

এর আগে ১৯৮৯ সালের সেপ্টেম্বরে পাঁচ কাঠা ৮ ছটাক ২২ বর্গফুটের প্লটটি কেনেন এমপি বিএইচ হারুন। এরপর ১৯৯৮ সালে ঢাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নেন। যদিও ওই ঋণ পরিশোধের কাগজপত্র তিনি জমা দিয়েছেন। রাজউক সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে আবাসিক প্লটকে অ- আবাসিক কাজে ব্যবহারের অভিযোগ উঠে প্লটের মালিক মুনিরা আক্তারের বিরুদ্ধে। ওই বছরের ৩০শে জুলাই রাজউক থেকে চিঠি দিয়ে অ-আবাসিক ব্যবহার বন্ধের জন্য বলা হয়।

নানা দেন-দরবার শেষে ২০০৬ সালের ৫ই এপ্রিল অ-আবাসিক ব্যবহারের অভিযোগ থেকে মুনিরা আক্তারকে অব্যাহতি দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সাল থেকেই ‘রেইনট্রি’ হোটেল নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়। কারণ ওই বছরের ৩১শে জুন বিএইচ হারুনের স্ত্রী মুনিরা আক্তারকে সংশোধিত নকশা অনুমোদনের ছাড়পত্র দেয়া হয়।

একই বছরের ২০শে ডিসেম্বর আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য সংশোধিত নকশা অনুমোদন দেয় রাজউক। এরপর আবাসিক ভবনের নামে বাণিজ্যিক ‘রেইনট্রি’ হোটেল নির্মাণ করা হয়। এরপর সম্ভ্রমহানীর ঘটনায় ‘রেইনট্রি হোটেল’ আলোচনায় আসে। এখন বাণিজ্যিকে রূপান্তর হওয়ায় হোটেলটি চালাতে আর আইনি কোনো বাধা রইলো না। -এমজমিন

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে