গুমোট হাওয়া। চারদিকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। কী হচ্ছে, কী হবে? একটি রায় ঘিরে তৈরি হয়েছে নজিরবিহীন এই পরিস্থিতি। বিরোধী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট’ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামীকাল। এর আগেই তৈরি হয়েছে এক দমবন্ধ পরিস্থিতি।
রায়ের দিন ভোর থেকে ঢাকায় মিছিল-জমায়েতের ওপর অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ। সারা দেশে চলছে ধরপাকড়। গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীদের। বিরোধী নেতাদের বাড়িতে বাড়িতে চলছে তল্লাশি। রাজধানীতে রয়েছে বিশেষ সতর্কতা। যানবাহনে তল্লাশির মুখে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। সরকার ও বিরোধী শিবিরে রায় ঘিরে নেয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি।
পরিস্থিতি কোন্ দিকে মোড় নেয় সেদিকে দৃষ্টি রাখছেন সবাই। অতীতে বিএনপির বড় কর্মসূচির দিন ঢাকাগামী যানবাহন চলাচলে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা ছিল। এবারও তাই হতে চলছে। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে এখনই হার্ডলাইনে না যাওয়ার বার্তা দেয়া হয়েছে কর্মীদের। বলা হয়েছে, কোনো ধরনের সংঘাতে না জড়াতে। তারপরও অবশ্য উদ্বেগ কমছে না।
নানা প্রশ্ন। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ৮ই ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার গন্তব্য কোথায় হবে? বকশীবাজার থেকে কোথায় যাবেন তিনি। খালাস পেলে তো গুলশানের দিকেই হবে তার যাত্রা। না হলে কোথায় ঠাঁই হবে খালেদা জিয়ার। একটি সূত্রের মতে, রায় বিপক্ষে গেলে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে প্রথম নেয়া হতে পারে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে। পরে সেখান থেকে তাকে নেয়া হতে পারে কাশিমপুরে।
পর্যবেক্ষকরা স্মরণ করছেন, বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে, বিশেষ করে আন্দোলন-সংগ্রামে, অতীতে বহুবারই সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। রাজপথে রক্ত ঝরেছে। নিরপরাধ বহু মানুষ রাজনীতির সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এবার কী হবে? এ নিয়েই মূলত উৎকণ্ঠা সাধারণ মানুষের মনে। ফের কি এক অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে যাত্রা শুরু করছে বাংলাদেশ।
৮ই ফেব্রুয়ারি সকাল কি অন্যদিনগুলোর মতোই হবে। নাকি ব্যতিক্রম কিছু হবে? সংঘাতের হবে নাকি শান্তির হবে? পুলিশি নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি দিনটি ঘিরে প্রস্তুত করা হয়েছে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও। এ অবস্থায় বিএনপির রাজপথে নামতে পারার সম্ভাবনা কমই দেখছেন পর্যবেক্ষকরা। তবুও যে সবকিছু শান্তিপূর্ণ থাকবে তার গ্যারান্টি কেউ দিতে পারছেন না। -এমজমিন
এমটিনিউজ/এসএস