সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮, ১২:৫৭:০১

রাজধানীতে নিখোঁজ ছাত্রীর ব্যাগবন্দি লাশ উদ্ধার

রাজধানীতে নিখোঁজ ছাত্রীর ব্যাগবন্দি লাশ উদ্ধার

নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর পল্লবী থেকে নিখোঁজ হওয়া কলেজছাত্রীর সন্ধান মিললো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তবে জীবিত না, স্বজনরা তাকে পেয়েছে লাশ হিসেবে। রাজধানীর বিমানবন্দর রেল স্টেশনে কালো ব্যাগের মধ্যে তার মৃতদেহ মিলেছে।

তার নাম আঁখি আক্তার (১৮)। রোববার দুপুরে নিহতের আত্মীয়রা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে নিহতের লাশ সনাক্ত করেন। নিহত কিশোরীর বাবার নাম মো আরিফ। মা হাসনা হেনা। গ্রাম আন্ডারচর, থানা কালকিনি, জেলা মাদারীপুর।

অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার হওয়া লাশটি গতকাল ৯টার দিকে নিহতের স্বজনরা শনাক্ত করে। এর আগে শনিবার রাত আড়াইটার দিকে বিমানবন্দর পুলিশ ফাঁড়ির রেললাইনের পাশ থেকে একটি ট্রাভেলিং ব্যাগের ভেতর থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওইদিন সকাল সাড়ে ১১টার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল আঁখি।

দিনভর তার খোঁজ না পেয়ে রাতেই মিরপুর থানায় একটি ডায়েরি করেন নিহত ছাত্রীর মামা রোকন খান। আঁখির মা-বাবা মরিশাসে থাকায় মামার বাড়ি থেকে লেখাপড়া করছিলেন।

আঁখির মামা রোকন খানের করা জিডি সূত্রে জানা যায়, আঁখির গ্রামের বাড়ি  মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার আন্ডারচর গ্রামে। তার পিতা আরিফ এবং মা হাসনা হেনা দু’জনেই মরিশাসে থাকেন। এ কারণে মামা রোকনের মিরপুরের পল্লবী থানা এলাকার ১২ নম্বর সেকশনের ৩৩ নম্বর রোডের ৩৮ নং বাসার ছয় তলার ভাড়া বাসায় থাকতেন।

তিনি পল্লবী মহিলা ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিলেন। শনিবার বেলা ১১টার দিকে কলেজে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন। কিন্তু বিকালেও ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন মনে করেন কোচিংয়ে গেছেন। এ সময় আঁখির মোবাইলে ফোন দিয়ে বন্ধ পান। এরপর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন।

আত্মীয়-স্বজন ও তার সহপাঠীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে না পেয়ে দুঃচিশ্চন্তায় পড়েন তারা। পরে রাতেই মিরপুর থানায় একটি জিডি করেন আঁখির মামা রোকন খান। রাতভর খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পরদিন সকাল ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানে অজ্ঞাত হিসেবে আসা একটি লাশ আঁখির বলে শনাক্ত করেন তার মামী।

আঁখির মামা জানান, রাত আড়াইটার দিকে লাশটি পুলিশ বিমানবন্দর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকার রেললাইনের পাশ থেকে উদ্ধার করেন। পুলিশের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ওই সময় সেখানকার কয়েকজন টোকাই ব্যাগের ভেতরে লাশটি দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে কমলাপুর রেলওয়ে থানায় পাঠায়। সেখান থেকে অজ্ঞাত হিসেবে রেলওয়ে পুলিশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

রোকন খান বলেন, আঁখি যখন বাসা থেকে বের হয় তখন তার খালাতো ভাইকে বলে, সে কলেজে যাচ্ছে। তিনি বলেন, নিখোঁজের পর থেকে বিদেশে থাকা তার মা-বাবা দুঃশ্চিন্তায় ছিলেন। তারা বারবার ফোন করে মেয়ের খবর নিচ্ছেন। আমরা সারারাত বিভিন্ন জায়গায় তাকে খুঁজেছি।

তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, এভাবে ভাগ্নিকে পাবো তা কখনো ভাবিনি। এ ব্যাপারে কমলাপুর রেলওয়ে থানার ওসি ইয়াসিন ফারুক মজুমদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। রোববার রাত ২টার পর বিমানবন্দর গোলচত্বর থেকে হাজি ক্যাম্পের দিকে যেতে রেললাইনের পাশে একটি ট্রাভেলিং ব্যাগ দেখতে পায় টোকাইরা। তারা তখন ব্যাগের মুখ খুলে দেখে এর ভেতরে লাশ।

এরপর পাশেই ডিএমপির ফাঁড়িতে খবর দিলে তারা লাশ রেলওয়ে পুলিশকে জানায়। তখন রেলওয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। তিনি বলেন, নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের দাগ নেই। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে বলেও জানান ওসি ইয়াসিন ফারুক মজুমদার।  

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে