কারা টানবেন ফাঁসির রশি
উজ্জল জিসান : জামায়াতের রাজনীতিতে হুঙ্কার ছাড়ার মতো ব্যক্তি একজনই ছিলেন। তিনি হচ্ছেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ। অন্যদিকে বিএনপির রাজনীতিতেও একজন প্রভাবশালী নেতা হচ্ছেন সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী। যিনি চট্টগ্রামকে একক নেতৃত্ব দিয়েছেন। যিনি কাউকে তোয়াক্কা করতেন না। আইনকেও মাঝে মাঝে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করতেন।
জামায়াতে ইসলামীর মাঝেও অনেককে মুজাহিদ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করতে দেখা গেছে। আর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কথা দেশবাসীর কে না জানে। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সেই দুই তোয়াক্কা না করা ব্যক্তির ফাঁসির দণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। তাদের ফাঁসির দড়িতে উঠতে আর মাত্র কিছু সময়ের ব্যাপার। শনি অথবা রোববার- এ দুদিনের মধ্যেই তাদের ফাঁসি কার্যকর হবে, এমনটি সরকারের ওপর মহল এবং কারা সূত্রে জানা গেছে।
কারা টানছেন এই দুই দাম্ভিক ব্যক্তির ফাঁসির রশি। জানা গেছে, এই দুই ব্যক্তির ফাঁসির রশি টানতে পাঁচ থেকে সাতজন জল্লাদকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তাদের আগেভাগে ঝালিয়েও নেওয়া হয়েছে। এখন তারা পুরোপুরি প্রস্তুত। জল্লাদের দুটি দল বানানো হয়েছে। জল্লাদ শাহজাহানসহ একটি দল এবং রাজুসহ আরেকটি দল।
দুই দলেই কয়েকজন জল্লাদকে রাখা হয়েছে। শাহজাহান ও রাজু ছাড়াও রয়েছেন পল্টু, রিপন, আবুল, হযরত, সাত্তার ও রনি। এ ছাড়া আরো কয়েকজনকে তালিকায় রাখা হয়েছে। তাদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ ম্যানিলা রোপসহ (ফাঁসির রশি) সব প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
কালের সাক্ষী হতে জল্লাদ শাহজাহান এবার ফাঁসিতে অংশ নিলে এটি হবে তার ৪৬তম ফাঁসি। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কামারুজ্জামানের ফাঁসির রশি টানার কথা ছিল জল্লাদ শাহজাহানের। কিন্তু শাহজাহান অসুস্থতার কথা বলায় তাকে ওই ফাঁসি কার্যকরের দায়িত্ব থেকে বিরত রাখে জেল কর্তৃপক্ষ। পরে রাজুকে দিয়ে কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
মুজাহিদ ও সাকা চৌধুরীর ফাঁসি যদি একই সময়ে হয় তবে শাহজাহান এবং রাজু এতে অংশ নিতে পারেন। আর শাহজাহান অংশ না নিলে রাজুর পাশাপাশি আবুলকেও প্রধান জল্লাদ বানানো হতে পারে।
কারাগারের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এ বছরের শুরু থেকে গতকাল পর্যন্ত ফাঁসি কার্যকরের মহড়ায় অংশ নিয়েছেন জল্লাদরা। প্রশিক্ষিত করে তোলা হয়েছে তাদের। তবে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের দিনক্ষণ বিষয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সব কর্মকর্তা গোপনীয়তা রক্ষা করে চলেছেন।
কারাগারের একটি সূত্র জানায়, ফাঁসির মঞ্চ ও রশিসহ (ম্যানিলা রোপ) আনুষঙ্গিক সবকিছুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।-রাইজিংবিডি
২১ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস