শুক্রবার, ০২ মার্চ, ২০১৮, ০৭:৪৬:৪১

সীমান্তে সেনা সমাবেশের পরিণতি স্মরণে রাখুক মিয়ানমার

সীমান্তে সেনা সমাবেশের পরিণতি স্মরণে রাখুক মিয়ানমার

নিউজ ডেস্ক : রোহিঙ্গাদের ওপর যখন জাতিগত নিধন চালিয়ে বর্বরতার প্রমাণ রাখছিল মিয়ানমার, তখন সীমান্ত বন্ধ করে নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের সেখানকার বর্বর সেনাবাহিনী এবং তাদের স্থানীয় দোসরদের অস্ত্রের নিচে ঠেলে দেয়নি বাংলাদেশ। মিয়ানমারের পূর্বসূরী আরেক বর্বর রাষ্ট্র পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে স্বাধীন হওয়া মানবিক বাংলাদেশ এমনটা করেনি শুধু মানবতার খাতিরে। এ কারণে সারাবিশ্বে এখন বাংলাদেশের পরিচিতি মানবতার রোল মডেল হিসেবে, অন্যদিকে মিয়ানমার বর্বরতার প্রতীক। বাংলাদেশের কূটনৈতিক সফলতায় আন্তর্জাতিক চাপে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হলেও এখনও তারা টালবাহানা করছে।

সর্বশেষ বান্দরবানের তমব্রু সীমান্তে সেনা সমাবেশ ঘটিয়ে সেখানকার শূন্যরেখা ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর অপচেষ্টা করছে। এমনকি রোহিঙ্গাদের ভয় দেখিয়ে বাংলাদেশে ঢোকানোর জন্য তারা সামরিক সরঞ্জাম এবং দফায় দফায় ফাঁকা গুলি করে এক প্রকার যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি করেছে।

আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সীমান্তে এ ধরনের সেনা সমাবেশ এবং যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি করা সম্পূর্ণ নিষেধ। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে মিয়ানমার যুদ্ধাবস্থার উস্কানি এবং অসভ্যতার চূড়ান্ত রূপের বিপরীতে বাংলাদেশ সহ্যের সর্বোচ্চ সীমা প্রদর্শন করেছে। সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে থাকা বিজিবি মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে উত্তেজনা নিরসনে পতাকা বৈঠকের আহ্বান করে। বাংলাদেশের উদ্যোগে ইতোমধ্যে পতাকা বৈঠক শেষ হয়েছে। সীমান্তে নিজস্ব প্রস্তুতির পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার এই প্রচেষ্টাকে আমরা স্বাগত জানাই।

এরপরও মিয়ানমারকে সীমান্তে সেনা সমাবেশ এবং উত্তেজনা সৃষ্টির চরম পরিণতি আমরা আরেকবার স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। তাদের মনে রাখতে হবে, এদেশের মানুষ শান্তিপ্রিয় হলেও দেশ-মাতৃকার প্রশ্নে কাউকে চুল পরিমাণ ছাড় দেয় না। অতীত ইতিহাস থেকে মিয়ানমারকে সেই শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।

এর পাশাপাশি সীমান্তে তাদের ঔদ্ধত্যের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আবারও অবহিত করে তাদের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার ব্যবস্থা বাংলাদেশকে করতে হবে। কোনো ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টির বদলে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় নিজ দেশের নাগরিকদের দ্রুত ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে আমরা আহ্বান করছি। মনে রাখতে হবে, কোনো ধরনের উত্তেজনা কিংবা অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে সরানো যাবে না। এতে বরং দীর্ঘমেয়াদে মিয়ানমারের ক্ষতি ছাড়া কোনো লাভ হবে না। তাই সময় থাকতে মানবতার স্বার্থে অতি দ্রুত মিয়ানমারের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।-চ্যানেল আই
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে