সোমবার, ০৫ মার্চ, ২০১৮, ১২:৪৩:৫০

যে কারণে ১ মিনিট অন্ধকারে থাকবে পুরো বাংলাদেশ

যে কারণে ১ মিনিট অন্ধকারে থাকবে পুরো বাংলাদেশ

আবুল কাশেম : গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আগামী ২৫ মার্চ সারা দেশ এক মিনিটের জন্য অন্ধকারে ডুববে। রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারা দেশে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রেখে একাত্তরের কালরাতে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে পুরো দেশ।

তবে প্রতীকী এই ব্ল্যাক আউটের সময় জরুরি স্থাপনাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বহাল থাকবে। সরকারিভাবে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্ত মন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সভার কার্যবিবরণী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। মন্ত্রী মোজাম্মেল হক এ বিষয়ে বলেছেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাঙালি জাতির জীবনে এক ভয়াবহ রক্তাক্ত ইতিহাসের দিন। সেই কালরাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কাপুরুষের মতো পাশবিক হিংস্রতা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘুমন্ত বাঙালির ওপর।

তিনি বলেন, পাকিস্তানি সামরিক শাসক ইয়াহিয়ার নির্দেশে, জেনারেল  টিক্কা খানের নেতৃত্বে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সামরিক অভিযানে সংঘটিত হয় ইতিহাসের জঘন্যতম নারকীয় হত্যাকাণ্ড।

মোজাম্মেল হক বলেন, ‘অন্য যেকোনো দিনের চেয়ে এই দিন শুধু আমাদের কাছেই নয়, বিশ্বের গণহত্যার ইতিহাসে এক অনন্য উদাহরণ ও স্মরণযোগ্য দিন। এক দিনে এত মানুষ হত্যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।’ দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালনে সবার সহযোগিতা চান তিনি।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বর্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত বাংলাদেশিদের ওপর যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে তাকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করছে বাংলাদেশ। গত বছর প্রথম গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবেও এই দিবসের স্বীকৃতি আদায়ের কার্যক্রম নেওয়ার জন্য গত বছরের ১১ মার্চ সংসদে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ মার্চ জাতীয়ভাবে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণা করা হয়।

আন্তর্জাতিকভাবে ৯ আগস্ট দিবসটি পালিত হলেও বাংলাদেশে চালানো পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা অন্য যেকোনো দিনের গণহত্যার চেয়ে অনেক বেশি রক্তক্ষয়ী ও জঘন্য। এ কারণে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে যেসব কর্মসূচি পালন করা হবে তার মধ্যে অন্যতম হলো প্রতীকী ব্ল্যাক আউট কর্মসূচি।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর, সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবেন। শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে ২৫ মার্চ বাদ জোহর সব মসজিদে বিশেষ মোনাজাত ও অন্যান্য উপসনালয়ে সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনার আয়োজন করবেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সব ডিসি ও ইউএনও।

কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন বা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবং সব জেলা-উপজেলায় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভার আয়োজন করবে সরকার। স্কুল, কলেজ, মাদরাসাসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তি ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ২৫ মার্চের গণহত্যার স্মৃতিচারণা ও আলোচনাসভা করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এমটিনিউজ/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে