সোমবার, ১৯ মার্চ, ২০১৮, ১১:২০:১৯

‘সমস্যা হয়নি, এক ঝলক দেখেই পৃথুলাকে চিনতে পারি’

‘সমস্যা হয়নি, এক ঝলক দেখেই পৃথুলাকে চিনতে পারি’

নিউজ ডেস্ক : পৃথুলাকে চিনতে আমার মোটেও কোনও সমস্যা হয়নি। এক ঝলক দেখেই তাকে চিনতে পারি, ভারাক্রান্ত কণ্ঠে এ কথা জানাচ্ছিলেন তার নানা এম এ মান্নান খান। সোমবার আর্মি স্টেডিয়াম থেকে পৃথুলার মরদেহ আশা টাওয়ারে (পৃথুলার মায়ের কর্মস্থল) আনার পর স্মৃতিকাতর হয়ে পৃথুলা রশিদের নানা এ কথা জানান।

নানা এম এ মান্নান খানই নেপালে গিয়েছিলেন পৃথুলা রশিদের মরদেহ শনাক্ত করতে। তিনি বলেন, ‘নেপালে গিয়ে আমি পৃথুলাকে শনাক্ত করি। চিনতে সমস্যা হয়নি। অ্যাজ ইট ইজ ছিল। শুনেছি মাথায় আঘাত পেয়েছিল। শরীরের কিছু জায়গা পুড়ে গিয়েছিল, বিশেষ করে পিঠের অংশে। এছাড়া ছোটখাটো কিছু ইনজুরি ছিল। মাথার আঘাতটা (পিছনের দিকে) ছিল গুরুতর।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি নেপালে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, পৃথুলাই প্রথম প্লেনের দরজা খুলে দেয়। সেসময় অনেক যাত্রী দরজা দিয়ে বের হয়। অনেকে বের হওয়ার পরে আগুন থেকে বাঁচতে ওপর থেকে লাফ দেয় সে। তখন নিচে পড়লে তার মাথা শক্ত কিছুর সঙ্গে বাড়ি খায়। এছাড়া তখন নিচেও আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই আগুনই পৃথুলার গায়ে ধরে যায়।’

সেখানের অবস্থার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি মরদেহে প্রচুর ময়লা ছিল, ছিল কালি। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আগুন নেভানোর সময় আহত-নিহতদের ওপরে অনেক ময়লা পড়ে। এ কারণে অনেক দেহ শনাক্ত করতে সমস্যা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পৃথুলার মাধ্যমে উদ্ধারপ্রাপ্তরা আমাকে বলেছে, চাইলে সে (পৃথুলা) দরজা খুলে প্রথমেই বের হয়ে যেতে পারত। কিন্তু সে তা না করে আগে যাত্রীদের বের হতে সাহায্য করে। বিস্ফোরণের পরে যখন আগুন পুরোপুরি ছড়িয়ে পড়ে তখনই পৃথুলা প্লেন থেকে লাফ দেয়। তার ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে মাথায় ভোঁতা কিছুর আঘাতের কথা লেখা রয়েছে।’

আমাকে সরাসরি পৃথুলাকে দেখতে দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রথমে সিসিটিভির মাধ্যমে ভালোভাবে মুখ দেখানো হয়। তাতেই আমি পৃথুলাকে চিনতে পারি। তবে আমাদের দেশের মন্ত্রী, নেপালের ডাক্তার, নার্সসহ সবাই আমাকে বলেছে সবার চেয়ে পৃথুলার মরদেহটা ভালো ছিল। একটুও বিকৃত হয়নি।’

পৃথুলাকে আগারগাঁওয়ের তালতলা সরকারি কবরস্থানে তার দাদা, দাদি ও ফুপুর কবরের পাশে দাফনের কথা থাকলেও পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়। কেন এই পরিবর্তন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পৃথুলাকে দাফন করলে ২৫ বছর কবর সংরক্ষিত থাকবে, সরকারিভাবে পাওয়া এমন আশ্বাসের ভিত্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছি।’

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে