সোমবার, ২৬ মার্চ, ২০১৮, ০৬:২৩:১৪

কোটার সংস্কার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকবারের খোলা চিঠি

কোটার সংস্কার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকবারের খোলা চিঠি

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আসসালামু আলাইকুম, জানি না আপনার কাছে আমার এই লেখা পৌছাবে কি না।তার পরেও পৌছাবে সেই আশায় লিখা।

জননেত্রী শেখ হাসিনা,
উচ্চ শিক্ষিত যুবকসহ সমগ্র দেশের মানুষের কাছে বর্তমান সময়ের একটি অন্যতম বিষয় কোটা সংস্কার ব্যবস্থা। শিক্ষিত যুবক,বুদ্ধিজীবি,শিক্ষাবিদ,সর্বস্তরের মানুষসহ কোটা ব্যবস্থার সংস্কার চাচ্ছে। তারা কেন কোটা সংস্কার চাচ্ছে? কারণ তারা ভবিষ্যতে যোগ্য মেধাবীদের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে পৃথিবীর বুকে অর্থনীতিসহ সর্বদিকে একটি সমৃদ্ধশালী উন্নত দেশের রোল মডেল তৈরি করবে। যারা হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার করিগর। যেই সোনার বাংলা গড়তে আপনি সদা সর্বদা প্রস্তুত।
 
মাননীয় নেত্রী,
আমরা কোটা বিরোধী নই,
আমরা কোটার সংস্কার চাই।
আমরা শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের কোটার সংস্কারের কথা বলি নি। আমরা পুরো কোটা ব ্যবস্থা সংস্কারের কথা বলছি। মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের গর্ব ও সম্মানের। তাদের কারনে আমরা পৃথিবীর বুকে মানচিত্রে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে জায়গা পেয়েছি। পেয়েছি নিজেদের পরিচয় দেওয়ার মত দেশ, লাল সবুজের দেশ বাংলাদেশ।মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান এই স্বাধীন বাংলাদেশে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।

জননেত্রী,
কোটা ব্যবস্থা চালু হয়েছিল পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে অগ্রসর করার জন্য।( সেই বিষয় আপনি পুরোপুরি অবগত আছেন)। আজকে স্বাধীনতার পর তৃতীয় প্রজন্ম,আজকে তারা পিছিয়ে নেই। যদি এসময় তাদের পিছিয়ে পরা ভেবে কোটা দেওয়া হয়, তাহলে তো এদেশের কৃষক/শ্রমিক/দিনমজুদের কোটা দেওয়া উচিত। কারণ তারা তো অনেক পিছিয়ে আছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী,মহিলা তারাও তো অধুনিক বিশ্বের সাথে অভিযোজন করে বাড়ির বাহিরে সমাজের সর্ব স্তরের মানুষের সাথে কাজ,চাকরি করছে। সেটা তাদের রেজাল্ট,চাকরি বিষয়গুলো পর্যবেক্ষন করলে দেখা যায়। তারা তো পিছিয়ে নেই তাহলে তো তাদের কোটা সংস্কার করা যোক্তিক।

মাননীয় নেত্রী,
কোন দেশকে ধ্বংস করতে হলে সে দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে নাকি আগে ধ্বংস করতে হয়। বাংলাদেশে ও পরোক্ষভাবে কোটা বৈষম্যের মাধ্যমে সেই দিকে ধাবিত হচ্ছে। বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমান তার জীবনকালে সব সময় বৈষম্যের বিরুদ্ধের লড়াই করেছেন। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে ও সেই বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়। কিছু বিশেষ শ্রেণিকে সুবিধা দিতে গিয়ে সামগ্রিকভাবে নতুন বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু এমন সোনার বাংলা অবশ্যই চান নি। এই কোটা বৈষম্যের কারনে দিনের পর দিন অনেক চাকরির অনেক পদ ফাঁকা রয়েছে। সাথে রয়েছে বেকারদের বুক ভরা কষ্টের দীর্ঘশ্বাস।

মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী,
ভিনদেশী ১২ লক্ষ রোহীঙ্গার জন্য আপনি নিবেদিত প্রাণ,কিন্তু নিজের দেশের লক্ষ লক্ষ বেকারের কোটা সংস্কারের আর্তনাদের বিষয় আপনি অবগত নন কি? শিক্ষিত যুবকরা হচ্ছে এদেশের সম্পদ, একটি দেশের উন্নয়নের অন্তরায় রয়েছে যোগ্যতা সম্পন্ন দক্ষ মানব সম্পদ।আর সেটা যদি কোটা দিয়ে পূরণ হয় তাহলে ভঙ্গুর অর্থনীতির স্বপ্ন দেখতে বেশিদিন সময় লাগবে না।

মাননীয় নেত্রী,
চাকরির ক্ষেত্রে কোটা পরোক্ষ ভাবে আমাদের দেশের শিক্ষাকে নিরুৎসাহি করছে। একটা সময় ছিল সবাই বলতো আমাদের মামু,খালু নেই আমাদের চাকরী হবে না।
তাই পড়ে কি লাভ এখন বলবে কোটা নেই আমাদের পড়ে কি করব? প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যান্য সকল সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করে দিন যাতে উন্নত জীবন যাপন করতে পারে। কিন্তু তাদের নাতি-নাতনীদের কোটা সুবিধা দিয়ে শিক্ষিত যুবকদের মন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের লোকজনদের আস্তে আস্তে পরোক্ষভাবে দূরে ঠেলে দিয়েন না। মুক্তিযোদ্ধারা এদেশের সূর্য সন্তান,তারা আমাদের অনূপ্রেরণা,তারা আমাদের চেতনা,তারা আমাদের শক্তি।

তাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন এই উপযুক্ত সময়ে কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করে দেশকে উন্নয়নশীল থেকে উন্নত করতে যোগ্যতা সম্পন্ন মেধাবীদের সুযোগ দিয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে মেধাবী যুবকদের বিকল্প নেই।২৬ লক্ষ বেকার সহ তাদের পরিবার আপনার দিকে তাকিয়ে আছে কোটা সংস্কার করবেন সেই ভেবে।

ভুল হলে ক্ষমা প্রার্থী।আপনার সুস্থতা ও সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কমনা করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।  

ইতি,
কোটার নিচে পিষ্ঠ হতে না চাওয়া
একজন স্বপ্নচারী।

মোঃ আকবার হোসেন,
অর্থনীতি বিভাগ,
ঢাকা কলেজ, ঢাকা।  

এমটি নিউজ/আল-আমিন শিবলী

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে