বৃহস্পতিবার, ২৯ মার্চ, ২০১৮, ১১:২৩:২৪

জঙ্গি নিবরাসের সাথে সোমার সম্পর্ক ছিল

জঙ্গি নিবরাসের সাথে সোমার সম্পর্ক ছিল

নিউজ ডেস্ক : মোমেনা সোমার সঙ্গে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ তরুণদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলে ধারণা করছে পুলিশ। এই তরুণদের একটি অংশ সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের পক্ষে যুদ্ধ করতে দেশ ছাড়ে। অন্য পক্ষটি গুলশানের হোলি আর্টিজানে হামলায় যুক্ত ছিল।

মোমেনা বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার একটি কারাগারে রয়েছেন। বৃত্তি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়ার সপ্তাহখানেকের মাথায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে তার বাড়িওয়ালা রজার সিঙ্গাভেলুকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা চালান।

এর দুদিন পর মোমেনার বোন আসমাউল হুসনা তাদের মিরপুরের বাসায় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার চেষ্টা করেন। তিনিও এখন কারাগারে। তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, ২০১২ সালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময়ই মোমেনা সোমা জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েন।

ব্লগার রাজিব হায়দারের খুনের এক নম্বর আসামি রেদওয়ানুল আজাদ রানা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল রিজার্ভ উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাকারী নাফিস, হোলি আর্টিজানে হামলাকারী নিবরাস ইসলামসহ জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ আরও বেশ কিছু তরুণ ছিলেন মোমেনা সোমার সমসাময়িক। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মোমেনা সোমার বোন আসমাউল হুসনা জানিয়েছেন, মোমেনার সঙ্গে নিবরাস ইসলাম ও রোহান ইমতিয়াজের আগে থেকে সম্পর্ক ছিল।

পুলিশ জানতে পারে, বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষে পড়ার সময় সোমালিয়ার একটি ইসলামিক ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন আলোচনায় যুক্ত হন মোমেনা। এ আলোচনায় বাংলাদেশের আরও কিছু তরুণ সম্পৃক্ত ছিলেন। এ সময় মোমেনার মা ডায়াবেটিস ও কিডনি জটিলতায় ভুগতে ভুগতে মা অন্ধ হয়ে যান। মোমেনার বাবা মনিরুজ্জামান দ্রুত মেয়ের বিয়ে দিতে চান। অনলাইনে একটি ঘটকালি সাইটেও যুক্ত হন তিনি।

ওই সাইটটি যিনি চালাতেন, তার সঙ্গেও উগ্রবাদী তরুণদের কারও কারও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখানেই মোমেনা সোমার সঙ্গে গাজী কামরুস সালামের (সোহান) পরিচয় হয়। এই কামরুস সালাম তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় গিয়েছিলেন আইএসের পক্ষে যুদ্ধ করতে। পরে ফিরে আসেন। মোমেনার মায়ের রক্তের প্রয়োজন হলে কামরুস সালাম নজিবুল্লাহ আনসারীকে নিয়ে আসেন।

পুলিশের ধারণা, হয়তো এরপরও মোমেনা সোমার সঙ্গে নজিবুল্লাহ আনসারীর যোগাযোগ হয়েছিল। কেননা ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে তুরস্কের আতিলিন বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি নিয়ে মোমেনা পড়তে যাওযার চেষ্টা করেছিলেন। ভিসা প্রত্যাখ্যাত হলে তিনি ওই বছরই আবার তিউনিসিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করেন। আইএসে যোগদানকারী বিদেশি যোদ্ধাদের তালিকায় তিউনিসিয়ার নাম শীর্ষে। ২০১৫ সালে মোমেনা সোমার মা মারা যাওয়ার পর ক্রমে কট্টর হতে শুরু করেন দুই বোন।

মোমেনা সোমা ও আসমাউল হুসনার বাবা মনিরুজ্জামান পুলিশকে বলেন, তিনি বুঝতে পারছিলেন তার মেয়েরা বদলে যাচ্ছে। তারা সব সময় ধর্মীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করত। কোনটা ঠিক কোনটা বেঠিক তা নিয়ে মন্তব্য করত এবং কঠোরভাবে সবাইকে মানতে বাধ্য করাত।

পুলিশ বলছে, মোমেনার বোন আসমাউল হুসনার তেমন কোনো যোগাযোগ এখনো পাওয়া যায়নি। তবে উগ্রবাদীদের সঙ্গে মোমেনার যোগাযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এই তালিকায় আরও কয়েকজন নারীও রয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া ফেডারেল পুলিশ বাংলাদেশে এসে আসমাউল হুসনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে