বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৫, ০১:৪২:৪০

গোটাদেশের রাজনীতিতে পৌর-নির্বাচনের উত্তাপ

গোটাদেশের রাজনীতিতে পৌর-নির্বাচনের উত্তাপ

নিউজ ডেস্ক : তফসিল ঘোষণার পর ভোটের হাওয়া লেগেছে মাঠে। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনকে ঘিরে ঠিক করছে কর্মকৌশল। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এরই মধ্যে এ নিয়ে বৈঠক করেছেন দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ ও সংসদীয় বোর্ড জরুরি বৈঠকে বসছে আজ। গণভবনে এ বৈঠকেই দলের মনোনয়ন কৌশল চূড়ান্ত হতে পারে। দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যদিও কাউন্সিলর পদগুলোতে আগের মতোই নির্দলীয় নির্বাচন হবে। মেয়র পদে বহুদিন পর নৌকা-ধানের শীষ লড়াই দেখা যেতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত মাঠ পুরোটাই আওয়ামী লীগের দখলে। বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের একটি বড় অংশ রয়েছেন কারাগারে। বাকি একটি অংশ আত্মগোপনে। প্রকাশ্যে রয়েছেন কমই। জামায়াতের অবশ্য দলীয় প্রতীকে এ নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। কারণ হাইকোর্টের রায়ে দলটির নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। স্বতন্ত্র অথবা জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার চেষ্টা করছে জামায়াত। জাতীয় পার্টিও এরই মধ্যে নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে জাতীয় পার্টির তেমন কোন প্রভাব দেখা যায়নি। ‘মঙ্গলবার ২৩৪টি পৌরসভার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তবে নতুন পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনের আগে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন অনুভব করেনি নির্বাচন কমিশন। আশরাফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ থেকে জানান, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী কিশোরগঞ্জের সাতটি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পৌরসভাগুলো হচ্ছে কিশোরগঞ্জ, হোসেনপুর, করিমগঞ্জ, কটিয়াদী, বাজিতপুর, কুলিয়ারচর ও ভৈরব। এই সাতটি পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৩৩ হাজার ৬৯১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৯০ জন এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ১৭ হাজার ৮০১ জন। তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের পদচারণায় মুখর ছিল এসব পৌর এলাকার অলিগলি। তফসিল ঘোষণার পর বেড়েছে তাদের দৌড়ঝাঁপ। বিশেষ করে মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নকে ঘিরেই চলছে সব হিসাব-নিকাশ। ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। আওয়ামী লীগের মনোনয়নের ক্ষেত্রে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্যরা। দলের সমর্থন পাওয়ার আশায় নিজ এলাকার মন্ত্রী-সংসদ সদস্যের বাসায়ও ভিড় করছেন সম্ভাব্যরা। তবে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং প্রয়াত প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমানের পুত্র বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের এই জেলায় পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে এই তিন রাজনৈতিক পরিবারের মতামত ও বিবেচনা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে বলেই মনে করছেন ভোটার ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে তফসিল ঘোষণার পরও জনসংযোগ এবং প্রচারণায় পিছিয়ে রয়েছেন বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তবে দলীয় মনোনয়নের আশায় তারা জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে তারা সরকারবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন সময়ে দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ এবং ভূমিকার কথা মনে করিয়ে দিয়ে কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কেন্দ্রের গ্রিন সিগন্যাল পেলেই তারা ভোটযুদ্ধে সক্রিয় হবেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন ধারণাই পাওয়া গেছে। এদিকে তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন ঘিরে সরব হয়ে উঠেছেন সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। তারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে জানান, সিলেটের পৌর নির্বাচনী মাঠে নামেনি বিএনপি। তফসিল ঘোষণা হলেও বিএনপির প্রার্থীরা মাঠে নামবেন কি-না এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছেন। তবে, মাঠ সরগরম করে রেখেছেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা। তাদের সঙ্গে আছেন স্বতন্ত্ররাও। বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, সিলেটে পৌর নির্বাচনের লেবেল-প্লেয়িং অবস্থা নেই। বহু নেতা-কর্মী কারাগারে। আর যারা এলাকায় রয়েছেন তারাও মামলায় জর্জরিত। প্রকাশ্য বের হওয়ার সাহস পাচ্ছেন না। ফলে নির্বাচনী মাঠে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলা কোনো ভাবেই সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ বলছে, সিলেটের পৌর সভার নির্বাচনী মাঠ নিরপেক্ষ রয়েছে। স্বস্তিকর অবস্থা থাকায় ইতিমধ্যে বিএনপি থেকে একাধিক প্রার্থী মেয়র ও কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছে। উৎসবমুখর পৌর নির্বাচনের আবহ ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেন নেতা-কর্মীরা। মঙ্গলবার পৌরসভার তফসিল ঘোষণার পরপরই সিলেটের গোলাপগঞ্জে আনন্দ মিছিল হয়েছে। তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে পৌরসভার নাগরিক কমিটি থেকে এই আনন্দ মিছিল করা হয়। তবে, এখনও নীরব রয়েছে সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট পৌরসভা। এ দুটি পৌর সভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা সরব থাকলেও বিএনপি প্রার্থীরা অন্তরালে থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহমদ গতকাল মানবজমিনের কাছে অভিযোগ করেছেন, তফসিল ঘোষণা হয়ে গেছে। কিন্তু পৌরসভা এলাকায় ধরপাকড় বন্ধ হয়নি। পাশাপাশি বহু নেতা-কর্মী জেল হাজতে রয়েছে। গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ থাকলে বলা যাবে না নির্বাচনের মাঠ নিরপেক্ষ। তিনি বলেন, বিএনপি সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী। এ কারণে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপির প্রার্থীরা ভোট বিপ্লব ঘটাবেন। এদিকে, সিলেটের আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, ভোটের মাঠে উৎসব বিরাজ করছে। সব দল, সব মতের মানুষ নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আশফাক আহমদ গতকাল জানিয়েছেন, নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগের অধীনেই কেবল নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় এটা প্রমাণিত সত্য। পৌর নির্বাচনও শতভাগ নিরপেক্ষ হবে। তিনি বলেন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বৈঠকে বসবে। তবে, কোনোভাবেই তৃণমূলের সমর্থনকে অগ্রাহ্য করে প্রার্থী মনোনয়ন করা হবে না। যাদের প্রার্থী করা হবে তারা তৃণমূলের মতামতেই প্রার্থী হবেন। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই গোলাপগঞ্জ পৌরসভাজুড়ে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা জমে উঠেছে। নিজ নিজ দলের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে ওয়ার্ডভিত্তিক উঠান বৈঠক করছেন প্রার্থীরা। এবারের নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী হিসেবে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন, বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া আহমদ পাপলু, সাবেক পৌর প্রশাসক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল জব্বার চৌধুরী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন, যুক্তরাজ্য যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রাবেল, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহীন, বর্তমান সভাপতি মশিকুর রহমান মহি, স্বতন্ত্র প্রার্থী সমাজসেবী আমিনুর রহমান লিপন, আমিনুল ইসলাম আমিন। এদিকে, এবার এই পৌরসভায় দলীয় নির্বাচনী প্রতীক নৌকা নিয়ে ভোটের আগেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। আর দুই বারের নির্বাচিত মেয়র হিসেবে এবার তিনি দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন। মেয়রপ্রার্থী সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন বলেন, দলীয় প্রতীক পেলে নির্বাচন করবো নতুবা নয়। বিএনপির নেতৃবৃন্দ ইতিমধ্যে আগ্রহী মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী এবং কর্মীদের নিয়ে জরুরি সভা করেছেন। মেয়র পদে বিএনপি থেকে ৪ জন ও কাউন্সিলর পদে প্রতি ওয়ার্ডে গড়ে ৩ জন করে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের আগ্রহ প্রকাশ করেন। জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ প্রার্থী দেবে কি না সে ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত মিলেনি। তবে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, এখনও তাদের দল থেকে কোনো ঘোষণা আসেনি। দলের ঘোষণার পর নির্বাচন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। এদিকে, তফসিল ঘোষণার পরপরই নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে মাইক দিয়ে প্রচার করে আনন্দ মিছিল ও পাল্টা মিষ্টি বিতরণের আয়োজন করা হয়। বিকালে গোলাপগঞ্জ চৌমুহনীস্থ এ ওয়াহাব প্লাজার সম্মুখ থেকে আনন্দ মিছিল বের করা হলে উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে মধ্যবাজার চৌমুহনীতে এক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। গোলাপগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সেক্রেটারি সাংবাদিক আবদুল আহাদের সভাপতিত্বে ও তরুণ সমাজসেবী ছালেহ আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আনন্দ মিছিল পরবর্তী পথ সভায় বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট সাংবাদিক শহিদুর রহমান সুহেদ, সাবেক আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা আবদুল লতিফ, সাংবাদিক মহবুবুর রহমান চৌধুরী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ডের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফজলুল আলম, গোলাপগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সদস্য আব্দুছ ছামাদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৈয়দ জিল্লুর রহমান, রণকেলী মহিউসুন্নাহ মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা আবদুল জলিল, গোলাপগঞ্জ বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শামিম আহমদ, সমবায়ী ব্যক্তিত্ব নুরুল ইসলাম, মামুনুর রশিদ মামুন, তরুণ সমাজসেবী মুজিবুর রহমান মিজু, শফিউল্লাহ প্রমুখ। সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা জকিগঞ্জ। নির্বাচন ঘনিয়ে এলেও এখন জকিগঞ্জ পৌরসভা নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি। তবে, সরকারি দল আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকায় নির্বাচন নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। আর বিএনপি প্রার্থীরা দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দিকে তাকিয়ে আছেন। তারা জানিয়েছেন, দলের চেয়ারপারসন বললে নির্বাচনে যাবেন, নতুবা তারা সরে দাঁড়াবেন। জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে এবারও প্রার্থী হচ্ছেন বর্তমান মেয়র ও জাতীয়পার্টির নেতা আবদুল মালেক ফারুক, সাবেক মেয়র সোনাউল্লাহর ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল আহাদ, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমান লুকু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ফারুক আহমদ, বিএনপি থেকে পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক বদরুল হক বাদল, খেলাফত মজলিস নেতা জাফরুল ইসলাম, জামায়াত নেতা ইমরান আহমদ, আল ইসলাহ নেতা কাজী হিফজুর রহমান প্রার্থী হচ্ছেন বলে জানা গেছে। বিএনপি নেতা অধ্যাপক বদরুল হক বাদল জানিয়েছেন, দল চাইলে তিনি নির্বাচন করবেন। এবং তিনি জয়লাভ করবেন। সব কিছু নির্ভর করছে দলীয় সিদ্ধান্তের উপর। তবে, এখনও জকিগঞ্জে লেবেল প্লেয়িং মাঠ সৃষ্টি হয়নি। বিএনপির বহু নেতাকর্মী জেলে রয়েছে। অনেকেই মামলায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ওদিকে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ফারুক আহমদ জানিয়েছেন, তিনি নির্বাচন করবেনই। দল তাকে মনোনয়ন না দিলে তিনি স্বতন্ত্র থেকে মেয়র পদে নির্বাচন করবেন বলে জানান। কানাইঘাট পৌরসভার নির্বাচনী মাঠে এখনও প্রকাশ্য আসতে পারেনি বিএনপি। সেক্ষেত্রে বিএনপি প্রার্থীর সমর্থকরা জানান, মামলায় জর্জরিত কানাইঘাট বিএনপি। অনেকেই রয়েছেন কারাগারে। এ কারণে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হলেও কেবল আওয়ামী লীগই মাঠে। বিএনপির নেতাকর্মীরা নির্বাচনী মাঠে নামার প্রস্তুতি নিলেও এখন নামেননি। ইতিমধ্যে বিএনপি থেকে এই পৌরসভায় তিন প্রার্থীর নাম শোনা গেছে। এরা হলেন, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল হক, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি নুরুল ইসলাম ও শ্রমিকদলের সভাপতি রহিম উদ্দিন ভরসা। প্রার্থীরা জানিয়েছেন, কানাইঘাটের নিরপেক্ষ নির্বাচনী মাঠ নেই। এ কারণে বিএনপির সমর্থিতরা মাঠে নামতে পারেননি। অপরদিকে এ পৌরসভায় এবার মেয়রপদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ৫জন। এর মধ্যে রয়েছেন বর্তমান মেয়র লুৎফুর রহমান, অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ, ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান, পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন ও যুবলীগ সভাপতি মাসুক আহমদ। তবে পৌরসভায় জামায়াত থেকে গেলো বারের প্রার্থী অলিউল্লাহ নির্বাচন করবেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া জাতীয়পার্টি থেকে পৌর জাতীয়পার্টির সেক্রেটারি বাবুল আহমদও নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন। মনোনয়ন যুদ্ধে চারঘাটের মেয়র প্রার্থীরা আসলাম-উদ-দৌলা, রাজশাহী ও মিজানুর রহমান চারঘাট থেকে জানান, এবারের পৌর নির্বাচন স্থানীয় আমেজ কাটিয়ে জাতীয় নির্বাচনের চরিত্র নিয়ে হাজির হয়েছে। প্রার্থীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন সিনিয়র নেতাদের আশীর্বাদ পেতে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক তফসিল ঘোষণার পর থেকেই রাজশাহীর চারঘাটে পৌর নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের মাঝে শুরু হয়েছে মনোনয়ন যুদ্ধ। নিজেদের যোগ্য হিসেবে প্রমাণ করতে প্রার্থীরা ছুটছেন সিনিয়র নেতৃবৃন্দের নিকট। প্রার্থীদের মধ্যে কে কতটা দলের আস্থাভাজন ব্যক্তি তা প্রকাশ করতে মেয়র প্রার্থীরা রীতিমত যেন যুদ্ধের ময়দানে নেমেছেন। এতে করে ভোটাররা আগের মতো প্রার্থীদের সান্নিধ্য পাচ্ছেন না। তবে প্রতীক বরাদ্দের পর এই ঘাটতি পুষিয়ে নেবেন বলে মনে করছেন প্রার্থীরা। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন ৩ ডিসেম্বর। ভোট গ্রহণ হবে ৩০শে ডিসেম্বর। আসন্ন এই পৌর নির্বাচনকে ঘিরে চারঘাটে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক মেয়র প্রার্থী থাকলেও শেষ পর্যন্ত একক প্রার্থীই ঘোষণা করা হবে। তবে মাঠঘাট সমান তালে চষে বেড়াচ্ছেন উভয় দলের একাধিক প্রার্থী। বর্তমানে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে যারা মাঠে রয়েছেন তারা হলেন- চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, পৌর সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট ক্রিড়া সংগঠক একরামুল হক, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কাজী মাহমুদুল হাসান মামুন এবং সাবেক সাংসদ আলহাজ রায়হানুল হকের সহধর্মিণী বর্তমান মেয়র নারগিছ খাতুন। অপর দিকে বিএনপির সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন পৌর বিএনপির সভাপতি কায়েম উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র জাকিরুল ইসলাম বিকুল। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির এসব সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা গণসংযোগ চালিয়ে আসলেও শেষ পর্যন্ত কারা পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন সেদিকেই তাকিয়ে আছেন তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তবে মনোনয়ন যুদ্ধে জয়ী হতে ইতিমধ্যে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা দ্বারস্থ হয়েছেন সিনিয়র নেতৃবৃন্দের নিকট। আওয়ামী লীগের একটি নির্ভযোগ্য সূত্র জানায়, আসন্ন পৌর নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে বর্তমানে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীর তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তারা সবাই কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের আশীর্বাদ ও সমর্থন নিতে বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। কে পাবেন দলীয় মনোনয়ন সেদিকে অধির আগ্রহে তাকিয়ে রয়েছেন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীর তালিকায় থাকা প্রার্থীদের সমর্থকরা। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ ফকরুল ইসলাম বলেন, বড় দল হিসেবে আওয়ামী লীগে একাধিক প্রার্থী মাঠে থাকবেন সেটাই স্বাভাবিক। তবে প্রার্থী একাধিক থাকলেও দলীয় ভাবে একজনকেই মনোনয়ন দেয়া হবে। সেদিক থেকে যিনি আন্দোলন-সংগ্রামে সব সময় থেকেছেন রাজপথে, অন্যায়ের নিকট মাথা নত করেন নি, সর্বপরি যিনি জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন তাকেই দলীয় ভাবে মনোনীত করা হবে। অন্যদিকে বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে বিএনপির একক প্রার্থীকেই সমর্থন জানানো হবে। সেদিক থেকে বিএনপির দুজন প্রার্থী মাঠে থাকলেও প্রার্থী হবেন একজন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য চারঘাট বিএনপির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাঈদ চাঁদ বলেন, পৌর নির্বাচনে দল অংশ নিবে কিনা সে বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয় নি। দল অংশ গ্রহণ করলে দলীয় ভাবে একজনকেই মনোনয়ন দেয়া হবে। -মানবজমিন ২৬ নভেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে