বিএনপি-মেননের দাবি নাকচ
নিউজ ডেস্ক : নির্বাচন পেছানোর দাবি জানালেও নাকচ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন পেছানোর কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে ইসি। শুক্রবার বিএনপি ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের কথা কোনো কাজে আসলো না। গণমাধ্যমকে এ কথা জানান নির্বাচন কমিশন সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম।
এর আগে পৌরসভা নির্বাচন ১৫ দিন পেছানোর দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি। এরপর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এক বিবৃতিতে নির্বাচন পেছানোর দাবি জানান।
নির্বাচন পেছনোর যুক্তি হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির তরফে বলা হয়, তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ৩ ডিসেম্বর। যাচাই-বাছাই ৫ ও ৬ ডিসেম্বর এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৩ ডিসেম্বর। ভোটগ্রহণ ৩০ ডিসেম্বর। তিনদিন পর নতুন ৫০ লাখ ভোটার অন্তর্ভুক্ত হবেন। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন হলে এখানে নতুন ভোটাররা প্রথমবারের মত ভোট দান থেকে বঞ্চিত হবেন।
এর প্রেক্ষিতে ইসি সচিব বলেন, ৫০ লাখ ভোটারের ভোট দেয়ার বিষয়ে তারা (বিএনপি) যেটি বলেছেন, সে বিষয়ে তারা জানেন না। নির্বাচন ১৫ দিন পেছালেও নতুন ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না।
তিনি বলেন, বিধি অনুযায়ী ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। সুতরাং ১৫ দিন পেছালে নতুন ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন বলে, যে দাবি করা হচ্ছে আসলে বিএনপি আইন কানুন জানে না।
আইন ও বিধি অনুযায়ী প্রতিবছর ২ জানুয়ারি হতে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। সে অনুযায়ী ২ জানুয়ারি ২০১৫-২০১৬ বছরের হালনাগাদ ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশ করবে ইসি। ১০ দিন ইসির নোটিস বোর্ডে এ তালিকা টাঙানো থাকবে।
১৫ জানুযারি পর্যন্ত ওই তালিকার বিপরীতে দাবি আপত্তি নেয়া হবে। দাবি আপত্তির শুনানি শেষে কমিশনের অনুমতিক্রমে ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
এর আগে নির্বাচনের তফসিল আরো কিছুদিন পিছিয়ে দেয়া দরকার বলে দাবি করেছিল ওয়ার্কার্স পার্টি। এ বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে পাঠাবে বলেও বলেছিল দলটি। দলের সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন। মেনন ও বাদশা তাদের বিবৃতিতে বলেন, দলীয়ভাবে ও দলীয় প্রতীকে প্রথমবারের মতো এ নির্বাচন হচ্ছে। ওয়ার্কার্স পার্টি এটিকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে। এ ক্ষেত্রে দলগুলোকে প্রার্থী বাছাই ও মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার জন্য সময়ের প্রয়োজন।
তাদের দাবি, নির্বাচন কমিশন নিজেও এ ব্যাপারে সঠিকভাবে প্রস্তুত নয়, সেটা তাদের আচরণে লক্ষণীয়। কমিশন এ নির্বাচন ও আচরণবিধি নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সামান্যতম মতবিনিময়ও করেনি। কেবল তা-ই নয়, পৌরসভা নির্বাচন, আচরণবিধি এবং নির্বাচন-সংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে কমিশনের বক্তব্যের মধ্যে অসংগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এদিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিএনপি শর্ত হচ্ছে ১৫ দিন পিছিয়ে নির্বাচনের পুনঃতফসিল ঘোষণা করা। গ্রেপ্তার হওয়া দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করা। নির্বাচনের সময়সীমা ৩০ ডিসেম্বর থেকে আরো ১৫ দিন পেছানোর শর্ত দেন তিনি। সেই সঙ্গে পুনঃতফসিল ঘোষণারও দাবি জানান।
নির্বাচন কমিশনের কাজের স্বচ্ছতা নিয়েও জনমনে নানা প্রশ্ন আছে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলের পক্ষ থেকে আসাদুজ্জামান বলেন, কমিশনের জনবল থাকা সত্ত্বেও প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে প্রশ্ন আছে। বিএনপি মনে করে, সরকার জনগণকে কতটা তোয়াক্কা করে এ নির্বাচনে তার পরীক্ষা হবে।
২৭ নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম