রিক্সা চালিয়ে হলেও জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে চায় রেবেকা
নিউজ ডেস্ক: ছোট বেলা থেকেই অভাবের মধ্যদিয়ে বড় হতে হয় রেবেকাকে। তাই বুজ হওয়ার পর থেকেই নিজের মধ্যে লালন করেন সংগ্রামী জীবন ধারণের চেতনা। যেখানে আট-দশটি মেয়ের মতই সংসারী হওয়ার কথা ছিল তার। সেখানে কিনা দারিদ্রতার রোষানলে পড়ে বেঁচে নিয়েছেন অন্য এক জীবন। নিরাপত্তার জন্য পুরুষের পোশাক পরে কাজ করছেন তিনি।
রেবেকার বাড়ি বাগেরহাটের মংলায়। ভ্যান চালিয়ে জীবন ধারণ করছেন তিনি। শুনুন তার জীবনের গল্প।
অভাবের সংসারে বড় হয়েছেন রেবেকা। নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা।
রেবেকার ভাষ্য, 'বাপ মায়ের খুব দুরাবস্থা ছিল। যা আয় করতেন তাতে খেতে দিতে পারতেন না।'
“আমি মাথায় করে মাটি বয়েছি, জঙ্গলে গিয়ে কাঠ কাটিছি, আমার নিজির একখান নৌকা বানাইছি কিন্তু আমার ভাই সেই নৌকা ধ্বংস করি দিল। আমি সেই রাগে বাড়ির বাইরে বেরিয়েছি।”
“কেউ যদি আমার নাম জানে তারা তো রেবেকাই ডাকে আর যারা না জানে আর ছোট বাচ্চাকাচ্চা সবাই মেম্বার কইলেই এক নামে চেনে,” এমনটাই জানালেন রেবেকা।
নিজের পায়ে দাঁড়াতে ভ্যান চালানোর পেশা বেছে নিয়েছিলেন রেবেকা। বললেন, “কিস্তিতে চার হাজার টাকা তুলে গাড়ি কিনলাম। গাড়ি কিনে ভাড়া দিলে ভাড়ার টাকা দেয় না। তাই ঠিক করলাম নিজেই চালাব। ”
এভাবেই শুরু। এখন ভ্যান চালিয়ে রোজগার করে খান তিনি।
বলছিলেন, প্রথম যখন শুরু করেছিলেন তখন কষ্ট ছিল অনেক বেশি। তখন পেডেল করে ভ্যান চালাতে হতো। এখন মোটর লাগানোর পর চালানোর কাজটা তার জন্য অনেক সহজ হয়ে গেছে। কবে রাতবিরেতে ভ্যান চালানোর অনেক সমস্যাও ছিল।
রেবেকার ভাষ্য, “সব ড্রাইভার কি আর ভালো আছে? কত ড্রাইভাররা খারাপ কথা কয়, হয়ত কবে .... তখন তো মান সম্মান যাবে। সেইজন্য আমি পুরুষের পোশাক পরে কাজে নামছি। ”
'আমি পুরুষেরে ঘিন্না করি। তাই আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে জীবনে আর বিয়া-সাদি করব না। নারীরা যদি রোজগার করে তার একটা শক্তি থাকে। আর যদি ঘরে বসে থাকে তাহলে তো স্বামী যা বলবে তাই করতে হবে।'
অবশ্য এই সবের পেছনে কারণও আছে। ছোটবেলায় বিয়ে হয়েছিল রেবেকার। যার সাথে বিয়ে হয়েছিল সে তার পরিবারের কাছে টাকা চেয়েছিল। রেবেকা তাকে বলেছিলেন তারা তো মারা মারা গেছেন। ছোট ছোট ভাই-বোন, মা কোথা থেকে টাকা দেবেন? টাকা না পেয়ে সে রেবেকাকে ছেড়ে চলে গেছে। সূত্র : বিবিসি
২৮ নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/আরিফুর রাজু/এআর