মঙ্গলবার, ০১ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৩:২৮:১৪

যেকারণে ভারতীয় টিভি চ্যানেল বন্ধ করা সম্ভব নয়

যেকারণে ভারতীয় টিভি চ্যানেল বন্ধ করা সম্ভব নয়

মুজতবা খন্দকার : ভারতে যাতে বাংলাদেশের টিভি চ্যানেল দেখা যায় সে ব্যাবস্থা করা হচ্ছে গত জুনে নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের আগের দিন বলেছিলেন, ভারতের সে সময়কার পররাষ্ট সচিব এস জয়শংকর। কিভাবে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন কালই (৬জুন) জানতে পারবেন। ৬ ও ৭ জুন নরেন্দ্র মোদী ঢাকা সফর করে ফিরে যান। কিন্তু জয়শংকরের কাল আর আসেনি... নেপাল ভারতের সকল টিভি চ্যানেল সে দেশে বন্ধ করে দিয়েছে...আমরা নেপালীদের জাতীয়তাবাদেরর প্রশংসা করতে পারি, দেশপ্রমিক নেপালের জনগনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে পারি... কিন্তু ভারতের টিভি চ্যানেল বাংলাদেশে বন্ধ হোক আমি তা চাইনা। কারন আমি জানি প্রাকটিক্যালী সেটা সম্ভব নয়... সেরকম দাবি করাটা কোন যুক্তির কথা নয়... হ্যা যেটা আমি করতে পারি তা হচ্ছে, ভারতে আমাদের চ্যানেল সম্প্রচারের দাবি করতে পারি। বৈষম্যের প্রতিবাদ করতে পারি... কিন্তু ওদের টিভি চ্যানেল নিষিদ্ধের কথা বলবোনা। আমি সকল নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে আকাশ সংস্কৃতির এই যুগে কোন কিছু নিষিদ্ধ করা মানে সময়ের বিপরীতে চলা। হ্যা আমি মানছি, ভারতে টিভিতে আমরা যা দেখছি.. তা আমাদের সমাজ, আমাদের ভ্যালুজের সাথে যায়না। আমি মানি.. কিন্তু এটাতো ঠিক,দক্ষিনা বাতাসের জন্য জানালা খুলে দিলে,বাতাসের সাথে কিছু ধুলোবালি তো আসবেই.... ভারতের ৩২টি পে চ্যানেল এবং ৮ফ্রি চ্যানেল বাংলাদেশে সম্প্রচারিত হচ্ছে... বাংলাদেশের কোন চ্যানেলই ভারতে সম্প্রচারিত হয়না.। ভারত সরকারে কাছে আমরা বার বার ধর্না দিয়েও সেদেশে বাংলাদেশের কোন একটি চ্যানেলের সম্প্রচার নিশ্চিত করতে পারিনি.. .ওরা বারবার বলছে বাংলাদেশের চ্যানেল ভারতে সম্প্রচারের ক্ষেত্রে কোন আইনি বাধা নেই।কিন্তু বিদেশী টিভি চ্যানেল প্রদর্শনের ক্ষেত্রে ডাউন লিংক ফি বেশী হওয়ায় ভারতীয় কেবল অপারেটররা আগ্রহ দেখায়না। এবার তাহলে আসা যাক ডাউন লিংক প্রসংগে: ভারতে কোন বিদেশী চ্যানেল সম্প্রচার করতে হলে, নির্দ্দিষ্ট নেট মুল্য দিয়ে ভারতের কোম্পানী আইন ১৯৫৬ অনুযায়ী নিবন্ধিত কোম্পানীর মাধ্যমে ভারতের তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রনালয়ে আবেদন করতে হয়। আর আবেদন কারী কোম্পানীকে প্রথম টেলিভিশন চ্যানেল ডাউন লিংকের জন্য পাচ কোটি ভারতীয় রুপি এবং পরবর্তী পর্যায়ে প্রতিটি অতিরিক্ত চ্যানেল ডাউন লিংকের জন্য দুই কোটি ৫০ লাখ নেট মুল্য পরিশোধ করতে হয়। এই মুল্য ছাড়াও ডাউন লিংক অনুমতি মঞ্জুরের সময় দশ লাখ ভারতীয় রুপি ফি দিতে হয়। আরো আছে, বিদেশ থেকে আপ লিংক করা প্রতিটি চ্যানেলের ডাউন লিংকের জন্য বার্ষিক ফি হিসেবে ১৫ লাখ রুপি দিতে হয়। ডাউন লিংকের নিবন্ধন ও অনুমতি দশ বছর বহাল থাকে... এবার আসি ভারতের চ্যানেল বাংলাদেশ ডাউন লিংক কিভাবে করা হয় সে প্রসংগে। আসলে বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেল সম্প্রচারের ক্ষেত্রে কোন নীতিমালাই নেই। ডাউন লিংক ফি মাত্র দেড়লাখ টাকা। দুবছর আগে এই ফি তিন লাখ আমি রিপিট করছি, তিন লাখ টাকা করার প্রস্তাব আইন মন্ত্রনালয়ে ভেটিং এর জন্য পাঠানো হয়েছিলো, এরপর কি হয়েছিলো কেউ বলতে পারেনা... এই যদি হয় দুদেশের চ্যানেল সম্প্রচারের নীতিমালা। তাহলে ভারতের চ্যানেল দেখাটা আমাদের বিধিলিপি মেনে নেয়া ছাড়া আর কিবা করার আছে..... সুতরাং আমরা ডাউন লিংক নীতিমালা আরো কঠোর আরো ব্যয়বহুল করার দাবি করতে পারি... কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কার কাছে দাবি করবো... সরকারের কাছে.. সেটা অরন্যে রোদনের মত শোনাবে না কি? ০১ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে