শুক্রবার, ০৩ আগস্ট, ২০১৮, ১০:০০:৩৭

কিশোর আন্দোলনকে বিতর্কিত করার চেষ্টায় অনুপ্রবেশকারীরা!

কিশোর আন্দোলনকে বিতর্কিত করার চেষ্টায় অনুপ্রবেশকারীরা!

সত্যজিৎ কাঞ্জিলাল: যদি প্রশ্ন করা হয়, 'গত পাঁচদিনে ঢাকা শহরে আপনি কী দৃশ্য দেখেছেন?' শতভাগ মানুষ বলবেন, শিক্ষার্থীদের অনন্য সাধারণ সব উদ্যোগের কথা। তারা সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সরকার এবং প্রশাসনের উপর মহল পর্যন্ত সকলের গাড়ির লাইসেন্স এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করছে। তারা সড়ক পরিস্কার করছে। সড়কে সারি বেঁধে সুশৃঙ্খলভাবে গাড়ি চালাতে বাধ্য করছে। প্রচণ্ড ক্ষোভে গাড়ি ভাংচুর করে সেই ভাঙা কাঁচের টুকরা নিজেরাই পরিস্কার করছে রাস্তা থেকে।

এই ছেলেরা আবার গুরুতর অসুস্থ রোগিকে পৌঁছে দিচ্ছে হাসপাতালে। রাস্তার মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়া রিকশাচালককে নিজেরাই রিকশা চালিয়ে পৌঁছে দিচ্ছে হাসপাতালে। সবচেয়ে চমক জাগানো বিষয়টি হলো, এই যানজটের নগরীতে তারা রীতিমতো একটা 'ইমার্জেন্সি লেন' তৈরি করেছে! যেই লেন দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ জরুরি বাহনগুলো যেতে পারে। এসব ওদের কাজ নয়। কিন্তু সৃজনশীল কিশোর-কিশোরীর দল প্রমাণ করে দিয়েছে, একটু সদিচ্ছা থাকলেই এই দেশে অসাধারণ কিছু করা সম্ভব!

এত কিছুর মাঝে মুদ্রার অপর পিঠও দেখা যাচ্ছে। যেমন গতকাল বিমানবন্দর সড়কে গাড়ি আটকাল কিছু কিশোর-কিশোরী। তাদের গায়ে কোনো স্কুলড্রেস কিংবা ব্যাগ নেই। এক কারচালকের চাবি নিয়ে ছুড়ে ফেলল একজন। সাংবাদিক পরিচয় দিলে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে দেওয়ার স্বার্থে শিক্ষার্থীরা যাওয়ার পথ করে দিত। কিন্তু গতকালের সেই কিশোরের দল এসব শুনতে রাজি নয়। তারা রীতিমতো বাজে ব্যবহার শুরু করল, যা কোনো স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের করার কথা নয়!

ছবি তুলতে চাইলে প্রবল আপত্তি তাদের। ক্যামেরা বের করা যাবে না। সন্দেহ প্রবল হলে একজনকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কোন স্কুলে পড়? তোমার ড্রেস নেই কেন? আইডিকার্ড কোথায়? উক্ত তিনটি প্রশ্নের একটিরও কোনো উত্তর না দিয়ে হেঁটে অন্যদিকে চলে গেল সেই কিশোর। বাকী কয়েকজন আমাকে চলে যেতে বলে অন্যদিকে যেতে লাগল। তাদেরকেও জিজ্ঞেস করলাম, 'তোমরা কোন স্কুলের ছাত্র?' তারা কোনো জবাব না দিয়ে চলে গেল অন্যদিকে।

খুব স্পষ্টই বোঝা যায়, এরা আসলে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র হতে পারে না। কোনো বাজে উদ্দেশ্য নিয়ে কিশোর-কিশোরীদের আন্দোলনে এরা অনুপ্রবেশ করেছে, অথবা কোনো মহলের উস্কানিতে তারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে অ-ছাত্রদের মতো আচরণ করছে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন আরও কতদিন চলবে জানি না। আদৌ আর চলবে কিনা সেটাও জানি না। তবে, এসব অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে সতর্ক হতে হবে শিক্ষার্থীদের।
সূত্র: কালের কণ্ঠ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে