শুক্রবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৮, ০৮:২৬:৩৩

মনোনয়ন নিতে এসে লাশ হওয়া বিএনপি নেতার জানাজায় মানুষের ঢল

মনোনয়ন নিতে এসে লাশ হওয়া বিএনপি নেতার জানাজায় মানুষের ঢল

নিউজ ডেস্ক: দলীয় মনোনয়ন নিতে এসে অপহরণ, দিনকয়েক পরে লাশ হয়ে বাড়ি ফেরা বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ও মজিদপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর আবু (৭০)’র জানাজায় শুক্রবার মানুষের ঢল নেমেছিল। শুক্রবার দুই দফায় জানাজা শেষে কেশবপুর উপজেলার বাগদহ গ্রামে বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হন। তিনি যশোর-৬ (কেশবপুর) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। 

গত ১৮ নভেম্বর রাতে রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে নিখোঁজের ৪দিন পর আবু বকর আবুর লাশ বুড়িগঙ্গা নদীতে পাওয়া যায়।

বৃহস্পতিবার ফেসবুকে ছবি দেখে পরিবারের লোকজন শনাক্ত করেন।

শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা থেকে কেশবপুরে আবু বকর আবুর লাশ পৌঁছায়। সাড়ে ১২টার দিকে মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদে নেওয়া হয় লাশ। এরপর নিজ বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে তার আত্মীয় স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন।

আবু বকর আবুকে শেষ বারের মত দেখার জন্য ৪ কিলোমিটার দূর শিকারপুর গ্রাম থেকে আসেন জামেলা বেগম।

তিনি বলেন, আবু চেয়ারম্যানের মৃত্যুতে আমি আমার সন্তান হারানো শোক পেয়েছি।

মজিদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা মনোজ তরফদার বলেন, আবু বকর আবু চেয়ারম্যান হিসেবে দলমতে ঊর্ধ্বে অসাম্প্রদায়িক চেতনার একজন মানুষ ছিলেন।

বিকেল সাড়ে ৩টায় কেশবপুর শহরে পাবলিক ময়দানে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতে জানাজার পূর্বে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

এসময় বক্তারা নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে আবু বকর আবুর খুনিদের বিচারের দাবী করেন।

জানাজা শেষে মরহুমের কফিনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শাহিন পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন।

এরপর বাগদহ গ্রামে তার তৈরি মাদ্রাসা মাঠে দ্বিতীয় বার জানাজা শেষে মাদ্রাসা সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে মা-বাবার পাশে তাকে দাফন করা হয়।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আবু বকর আবু গত ১২ নভেম্বর ঢাকায় পৌঁছান। ১৯ নভেম্বর সাক্ষাৎকার বোর্ডে অংশ নেওয়ার জন্য পল্টন এলাকার মেট্রোপলিটন হোটেলে ৪র্থ তলায় ৪১৩নং রুমে অবস্থান করছিলেন।

১৮ নভেম্বর রাত ৮টার পর তাকে আর পাওয়া যায়নি। এরপর একটি মোবাইল ফোন থেকে কেশবপুরে তার এক ভাগ্নের কাছে ফোন দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। সোমবার সকালে অপহরণকারীদের দেওয়া বিভিন্ন নম্বরে এক লাখ ৭০ টাকা বিকাশ করেও তাকে বাঁচানো যায়নি। 

অবশেষে তার লাশ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন তেলঘাট এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীতে ভাসতে দেখে পুলিশ উদ্ধার করে অজ্ঞাতনামা হিসেবে ঢাকার মিডফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠান। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে মর্গে লাশ দেখে আবু বকর আবুর লাশ বলে শনাক্ত করেন তার ভাতিজা হুমায়ূন কবির। 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে