বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০১:৫৬:২৭

প্রচারণায় ব্যাকফুটে আওয়ামী লীগ

প্রচারণায় ব্যাকফুটে আওয়ামী লীগ

রফিকুল ইসলাম রনি : প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠেয় পৌরসভা নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি রাখা হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের অধিকাংশই এমপি-মন্ত্রী হওয়ায় তারা মাঠে নামার সুযোগ পাচ্ছেন না আগামী ৩০ ডিসেম্বরের পৌরসভা নির্বাচনে। বিধিনিষেধ আরোপের পর প্রচার-প্রচারণায় এমপিদের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচন কমিশন। মূলত এ জন্যই দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় ব্যাকফুটে থাকবে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সরাসরি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণের সুযোগ থাকায় বাড়তি চাপের মধ্যে রয়েছেন ক্ষমতাসীনরা। তবে দলের একাধিক নীতিনির্ধারক জানিয়েছেন, পৌর নির্বাচনে পিছিয়ে থাকতে চান না তারা। প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণার জন্য এমপি-মন্ত্রী নন এমন কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতাদের সমন্বয়ক করে সাত বিভাগে টিম করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল কিংবা পরশু সমন্বয়কদের নিয়ে বৈঠকে কমিটি গঠন করা হবে। এরপর ১৪ তারিখ থেকে সারা দেশে দলীয় মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে ঢাকা ছাড়বেন তারা। গণসংযোগে তৃণমূলের ভোটারদের কাছে তুলে ধরবেন বর্তমান সরকারের সাত বছরের বিভিন্ন উন্নয়ন ও সাফল্য। চাইবেন দলীয় প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোট। দলীয় সূত্র মতে, আগামী ১৪ ডিসেম্বর প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। প্রতীক পাওয়ার আগে অর্থাৎ ১৩ ডিসেম্বর যেসব পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন তাদের বুঝিয়ে-সুজিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করানোর জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সকাল-সন্ধ্যা দলীয় সভাপতির ধানমন্ডি কার্যালয়ে বসে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ফোন করছেন। দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য বলা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের একাধিক নীতি-নির্ধারক মনে করেন, দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠেয় পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে এমপিদের সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। কারণ দলের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতাই এমপি ও মন্ত্রী। এতে করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে না। কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিলে স্ব-স্ব পৌরসভা এলাকায় ভোটে একটি ইতিবাচক সাড়া মিলত। যারা মনোনয়ন না পেয়ে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন, তাদের সক্রিয়ভাবে মাঠে নামানো যেত। তবে এমপি-মন্ত্রীরা মাঠে নামতে না পারলেও মূল দলের নেতাদের পাশাপাশি মাঠে নামছেন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো এবং ১৪ দলের শরিকরা। গত মঙ্গলবার ধানমন্ডিতে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠকে সাবেক মন্ত্রী ও সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়াকে আহ্বায়ক করে ১৪ দলের একটি নির্বাচনী পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি সারা দেশে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেবে। যেখানে শরিক দলের প্রার্থী রয়েছেন সেখানে শরিক দল ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। ওই বৈঠকে গুরুত্ব পাবে, জোট নেতাদের বিভেদের কারণে যেন প্রতিপক্ষরা যেন লাভবান না হয়। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হলেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠে নামবেন। এ জন্য দু-একদিনের মধ্যে বৈঠক করে দায়িত্ব বণ্টন করা হবে। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, দলীয়ভাবে পৌরসভা নির্বাচন হলেও এতে প্রচারণায় মন্ত্রী-এমপিদের নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তটি যৌক্তিক বলে মনে হয়নি। যেহেতু দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে, তাই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার জন্য প্রচারণায় এমপিদের সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, সারা দেশে নির্বাচনী প্রচারণার জন্য আমাদের ২৫টি সাংগঠনিক টিম গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে এ প্রচারণা টিমকে সমন্বয় করতে কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করতেও একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হয়েছে। ছাত্রলীগ সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে সারা দেশে ছাত্রলীগের প্রতিটি শাখাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর দিন থেকে ফলাফল ঘোষণার দিন পর্যন্ত আমাদের নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকবে। -বাংলাদেশ ১০ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে