বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০২:২৯:২১

শাশুড়িকে হত্যা করে প্রেমিকের সাথে পালালেন কুসুম

শাশুড়িকে হত্যা করে প্রেমিকের সাথে পালালেন কুসুম

মহিউদ্দীন জুয়েল, চট্টগ্রাম ও গাজী যুবায়ের (রাউজান) থেকে : স্বামী বিদেশ থাকতেন। বাড়িতে পুরুষ মানুষের আনাগোনা তেমন ছিল না বললেই চলে। সেই বাড়িতে থাকতো শাশুড়ি, ছেলের বউ আর নাতনি। দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে একসময় ছেলের বউয়ের সঙ্গে কৌশলে সম্পর্ক গড়ে তোলে আত্মীয় শেখ কামাল। এরপর ঘরের ভেতর একদিন দেবর কামাল ও পুত্রবধূ কুসুম আক্তারের মেলামেশা ধরা পড়ে যায় শাশুড়ি নূর আয়েশার কাছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার আশঙ্কায় কামাল হত্যা করে আয়েশাকে। এরপর মৃত্যুকে হৃদরোগে মারা যাওয়ার কারণ উল্লেখ করলেও পরে কবর থেকে তোলা হয় সেই বৃদ্ধ শাশুড়ির লাশ। ঘটনা ফাঁস হওয়ার আগেই প্রেমিক কামালের হাত ধরে একমাত্র কন্যাসন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গেছে কুসুম আক্তার। মায়ের মৃত্যু, স্ত্রীর পলায়ন ও মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার সংবাদে পাগলপ্রায় বিদেশ ফেরত মোমিন উল্লাহ। চট্টগ্রামের রাউজানে ঘটে যাওয়া চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় থানায় মামলা করে নিজের স্ত্রীকে এখন খুঁজছেন তিনি। হত্যাকাণ্ডের একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী প্রধান সাক্ষী স্ত্রী কুসুম আক্তার ও ২ বছরের কন্যাকে গত ২৯ দিনেও খুঁজে বের করতে পারেনি মোমিন। দিগ্বিদিক ঘুরে বেড়াচ্ছেন স্ত্রী, কন্যার খোঁজে। জানতে চাইলে গতকাল মোমীন উল্লাহ বলেন, গত ১০ই নভেম্বর ভোরে আমার স্ত্রী কুসুম আক্তার ও আমার একমাত্র কন্যা সায়মাকে নিয়ে হঠাৎ মামার বাড়ির ঘর থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। এর পর আমি আমার শ্বশুর বাড়ি, আত্মীয় স্বজনসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ-খবর নিয়েছি, কোথাও কোন খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি। এতে আমি নিঃস্ব হয়ে রাউজান থানায় জিডিও করেছি। কিন্তু গত ২৯ দিনেও তাদের খোঁজ মেলেনি। স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নের শাহদুল্লাহ কাজীপাড়ার নূর আয়েশা (৫৫) চলতি বছরের গত ২১ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে আপন ভাইপোর হাতে খুন হন। ঘটনাটি স্ট্রোকে সাধারণ মৃত্যু বলে প্রচার করা হয়। পরে প্রবাসী মোমিন স্ত্রী কুসুম আক্তারের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়। এরপর গত ২২শে অক্টোবর নিহতের একমাত্র পুত্র মোমিন বাদী হয়ে তার মামাত ভাই শেখ কামাল ও অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা রেকর্ড করেন রাউজান থানায়। পরের দিন ২৩শে অক্টোবর আদালতে পুত্রবধূ কুসুম আক্তার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন। পরে ৬ই নভেম্বর সুরতহাল রিপোর্টের জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়। নূর আয়েশা হত্যাকাণ্ডে কুসুম আক্তারকে প্রধান সাক্ষী রাখা হয়েছে। ঘটনার মূল আসামি শেখ কামালকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে এই মামলার প্রধান সাক্ষী পুত্রবধূ কুসুম আক্তারকে খোঁজে বের করার চেষ্টা চলেছে। ওই এলাকার লোকজন জানান, পাহাড়তলী ইউনিয়নের শাহদুল্লাহ কাজীপাড়ার পূর্বদিকে পাহাড়ের ধারে লোকালয়ের অদূরে নির্জন এলাকায় একটি সেমি পাকা ঘরে নিহত নূর আয়েশা তার একমাত্র কুয়েত প্রবাসী পুত্রের বউ ও নাতনিকে নিয়ে পরম সুখে বসবাস করতেন। সন্ধ্যার পরে তার বসতবাড়ির দিকে লোকজনের তেমন যাতায়ত না থাকলেও পুরুষবিহীন ওই বাড়িতে নুর আয়েশার ভাইপো শেখ কামালের অবাধ যাতায়ত ছিল। এতে করে খুনি শেখ কামালের সঙ্গে নিহতের পুত্রবধূ কুসুম আক্তারের অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এদিকে সুরতহাল রিপোর্টের জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলন পরে স্বামীকে ছেড়ে কুসুম আক্তার তার শিশু কন্যাকে নিয়ে রাতের আঁধারে পালিয়ে যাওয়ায় তার প্রতি সন্দেহটা বাড়তে থাকে স্বামীর। -মানবজমিন ১০ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে