শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৯, ০৪:১৭:০৪

বোরকার আড়ালে ছিল ছদ্মবেশী পুরুষ!

 বোরকার আড়ালে ছিল ছদ্মবেশী পুরুষ!

নিউজ ডেস্ক :  নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার অন্যতম আসামি নুরুদ্দিন (৩০) ও পৌর কাউন্সিলর মাকসুদুল আলমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গতকাল সকালে ও বৃহস্পতিবার রাতে ময়মনসিংহের ভালুকা এবং ঢাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে এজাহারভুক্ত বেশ কয়েকজন আসামিকে গ্রেফতাররের পর কিছু কিছু তথ্য বেরিয়ে আসছে। এতে একটি বিষয় পুলিশ বুঝতে পারছে নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঠাণ্ডা মাথায় এই অপরাধ সংঘটন করা হয়। বোরকাপরা যে চারজন নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে, তাদের মধ্যে ছদ্মবেশী পুরুষ ছিল বলেও বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য পাচ্ছেন পুলিশের তদন্তকারীরা।

গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় কাউন্সিলর মাকসুদুল আলমকে ঢাকা এবং তার এক সহযোগীকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতারর করা হয়। পিবিআই ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘গ্রেফতাররকৃত দুজনকে ফেনীতে আনা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য গণমাধ্যমকে পরে জানানো হবে।’ গতকাল বেলা ১১টার দিকে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ির সিডস্টোর আমতলী এলাকা থেকে নুরুদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়।

নুসরাত হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি নুরুদ্দিন। তাকে গ্রেফতারের পর ফেনী পিবিআই কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছে সূত্র। অভিযুক্ত নুরুদ্দিন অধ্যক্ষ এএসএম সিরাজউদ্দৌলার মুক্তি দাবিতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। প্রত্যক্ষদর্শী আমতলী গ্রামের শ্রমিক নেতা সফিকুল ইসলাম সফিক জানান, নুরুদ্দিন ঢাকার খিলক্ষেত থেকে বৃহস্পতিবার রাতে আমতলী গ্রামে আকবরের বাড়িতে আত্মগোপন করে।

আকবরের মামির গ্রামের বাড়ি ও নুরুদ্দিনের বাড়ি একই এলাকায়। সেই সুবাদে সে সেখানে আত্মগোপন করেন। তবে নুরুদ্দিনকে গ্রেফতারের খবর আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি পুলিশ। এ ঘটনায় নুসরাতের ভাই নোমানের করা মামলায় এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা, পৌর কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম, প্রভাষক আফসার উদ্দিন, মাদ্রাসা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শামীম, সাবেক ছাত্র নুরুদ্দিন, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহম্মদ ও হাফেজ আবদুল কাদের।

কে এই নুরুদ্দিন নুসরাত অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে নুরুদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীম গা ঢাকা দেন। ঘটনার প্রথম দিন থেকেই সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন এ দুজন। ঘটনার মূল আসামি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত নুরুদ্দিন ও শাহাদাত। নুসরাতের গায়ে যে চার বোরকাধারী আগুন দিয়েছে, তাদের নামধাম এ দুজন জানেন বলে পুলিশের ধারণা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ৫ এপ্রিল রাতে নুরুদ্দিন ও শাহাদাতকে এবং পরদিন (ঘটনার দিন) সকালে নুরুদ্দিনকে মাদ্রাসার মূল ফটকে দেখা যায়। নুরুদ্দিন ও শাহাদাত দুজনই সোনাগাজী মাদ্রাসার ফাজিলের ছাত্র। মাদ্রাসা থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়ায় নুরুদ্দিনের বাড়ি। অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকায় নিয়মিতই মাদ্রাসায় প্রভাব খাটাতেন। ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দাখিল পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে সেই টাকা অধ্যক্ষসহ ভাগাভাগি করে নেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে