সোমবার, ১৩ মে, ২০১৯, ০৬:৪৮:০৪

একই মঞ্চে রাশেদ খান মেনন, ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল

একই মঞ্চে রাশেদ খান মেনন, ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল

নিউজ ডেস্ক : দেশের ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ, বিদ্বেষপূর্ণ, হিংসাত্মক ও দলাদলির রাজনীতিতে’ সচরাচর এমন দৃশ্য দেখা যায় না। কিন্তু আজ অচেনা সেই দৃশ্যই দেখা গেল। বিপরীতমুখি কয়েকজন রাজনীতিবিদের দেখা মিলল একই মঞ্চে।

সদ্যপ্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ’র স্মরণে আয়োজিত অরাজনৈতিক শোক সভায় ছিলেন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম নেতা, সাবেক মন্ত্রী এবং ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ওই মঞ্চে আরও ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান, ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন, নাগরিকের ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব সহ বহু রাজনীতিবিদ।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক, কলামিস্ট ও লেখক মাহফুজ উল্লাহ’র প্রয়াণে নাগরিক শোক সভায় বিপরীতমুখি ও বিপরীত আদর্শের এই রাজনীতিবিদদের একই মঞ্চে বক্তব্য রাখতে দেখা যায়।

বর্তমানে তাদের অধিকাংশ বিপরিতমুখী মতাদর্শের হলেও ছাত্রজীবন বা জীবনের কোনো এক পর্যায়ে প্রায় প্রত্যেকে বামপন্থি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জাতীয়তাবাদী আদর্শের ধারক হলেও বামপন্থি ছাত্রনেতা ছিলেন তিনি। একইভাবে ছাত্রজীবনে বামপন্থি ছাত্র সংগঠন করতেন বিএনপির বর্তমান মহাসচিব মির্জা ফখরুলও। সেই সূত্র ধরেই একই মঞ্চে উপনিত হয়েছিলেন তারা।

সকাল থেকে শোক সভায় যোগ দেন বিভিন্ন মতাদর্শের নেতৃবৃন্দ। বক্তব্যের মাঝামাঝি সময়ে আসেন রাশেদ খান মেনন। ড. কামাল হোসেনের বক্তব্যের পর ছিলো মেননের বক্তব্য।

এই সময় বিচ্ছিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে শোক সভায়। রাশেদ খান মেনন বক্তব্য দিতে দাঁড়ালে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাত সবার সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান।

তিনি বলেন, এই মঞ্চে রাশেদ খান মেনন বক্তব্য দেওয়ার নৈতিকতা হারিয়েছেন। আমি তার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে কক্ষ ত্যাগ করছি- এই বলে তিনি বেরিয়ে যান।

এসময় ‘ড. কামাল হোসেনের বক্তব্যের পর কেন রাশেদ খান মেনন বক্তব্য রাখেবন’- এমন প্রশ্ন করতে দেখা যায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকেও। বিচ্ছিন্ন এই ঘটনা বাদে তবে বাকি অনুষ্ঠান ভালোভাবেই সম্পন্ন হয়।

শোক সভায় ড. কামাল হোসেন তার বক্তব্যে সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর প্রয়াণে শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক পর্যায়ে বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের কোনো জায়গা নেই বলে গ্যারান্টি দিয়ে কথা বলেন।

ড. কামাল বলেন: ‘গ্যারান্টি দিতে পারি, আমার অভিজ্ঞতার আলোকে বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের কোনো জায়গা নাই।  যারা মনে করেন স্বৈরতন্ত্রকে চাপা দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে, বিভিন্ন রকমের প্রভাব খাটিয়ে চিরস্থায়ী হতে পারে, তারা আহাম্মকের স্বর্গে বাস করছেন। স্বৈরতন্ত্রের আলামতগুলো চারদিকে লেগে থাকে। সেই কারণে নিরাশ হওয়ার কোনো কারণ নাই। এখানে যে উপস্থিতি সকলেই ঐক্যের পক্ষে। মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে কেন্দ্র করে আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই।’

একই মঞ্চে মির্জা ফখরুল চলমান সময়কে গণতন্ত্রহীন দাবি করে বলেন: কঠিন এই সময়ে সাংবাদিক, কলামিস্ট ও লেখক মাহফুজ উল্লাহর মতো উদার, সহিঞ্চু ও অনুপ্রেরণাদায়ক সাহসী ব্যক্তির বড় প্রয়োজন ছিলো। তার অকাল প্রয়ান দেশের গণতন্ত্রাতিক মুক্তি আন্দোলনের জন্য বড় ক্ষতি।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন: মাহফুজ উল্লাহর অবদান ভুলে যাওয়া যাবে না। সাংবাদিক হিসেবে পরিবেশ সাংবাদিকতায় প্রভাব তিনি সৃষ্টি করেছিলেন তা অনবদ্য। তিনি পরিবেশ সাংবাদিকতার পথিকৃত ছিলেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে