সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৪:২৪:৩১

বাড়ছে হজের ব্যয়

বাড়ছে হজের ব্যয়

উবায়দুল্লাহ বাদল : আগামী বছর থেকে বাড়ছে হজের ব্যয়। বিমান ভাড়া ও মোয়াল্লেম ফি বৃদ্ধির ফলে প্রতি হজযাত্রীকে অতিরিক্ত গুনতে হবে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। প্রস্তাবিত হজ প্যাকেজ-১-এ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৭ টাকা; যা চলতি বছর ছিল ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৭৪৫ টাকা। প্যাকেজ-২-তে প্রস্তাব করা হয়েছে ৩ লাখ ২১ হাজার ৬৪৭ টাকা; যা ছিল ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০৬ টাকা। পাশাপাশি হজ সংক্রান্ত জটিলতা এড়াতে জাতীয় হজ এবং ওমরাহ নীতিমালাও সংশোধন করা হচ্ছে। উল্লিখিত বিষয়ের খসড়া ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করেছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। শিগগিরই অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। জানতে চাইলে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বলেন, আগামী বছরের হজ প্যাকেজ ও নীতিমালা নিয়ে কাজ চলছে। বিমান ভাড়া ও মোয়াল্লেম ফি বৃদ্ধির কারণে হজের ব্যয় বাড়তে পারে। হজ প্যাকেজ ও জাতীয় হজ এবং ওমরাহ নীতিমালা প্রায় চূড়ান্ত, শিগগিরই তা মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। জানা গেছে, হজ কার্যক্রমে জটিলতা এড়াতে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে আগেভাগেই সম্ভাব্য বিমান ভাড়া ও আনুষঙ্গিক তথ্য চাওয়া হয়। সে অনুযায়ী বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে যাত্রীপ্রতি এক লাখ ৩০ হাজার ৮৮৭ টাকা প্রস্তাব করা হয়। গতবছর ছিল এক লাখ ১৭ হাজার ৫৭৭ টাকা। একইভাবে মোয়াল্লেম ফি, মক্কা-মদিনায় বাড়ি ভাড়াসহ বিভিন্ন খাতে খরচ বেড়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে প্রাক-নিবন্ধন শুরু হতে পারে। পাশাপাশি আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি সৌদি সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের হজ চুক্তিও সম্পন্ন হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, বিমান ভাড়ার বিষয়টি আরও কমানোর চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সমন্বয় করছে। বিমান ভাড়া কিছু কমানো হতে পারে। আজকালের মধ্যে তা চূড়ান্ত হবে। সব কিছু মিলিয়ে আগামী বছর থেকে একজন হজযাত্রীকে অতিরিক্ত ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা বাড়তি হিসাব করতে হতে পারে। কোরবানির জন্য দিতে হবে আরও ৫০০ রিয়াল করে। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে সৌদি সরকার হজ ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন এনেছে। ই-হজ ম্যানেজমেন্ট পুরোদমে কার্যকর করেছে তারা। তাদের সঙ্গে তাল মেলাতে বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশও হজ ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এনেছে। চলতি বছর থেকে শুধুমাত্র অনলাইন নিবন্ধন পদ্ধতি চালু করলেও বাংলাদেশে এখনও হজ ব্যবস্থাপনায় তেমন পরিবর্তন আনেনি। এ কারণে চলতি বছর হজ ব্যবস্থাপনায় বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। প্রথমবারের মতো অনলাইন নিবন্ধন পদ্ধতি চালুর ফলে প্রায় ৩০ হাজার হজপ্রত্যাশী মোয়াল্লেম ফি জমা দিয়েও হজে যেতে পারেননি। শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ অনুরোধে অনেকটা বাধ্য হয়েই কোটার অতিরিক্ত আরও পাঁচ হাজার হজযাত্রীকে হজ করার অনুমতি দেয় সৌদি কর্তৃপক্ষ। এ নিয়েও অব্যবস্থাপনার সৃষ্টি হয়। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে হজ ব্যবস্থাপনায় শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়। এ লক্ষ্যে ২৪ নভেম্বর ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শহিদুজ্জামানকে প্রধান করে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কমিটি তাদের প্রস্তাবিত সংশোধনীর খসড়া চূড়ান্ত করেছে। প্রস্তাবিত হজ নীতিমালায় বলা হয়েছে, প্রতিবছর ১ জানুয়ারি থেকে প্রাক-হজ নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হবে। হজযাত্রী হিসেবে নিবন্ধিত হতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই মেশিন রিডেবল পাসপোর্টধারী (এমআরপি) হতে হবে। পাসপোর্টের মেয়াদ হজ পালনের মাস বাদ দিয়ে কমপক্ষে ৬ মাস হতে হবে। বাংলাদেশী কোনো নাগরিক বিদেশী পাসপোর্ট নিয়ে হজে যেতে পারবেন না। যেসব হজযাত্রীর বয়স ১৮ বছরের বেশি তাদের নিবন্ধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক। যাদের বয়স ১৮ বছরের কম তাদের অভিভাবকের সঙ্গে জন্মনিবন্ধন সনদের কপিসহ আবেদন করতে হবে। এসব তথ্য সরকার সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তদন্ত করবে। হজে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা জেলা প্রশাসক, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার, পৌর ডিজিটাল সেন্টার, সিটি কর্পোরেশন ডিজিটাল সেন্টার, ঢাকাস্থ হজ অফিস, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও হজ এজেন্সির কার্যালয় থেকে প্রাক-নিবন্ধন করতে পারবেন। সরকার নির্ধারিত ফি ও অগ্রিম জামানত নির্ধারিত ব্যাংকে জমা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে জমাকারীকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিক নম্বর দেয়া হবে।-যুগান্তর ২১ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে