রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৯, ০৮:৩৪:৪৬

ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে ‘বুলবুল’, ঘরছাড়া মানুষের মুখে স্বস্থির হাসি

ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে ‘বুলবুল’, ঘরছাড়া মানুষের মুখে স্বস্থির হাসি

নিউজ ডেস্ক : ক্রমশ দুর্বল হয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে আ'ঘাত হেনেছে। তবে দুর্বল হয়ে আসলেও ঝড়ের কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় পাঁচ থেকে সাত ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়ে গেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

শনিবার (৯ নভেম্বর) রাত ১টার দিকে আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমশ উপকূলের উত্তর পূর্বদিকে অগ্রসর হচ্ছে। গতি কমলেও ল্যান্ডফলের সময় স্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় পাঁচ থেকে সাত ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা এখনও রয়ে গেছে। তবে শঙ্কা অনেকটাই কমে গেছে।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চর থেকে দুবলা ফিসারম্যান গ্রুপের সভাপতি কামাল উদ্দীন আহমেদ জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে সুন্দরবনের দুবলার চরে প্রথম ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আ'ঘাত হানে।

তিনি বলেন, এ সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটারের মধ্যে। তবে জলোচ্ছ্বাস হয়নি। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে আড়াই ফুট পানির উচ্চতা বেড়েছে।

এদিকে, সাতক্ষীরার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১ লাখ ৪৬ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। জেলার ২৭০টি সাইক্লোন শেল্টার ও ১ হাজার ২০০ স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে এসব মানুষকে রাখা হয়েছে। আশ্রিতদের মাঝে রাতের খাবার হিসেবে খিচুড়ি বিতরণ করা হয়েছে।

উপকূলীয় আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, ইউনিয়নের ১১টি সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছেন তিন হাজারের অধিক মানুষ। এসব মানুষের মাঝে সন্ধ্যার আগে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছিল। রাতের খাবার হিসেবে খিচুড়ি দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সুপেয় পানি বিতরণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল শনিবার মধ্যরাতে আ'ঘাত হানার কথা থাকলেও কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় রাত ১২টা পর্যন্ত স্বাভাবিকই ছিল। এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের ত্রাণ কর্মকর্তা মুকুল জানান, উপকূলীয় এলাকা থেকে জোয়ারের পানিতে গ্রাম ডুবে যাওয়ার খবর সরকারি দপ্তরের কোনো কর্মকর্তা কিংবা জনপ্রতিনিধিরা জানাননি। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এখনো পর্যন্ত কোন ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আ'ঘাত হানার পর জোয়ারের স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আবাহাওয়া অফিসের নির্দেশনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, অতীতে নভেম্বর মাসেই দুটি প্রচণ্ড শক্তিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনে বিপর্যস্ত করে যায় বাংলাদেশকে। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর ভয়াল ‘ভোলা ঝড়’ এবং ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডর এমনই শক্তিশালী দুটি ঘূর্ণিঝড় ছিল। ভোলা ঝড়ে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং সিডরে প্রাণহানি তুলনামূলক কম হলেও দক্ষিণাঞ্চলের কিছু এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে