‘সাঁতার শিখবে ৪ কোটি’
নিউজ ডেস্ক : প্রতিবছর বাংলাদেশের প্রায় ১৮ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়৷ সে হিসাবে প্রতিদিন গড়ে প্রাণ যাচ্ছে ৪৯ জন শিশুর৷ প্রতি ৩০ মিনিটে মারা যাচ্ছে একজন৷ দেশটিতে এক থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুমৃত্যুর অন্যতম বড় কারণ এটি৷ তবে সাঁতার শেখার উদ্যোগ বিশ্বসেরা বাংলাদেশ।
বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে ডয়চে ভেলে এ খবর দিয়েছে।
এ অবস্থায় চলতি বছরের শুরুতে সরকার স্কুলের সব শিক্ষার্থীদের জন্য সাঁতার শেখা বাধ্যতামূলক করার ঘোষণা দেয়৷ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ফারহানা হক, যিনি এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের দায়িত্ব আছেন।
তিনি জানিয়েছেন, পাঁচ থেকে ১৭ বছর বয়সী প্রায় চার কোটি শিশুকে আমরা সাঁতার শেখানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি৷ আমার মনে হয়, এটি কোনো এক সময়ে নেয়া সবচেয়ে বড় সাঁতার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি৷
সাঁতার প্রশিক্ষণের এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত সুইমিংপুলের অভাব একটি বড় বাধা৷ এ অভাব দূর করতে সরকার স্থানীয় পুকুর ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে৷
কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইউনিসেফ অর্থ ও জনবল দিয়ে সহায়তা করছে৷ এছাড়া বাতাস ঢুকিয়ে ফোলানো যায় এমন বড় সুইমিংপুলও সরবরাহ করছে জাতিসংঘের এ সংস্থাটি৷
ঢাকায় স্থাপন করা ইউনিসেফ-এর এমনই এক সুইমিংপুলে সাঁতার প্রশিক্ষণ দেখতে গিয়েছিলেন বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিনিধি৷ সেখানে তিনি যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে তাদের সঙ্গে কথা বলেন৷ ১০ বছরের কবিতা আক্তার তাকে জানায়, আগে আমি পানি দেখলে ভয় পেতাম৷ এখন আমার বারবার এখানে আসতে ইচ্ছা হয়৷
ইউনিসেফের শিশু নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ অ্যামি ডেলনয়ভিলে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে যেহেতু অনেক জলাভূমি আছে সেহেতু পানিতে ডুবে শিশু মারা যাওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে৷ মানুষজন তাদের কর্মসূচি নিয়ে সন্তুষ্ট বলে জানান তিনি। কারণ তারা জানেন পানি কতটা বিপজ্জনক হতে পারে।
পানি যে কতটা বিপদের কারণ হতে পারে সেটা ভালো করেই জানেন জাহানারা আনোয়ার৷ ২০১১ সালে তার ১৪ বছরের ছেলে আমান্ত পানিতে ডুবে মারা যায়৷ তাই তিনি এখন তার আট বছর বয়সী ছেলে অনন্তকে সাঁতার শেখাচ্ছেন৷ শুধু নিজের জন্য নয় পানিতে ডুবতে থাকা অন্য কাউকে বাঁচানোর জন্যও সাঁতার শেখা প্রয়োজন বলে ছেলে অনন্তকে বলেছেন মা জাহানারা আনোয়ার৷
২৫ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম