কচুরিপানা পাল্টে দিয়েছে বরিশালের নারীদের জীবন
নিউজ ডেস্ক : কচুরিপানা পাল্টে দিয়েছে বরিশালের নারীদের জীবনযাত্রা। মানুষের প্রচেষ্টায় কি না হয়? ছবির অ্যালবাম, নোটবুক, গহনা, ঝুড়ি, গিফট বক্স, গ্রিটিংস কার্ড, মালা এসব কি কচুরিপানা দিয়ে তৈরি করা যায়। কিন্তু সেটায় করেছেন বরিশালের নারীরা।
একসময় কচুরিপানা সিদ্ধ করে খেতেন এখন এই কচুরিপানা দিয়ে কাগজ বানিয়ে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী তৈরি করছেন। এটা তাদের জীবনে যেমন এনেছে উন্নতি, তেমনি তাদের সন্তানরাও হয়েছে শিক্ষিত।
প্রায় ২০ বছর ধরে সেখানকার কয়েকটি অঞ্চলের নারী কচুরিপানা থেকে বিভিন্ন পণ্য তৈরির কাজ করছেন। তাদের এই পণ্যগুলো প্রায় ২০টি দেশে রফতানি হচ্ছে।
শুরুতে ‘মেনোনাইট সেন্ট্রাল কমিটি' নামের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা বরিশাল অঞ্চলের নারীদের উন্নয়নে কাজ শুরু করে। এখন সেই কাজটা এগিয়ে নিচ্ছে এমসিসির তৈরি সংস্থা ‘প্রকৃতি'।
প্রকৃতির ডিজাইনার সুরাইয়া চৌধুরীর জানিয়েছেন, প্রকৃতির নারীরা কচুরিপানা থেকে প্রথমে কাগজ তৈরি করে।
পরে সেই কাগজ দিয়ে ছবির অ্যালবাম, নোটবুক, গহনা, ঝুড়ি, গিফট বক্স, গ্রিটিংস কার্ড, মালা ইত্যাদি তৈরি করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ফেয়ার ট্রেড কোম্পানি ‘টেন থাউজেন্ড ভিলেজেস' প্রকৃতির তৈরি পণ্য সবচেয়ে বেশি কেনে। এছাড়া জাপানের ‘পিপল ট্রি লিমিটেড', ইটালির ‘সিটিএম' সহ মোট ২০টি দেশে তাদের পণ্য রফতানি হয় বলে জানান সুরাইয়া।
তিনি বলেন, বরিশালের যেসব নারী এই কাজে যুক্ত তাদের জীবনে এসেছে বিশাল পরিবর্তন। আগে তারা কচুরিপানা সিদ্ধ করে খেতেন। এখন অনেকের সন্তান লেখাপড়া শিখে ডাক্তার হয়েছ। প্রায় ৫০ শতাংশ নারীর সন্তান গ্রাজুয়েট। আর ছোট ছেলেমেয়েরা সবাই স্কুলে যাচ্ছে। এখন প্রায় এক হাজারেরও বেশি নারীর প্রকৃতির হয়ে কাজ করছেন বলে জানান সুরাইয়া।
কচুরিপানাকে কাজে লাগানোর জন্য শুধু যে এলাকার নারীদের উন্নয়ন হচ্ছে তা নয়, এর মাধ্যমে পরিবেশও রক্ষা হচ্ছে। কারণ বরিশাল অঞ্চলে প্রচুর কচুরিপানার জন্য আগে লঞ্চ, নৌকা চলতে পারত না। তাছাড়া সেগুলো পোকামাকড়েরও আবাস হয়ে থাকত।
২৮ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম