সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৬:৩৯:৪০

পৌর নির্বাচন নিয়ে খালেদার সিদ্ধান্ত

পৌর নির্বাচন নিয়ে খালেদার সিদ্ধান্ত

ঢাকা : ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় পৌর নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্তের কথা জানালেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। পৌর নির্বাচনে বিএনপি শেষ পর্যন্ত থাকবে বলে জানান তিনি। যদিও তিনি অভিযোগ করেছেন, ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনের ওপর অশুভ প্রভাব বিস্তারের পরিকল্পনা করেছে। খালেদা জিয়া বলেন, জনতার ঐক্যবদ্ধ শক্তি স্বৈরশাসকের অসৎ উদ্দেশ্যকে ব্যর্থ করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। শেষ পর্যন্ত আমরা নির্বাচনী যুদ্ধে অবিচল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়া বলেন, দেশের ২শ’ ৩৪টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এখন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ নির্বাচনটি খুবই তড়িঘড়ি করে ঘোষণা করা হয়েছে। রেওয়াজ থাকা সত্বেও সময় স্বল্পতার অজুহাতে ইলেকশন কমিশন নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনার প্রয়োজন বোধ করেনি। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দলীয় প্রতীক স্থানীয় নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেয়া খুবই প্রয়োজন ছিল। তিনি বলেন, দেশবাসী দেখেছেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন বছরের পর বছর ধরে অনুষ্ঠিত না হলেও সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি। শাসক দলের সুবিধাজনক সময়ের জন্য তারা দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছে। আমরা পৌর নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় মাত্র ১০ দিন পিছিয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু খোঁড়া যুক্তি তুলে নির্বাচন কমিশন তা মানেনি। বেগম জিয়া বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির ব্যাপারেও কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে। পৌর নির্বাচনকেও প্রহসনে পরিণত করার সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। বিরোধী দলের অফিস ও প্রার্থীর ওপর হামলা, সমর্থকদের হত্যা, প্রচারণায় বাধা দেয়া, ভয়ভীতি প্রদর্শন, গ্রেপ্তার ও হুমকি চরম আকার ধারণ করেছে। বিরোধী দলের সমর্থক, ভোটার ও সম্ভাব্য এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে না যেতে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। সন্ত্রাসী ছাড়াও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর একশ্রেণির সদস্যকে এ অপকর্মে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, অথচ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। ভোটকেন্দ্র দখলের হুমকিও দেয়া হচ্ছে। শাসক দলের মন্ত্রী-এমপিরা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলছেন। এর কিছু কিছু খবর সংবাদ-মাধ্যমে প্রচারিত হলেও মামুলি কারণ দর্শানো নোটিস এবং লোক দেখানো দুঃখ প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন দায় সারছে। এরই মধ্যে ক্ষমতাসীনদের আচরণবিধি লঙ্ঘন রোধে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে তারা নিজেদের অসহায়ত্ব ও অক্ষমতাই প্রকাশ করেছে। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, চাপ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অনেক জায়গায় বিরোধীদলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেয়া হয়নি। প্রত্যাহারে বাধ্য করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় ৭ জন মেয়র ও ১শ’ ৩২ জন কাউন্সিলর প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। ভোটের দিন সকাল ৯টার মধ্যেই ভোট শেষ হয়ে যাবে এমন কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত। এতে সবার সামনে পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, পৌর নির্বাচনকে কী ধরনের প্রহসনে পরিণত করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। খালেদা জিয়া বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি করেছি। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এ দাবি নাকচ করে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী মোতায়েনের মতো পরিস্থিতি নাকি সৃষ্টি হয়নি। আমরা জানি না, আর কত ভয়াবহ অবস্থা হলে নির্বাচন কমিশন সেনা মোতায়েনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করবে। তিনি বলেন, আমরা জানি না, নির্বাচনী দায়িত্বে সেনাবাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের এতো অনীহার কারণ কি? আমাদের প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। ২৮ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে