সোমবার, ০৬ এপ্রিল, ২০২০, ১০:০৮:৫৩

ক্ষমা চাইলেন গার্মেন্টস মালিক হেলেনা জাহাঙ্গীর

ক্ষমা চাইলেন গার্মেন্টস মালিক হেলেনা জাহাঙ্গীর

নিউজ ডেস্ক : সারাদেশে ‘লকডাউন’ অবস্থায় ফেসবুক লাইভে কারখানা চালুর পক্ষে কথা বলে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। এর একদিন পর, গতকাল রোববার আরেক লাইভে এসে আগের বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চান তিনি। 

শনিবার রাত ৮টার দিকে ফেইসবুক লাইভে এসে হেলেনা বলেন, “আমাদের অনেক অর্ডার এখনও হাতে রয়ে গেছে, আমরা ইচ্ছা করলেই গার্মেন্টস বন্ধ করতে পারি না। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক জনগণ বলছে, আমরা করোনায় ম'রতে চাই, আমরা না খেয়ে ম'রতে চাই না। আমরা ক্ষুধার্ত অবস্থায় ম'রতে চাই না, আমরা ভাইরাসে ম'রতে চাই।

“আপনারা যারা মালিকদের নিয়ে তর্কবিতর্ক করেন- এই কথাগুলো কি আপনারা শোনেন না? আপনাদের তো আসলেই শোনা উচিত যে, আসলে জনগণ কী বলছে। জনগণের খাবারটা কে দেবে? আপনারা যারা বড় বড় কথা বলেন সোশ্যাল মিডিয়াতে, আপনারা কি জনগণের খাবার দিচ্ছেন? আপনারা ১০টা শ্রমিকের খাবার দেবেন না, একশটা শ্রমিকের বেতন নিশ্চয় দেবেন না। সো, আপনারা বড় কথা বলতে আসবেন না। যারা শ্রমিক পালে, যারা গার্মেন্টস চালায়, তারাই শ্রমিকদের বেতন দেবে, তারাই ভাতা দেবে।”

শনিবার তার এই লাইভের পর পরই তুমুল সমালোচনার ঝড় ওঠে। গার্মেন্টস সেক্টরের নেতারাও বিরূপ সমালোচনা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার আবার ফেসবুক লাইভে আসেন তিনি।

এবার তিনি বলেন, “গতকালের লাইভ নিয়ে যারা আমার সমালোচনায় তো'লপাড় শুরু করেছেন তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে হাতজোড় করে অনুরোধ করছি। হয়ত আপনাদের বোঝার ভুল, অথবা আমার বলার ভুল। ভুল দিয়েই মানুষের শুরু হয়। আমরা ভুল করি বলেই আমরা মানুষ। আমার কথাগুলো ছিল ওভারঅল সিচুয়েশন নিয়ে, আমি শ্রমিক, মালিক, সরকার কিংবা অন্য কারো পক্ষে বলিনি।

“শ্রমিকদের ছুটি দিলাম, তাদের বলা হয়েছে যার যার অবস্থানে থাকতে। কিন্তু তারা চলে গেছেন গ্রামে। গ্রামে গিয়ে তারা যদি একটা দিন অপেক্ষা করতেন তাহলে এখনকার সিদ্ধান্তটা জেনে যেতেন। কিন্তু তারা সেখানেও থাকলেন না আবার চলে আসতে শুরু করলেন। একদিন পরে আসলে আমরা কখনও চাকরি খেতাম না।”

এদিকে, শ্রমিকদের বেতন দিয়েছেন বলে ফেইসবুক লাইভে জানালেও গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে হেলেনা বলেন, “স্যালারি দেইনি। তবে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে হেলেনা বলেন, “আমার তিনটি কারখানা রয়েছে। আমি সেগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগে যেহেতু বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়নি তাই খোলা রাখার পক্ষে বলেছিলাম। এটা নিয়ে অনেকেই আমাকে ভুল বুঝেছেন। সরকার যতদিন চাইবে ততদিন কারখানা বন্ধ থাকবে। যে কোনো পরিস্থিতিতে সরকার কারখানা বন্ধের নির্দেশ না দিলে মালিকরা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে কারখানা বন্ধ করলে তা বায়ার বা বিদেশি ব্র্যান্ডগুলো মেনে নিতে চান না। সে কারণে আমরা কারখানা বন্ধ রাখার বিষয়ে আগে একমত হতে পারিনি। এখন যেহেতু বিজিএমইএ বলেছে এখন কারখানা বন্ধ থাকবে।”

নারায়ণগঞ্জের অন্তত তিনটি কারখানার মালিক হেলেনা জাহাঙ্গীর বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ছাড়াও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সদস্য। হেলেনা জাহাঙ্গীর জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে থাকেন। মাঝে মাঝেই তাকে ফেইসবুক লাইভে এসে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে দেখা যায়। তবে এর আগেও ফেইসবুক লাইভে ‘ঝামেলার জন্য’ পরে ক্ষমা চেয়েছেন এই নারী উদ্যোক্তা।-আমাদেরসময়.কম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে