মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০২০, ০১:৫২:১১

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলেন ব্যারিস্টার সুমন

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলেন ব্যারিস্টার সুমন

নিউজ ডেস্ক : স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলেন ব্যারিস্টার সাইয়েদুল হক সুমন। তিনি বলেন, যে লোককে জাতীয় কমিটির প্রধান করা হয়েছে, অথচ তিনি প্রকাশ্যে বলছেন তিনি নাকি কিছুইও জানেন না। তাকে নাকি কেউই কিছু জানায় জনা। এমন লোককে এরপরে পরেও কীভাবে মন্ত্রী হিসেবে রাখা হয়?

শুক্রবার এক ফেসবুক লাইভে এসে তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সাম্প্রতিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। অবশ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কর্মকাণ্ড এরইমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক বিত'র্কের জন্ম দিয়েছে। যিনি পিপিই কে ২০ বার পিপিপি বলেছেন সংবাদ সম্মেলনে। বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি মো'কাবেলায় ব্যর্থতার কারণে প্রিয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন এফডিএসআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন-ও।

দেশে করোনাভাইরাস মো'কাবেলায় দূরদর্শী পরিকল্পনা, আন্ত মন্ত্রণালয় ও আন্ত বিভাগীয় সমন্বয়, অধীনদের সঙ্গে যোগাযোগ, সমন্বয় ও তাঁদের নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল নেতৃত্ব দিতে পারছেন না। এমনকি শুরু থেকে কোনো কিছুর অভাব নেই, সব প্রস্তুতি আছে—কথায় কথায় এসব বলে বাস্তব পরিস্থিতি গোপন করেছেন। এমন গুরুতর অ'ভিযোগ উঠেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে।

ব্যারিস্টার সুমন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি নিশ্চই দেখেছেন স্বাস্থমন্ত্রী সকলকে সচেতন করতে গিয়ে ২০ জনের একটি দল নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে হাজির হন। যিনি নিজমেই সচেতন নন, তিনি কীভাবে মানুষকে সচেতন করবেন? 

ব্যারিসাটার সুমন ক্ষো'ভ প্রকাশ করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উনি হলেন সেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী যিনি নব্বই হাজার লোক ডেঙ্গু আক্রা'ন্ত হলেও পরিবার নিয়ে থাইল্যান্ডে বেড়াতে গিয়েছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি শুধু একটা কথাই বলতে চাই, একটি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী লকডাউনে সামান্য সি বিচে গিয়েছিলেন, তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর তার ছেলে ও একজন সচিবের সিন্ডিকেটের প্রসঙ্গ টেনে সুমন বলেন, মাননীয় নেত্রী আমি একটা কথা বলতে চাই, আপনি হয়তো ফেসবুকে দেখেছেন- মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছেলে এবং মাননীয় স্বাস্থ্য সচিব ও মহাপরিচালক মিলে একটা সিন্ডিকেটের কথা বলা হয়েছে। যারা ভ'য়ানক দুর্নীতির সাথে জড়িত। N-90 যে মাস্কের কথা বলা হয় এবং যে মাস্ক আমদানি করতে না পারার কারণে ডাক্তাররা হুমকির সম্মুখীন এ বিষয়ে এই সিন্ডিকেটের প্রতা দুর্নীতির অ'ভিযোগ রয়েছে।

মাননীয় নেত্রী আমি আপনাকে ধন্যবাদ জানাই, আপনি যেভাবে কষ্ট করে যাচ্ছেন একজন বা দু-একটা মন্ত্রণালয়ের জন্য ব্যার্থতার জন্য আপনাকে এত ভালো ভালো কাজ গুলা নষ্ট হয়ে যেতে পারে না। মাননীয় মন্ত্রী আমি বলছি না যে তাদেরকে বদলে অন্য আরেকজনকে দিলেই যে তাড়াতাড়ি দিনের ভিতরে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এমন একটি ক্রাইসিস মুহূর্তে এমন একজন ব্যর্থ লোককে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রাখার কোন সুযোগ নেই।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি খোঁজ নিয়ে দেখুন এবং মানুষকে জিজ্ঞেস করেন যে, মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ব্যাপারে কোন ধরনের কনফিডেন্স আছে কিনা। দেখবেন বেশিরভাগ লোকই তার ব্যাপারে কোনো কনফিডেন্স প্রকাশ করবে না। তাই আজকে আমরা সুস্থ আছি এবং করোনা ভাইরাস আক্রা'ন্ত হয়ে বাংলাদেশ থেকে যারা বিদায় নিবে তারা এমন একজন মন্ত্রী দেখতে চায় না। আপনার চাইলে আপনি পরিবর্তন করে ফেলতে পারেন।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, প্রয়োজন হলে তাকে অন্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে দিয়ে দিন। যে মন্ত্রী ঠিকমতো ক্যামেরার সামনে হিসেবে বলতে পারে না যে এই পর্যন্ত কতজন করোনা আক্রা'ন্ত হয়েছে। তাকে কেন মন্ত্রনালয়ে রাখতে হবে। একই সাথে তিনি বলেন যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঠিকমত পিপিই বলতে পারেনা বরং বলে পিপিপি এমন স্বাস্থ্যমন্ত্রী অবশ্যই স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় থাকা উচিত না। তিনি বলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রীর মাথায় পিপিই ‘পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট’ এই বিষয়টা নেই বরং তার মাথার মধ্যে আছে বিজনেস টার্মস পিপিপি অর্থাৎ ‘প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ’। অর্থাৎ তার মাথার মধ্যে ব্যবসার চিন্তাই শুধুমাত্র রয়েছে! এমন একজন লোক অবশ্যই স্বাস্থ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারে না।

আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবারও করজোড়ে আবেদন করছি এমন একটি ক্রাইসিস মুহূর্তে এমন একজন লোককে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় না রেখে তাকে পরিবর্তন করে অন্য মন্ত্রণালয় দিয়ে দিন। একই সাথে ব্যারিস্টার সুমন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং বলেন গণমানুষের চাহিদা অনুসারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে পরিবর্তন করার জোর আবেদন জানান।

প্রতিদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলেছেন, সব কিছু প্রস্তুত আছে, কোনো কিছুর অভাব নেই। তাঁদের কেউ কেউ মন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও তিনি বুঝতে চাননি। এ কারণে মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। যখন চিকিৎসকরা ব্যক্তিগত নিরাপত্তা উপকরণ (পিপিই) পাচ্ছিলেন না বা ব্যাপকভাবে সংগ্রহও করা যায়নি তখন মন্ত্রী বারবারই বলছিলেন পিপিইর অভাব নেই। যখন হাসপাতালের কিছুই প্রস্তুত ছিল না তখনো তিনি বলছেন সব প্রস্তুত।

ওই কর্মকর্তাদের অভিযোগ, মন্ত্রী নিজেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের মধ্যে এক ধরনের বিভাজন তৈরি করেছেন। আর বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ শুরু থেকেই পরীক্ষা বাড়ানোর কথা বললেও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কারণে আইইডিসিআর তা করতে পারেনি। এ নিয়ে ভেতরে ভেতরে আলোচনাও আছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে