রাজনীতিই কামরানের ধ্যান-জ্ঞান
শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট থেকে : বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। সিলেট পৌরসভার কমিশনার থেকে চেয়ারম্যান। পরে সিটি করপোরেশনের মেয়র। জনপ্রতিনিধি হিসেবে যুবক কামরান শুরু করেছিলেন পথচলা। বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর জনপ্রতিনিধির তালিকা থেকে বাদ পড়ে তার নাম। নির্বাচনে পরাজিত হলেও এখন সিলেট নগরীর মানুষ তাকে চেনেন মেয়র হিসেবে।
সব পরিচয় ছাপিয়ে এখনো তিনি ‘মেয়র সাব’ হিসেবেই সিলেটের মানুষের কাছে বেশি সমাদৃত। নগর ভবনের দায়িত্বে না থাকলেও সুখে-দুঃখে মানুষ ছুটে যান কামরানের কাছে। কামরানও চেষ্টা করেন সাধ্যমতো সহযোগিতার। কামরানের রাজনীতির গণ্ডি ছিল সিলেট মহানগরের ভিতরে সীমাবদ্ধ। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দীর্ঘদিন থেকে।
বিভিন্ন ইস্যুতে নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করে রাজপথ ‘গরম’ রাখতে তার বিকল্প নেই দলে। মহানগরের কামরান এবার চষে বেড়িয়েছেন গোটা সিলেট বিভাগ। গত পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের সমর্থনে তিনি ছুটে গেছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। বিভাগের প্রায় সব পৌরসভায় কামরান আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। ভোটারদের কাছে গিয়ে তুলে ধরেছেন বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি।
সুবক্তা কামরানের প্রচারণায় মন গলেছে ভোটারদের। অভ্যন্তরীণ কোন্দলে যেসব পৌরসভায় দলীয় নেতা-কর্মীরা প্রচারণা থেকে দূরে ছিলেন, কামরানের উপস্থিতিতে তারাও নেমেছেন মাঠে। সব মিলিয়ে গত পৌরসভা নির্বাচনে সিলেট বিভাগের আওয়ামী লীগের ভোট বিপ্লবে কামরানের বড় ভূমিকা ছিল বলে মনে করছেন দলীয় নেতা-কর্মী ও প্রার্থীরা।
পৌরসভা নির্বাচনের আগে গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও কামরান ছুটে গিয়েছিলেন দল সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে। বিভাগের যেসব উপজেলায় তিনি প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন সেসব স্থানে নির্বাচনী ফলও ভালো হয়েছে। সিলেট মহানগরীর নেতা হয়েও গোটা বিভাগে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়াকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।
শুধু নির্বাচন নয়, সিলেট বিভাগের কোনো জেলা ও উপজেলায় দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেলেই সেখানে ছুটে যান কামরান। দলীয় নেতা-কর্মীদের দৃষ্টিতে কামরান হচ্ছেন সৌভাগ্যবান রাজনীতিবিদ। গণমানুষের দোয়া সব সময় সঙ্গে থাকে বলেই একাধিকবার জঙ্গি হামলার শিকার হয়েও প্রাণে বেঁচে গেছেন তিনি।
বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তাকে লক্ষ্য করে গুলশান সেন্টার ও টিলাগড়ে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। তিনি অক্ষত থেকে যান। এ ছাড়া গত বছর ৫ জানুয়ারি-পরবর্তী সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় পাঠানটুলায় তার গাড়ি লক্ষ্য করে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটালেও তিনি ভাগ্যক্রমে রক্ষা পান। কামরানের পথচলায় বার বার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলেও কখনো থেমে যাননি।
সব বাধা ও হুমকি উপেক্ষা করে তিনি সরব রয়েছেন রাজনীতির মাঠে। সাবেক এ নগরপিতার ধ্যানজ্ঞান এখন শুধুই রাজনীতি। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মুজিব আদর্শের একজন সৈনিক হিসেবে কাজ করে যাওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে বদরউদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ‘দল ও নেতা-কর্মীদের সুখ-দুঃখ আমাকে আন্দোলিত করে। তাই যখনই সুযোগ পাই দলের জন্য, মানুষের জন্য সিলেটের আনাচে-কানাচে ছুটে যাই। গত পৌরসভা নির্বাচনে অসুস্থ অবস্থায় দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নির্বাচনে আমরা ভালো করেছি।’-বিডি প্রতিদিন
৫ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ/এসএস/এসবি