রবিবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২১, ১২:১০:১৭

মন্ত্রীদের আমলনামা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

মন্ত্রীদের আমলনামা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

বর্তমান সরকারের প্রথম দুই বছরে মন্ত্রিসভা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দফতর বদল, পুনর্বণ্টন, একজন প্রতিমন্ত্রীকে পদোন্নতি, নতুন দুই প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ—এমন টুকটাক সিদ্ধান্তেই সীমিত থেকেছেন। গত ৭ জানুয়ারি সরকারের দুই বছর পর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের কাজের মূল্যায়ন বিশেষভাবে দেখতে শুরু করছেন সরকারপ্রধান। প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক উভয় ক্ষেত্রের দায়িত্বশীল সূত্রে এমন তথ্য মিলেছে।

সরকারের দুই বছর পূর্তি শেষে মন্ত্রিসভার কোন সদস্য কোন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কত দিন দায়িত্ব পালন করছেন, কাদের দফতর বদল হয়েছে, কাদের দফতর পুনর্বণ্টন হয়েছে, কে কোন মেয়াদ থেকে মন্ত্রিসভায় আছেন, কারা টানা তিন মেয়াদে সরকারপ্রধানের টিমে আছেন, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা মন্ত্রণালয় কেমন চালাচ্ছেন—এসব বিষয়ে একাধিক উৎস থেকে খবর সংগ্রহ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিজের টিম মেম্বারদের বিষয়ে কিছু সাধারণ খবর নিয়মিত নেন প্রধানমন্ত্রী। তবে দুই বছর শেষে বিশেষভাবে খোঁজ নেওয়ার খবরে অনেকে নড়েচড়ে বসেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভার খোঁজখবর কেন, কী কারণে নেওয়া হচ্ছে, সেটা প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কেউ জানেন না।

টানা তিন মেয়াদের সরকারের তৃতীয় পর্বের দ্বিতীয় বছর পার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত এক যুগে সরকারপ্রধান হিসেবে আওয়ামী লীগ সভাপতি নিজে একটানা দায়িত্ব পালন করছেন। যখন নতুন সরকার গঠন করেছেন, তখন তার টিমমেম্বার পরিবর্তন করেছেন। তবে সরকার গঠনের পর বিশেষ বড় ধরনের কারণ ছাড়া মন্ত্রিসভা থেকে কাউকে বাদ দেননি। এবারের মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ বেশি হওয়ায় সার্বিক মূল্যায়নের মাধ্যমে বড় রদবদল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সরকার, দল ও প্রশাসন—সব দিকের দায়িত্বশীলরা ধারণা করছিলেন, এক বছর পর মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল প্রয়োজন হবে। প্রথম বছর পূর্ণ হওয়ার পর সে রকম আলোচনাও ছিল; কিন্তু এই দুই বছরের মধ্যে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ইমরান আহমদকে প্রতিমন্ত্রী থেকে মন্ত্রী করা হয়েছে। বেগম ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরাকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই সময়ে কয়েকজন পূর্ণমন্ত্রীর যোগ ও বেশ কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর দফতর পুনর্বণ্টনের জোর আলোচনা ছিল; কিন্তু আর কিছু হয়নি। শুধু পরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মারা গেলে শূন্যপদ পূরণ করা হয়।

সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের একটি প্রশাসনিক সূত্র জানায়, সরকার গঠনের পর সরকারপ্রধান তার টিম মেম্বারদের কাজের মূল্যায়নের জন্য অন্তত দুই বছর সময় নেন। প্রধানমন্ত্রী তাই স্বাভাবিকভাবেই খোঁজখবর নিচ্ছেন। মন্ত্রিসভার একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মন্ত্রিসভায় যত হেভিওয়েটই থাকুন, প্রধানমন্ত্রীকেই সব দিক দেখতে হয়। কিন্তু এবার একেবারে নতুনদের নিয়ে যাত্রা শুরু করায় প্রধানমন্ত্রীকে অনেক বেশি ‘লোড’ নিতে হচ্ছে। সে বিচারে তিনি কিছু পরিবর্তনের কথা ভাবতে পারেন। তবে কেউ বাদ পড়ার আশঙ্কা কম। কয়েকজন পূর্ণমন্ত্রী যোগ হওয়ার সঙ্গে বিদ্যমানদের দফতর বদল ও পুনর্বণ্টনের সম্ভাবনা রয়েছে।

মন্ত্রিসভার রদবদলের দাফতরিক বিষয়গুলো দেখে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বিধি অনুবিভাগ। এই অনুবিভাগের প্রধান ও অতিরিক্ত সচিব সোলতান আহ্মদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। কোনো সিদ্ধান্ত থাকলে তিনি মন্ত্রিপরিষদসচিবকে নির্দেশ দেন। এরপর আমরা জানতে পারি। এখন পর্যন্ত এসংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা নেই।’

শেখ হাসিনার টানা তৃতীয় মেয়াদের সরকার গঠনের ক্ষেত্রে চমক বর্তমান মন্ত্রিসভা। সব রাজনৈতিক নেতা ও বিশ্লেষকের হিসাব-নিকাশ উল্টে দিয়ে বেশির ভাগ নতুন সদস্য নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করেন প্রধানমন্ত্রী। জোটে নির্বাচন করেও সরকারে শুধু আওয়ামী লীগ আছে। ৪৮ সদস্যের মন্ত্রিসভায় নতুন মুখের সংখ্যাই অর্ধেকের বেশি।-কালের কণ্ঠ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে