পুরি বিক্রেতার তিন জমজ মেয়ে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়
নারায়ণগঞ্জ: জেলার আড়াইহাজার বাজারের পুরি বিক্রেতা জিয়াউর রহমানের অভাব-অনটনের সংসার। দরিদ্র পরিবারগুলোতে মেয়ে একটু বড় হলেই বিয়ে দেয়ার হিড়িক পড়ে যায়। তবে সংসারে অভাব থাকার পরও জিয়াউর-হোসনেয়ারা তাদের তিন জমজ মেয়ের পড়ালেখা বন্ধ করে দেন নি। মেধাবী মেয়েদের কি এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে দেয়া যায়?
জিয়াউরের তিন মেয়ে সাবেরা, সাকেরা ও জাকেরা এ বছর আড়াইহাজার পাইলট স্কুল থেকে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।
বাবা-মার ইচ্ছে মেয়েদের অনেক বড় করবে, মানুষের মতো মানুষ করবে। সাবেরা, সাকেরা ও জাকেরা বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। পিএসসির পর এবার তারা জেএসসিতেও অসাধারণ ফল করেছে। তাই তো দরিদ্র জিয়া-হোসনেয়ারার সংসারে এখন ঈদ আনন্দ।
পঞ্চম শ্রেণীর জেএসসিতেও ধারাবাহিকভাবে ভালো রেজাল্ট করায় খুশি স্কুল কর্তৃপক্ষ, শিক্ষকবৃন্দ ও অভিভাবকরা।
তিন যমজ বোনের মধ্যে বড় সাবেরা ডাক্তার হতে চায়। আর মেজ বোন সাকেরা হতে চায় ইঞ্জিনিয়ার। আর সবার ছোট জাকেরা বড় বোনের মতো সেও হতে চায় ডাক্তার। সাবেরা তার স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে বলে, ‘আমি পড়াশোনা শেষ করে ডাক্তার হতে চাই। কেননা আমাদের দেশের মানুষ গরীব। তারা রোগ-বালাই হলে সঠিকভাবে চিকিৎসা করাতে পারে না। ডাক্তার হয়ে আমি গরীব মানুষের সেবা করবো।'
মেঝ বোন সাকেরা রহমান বলেন, 'আমি পড়াশোনা করে মানুষের মতো মানুষ হতে চাই। তবে একটা লক্ষ্য তো আছেই। আমি উচ্চতর পড়াশোনা করে ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই।'
আর ছোট বোন জাকেরা রহমানও বড় বোনের মত ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছাটাই প্রকাশ করলো।
তিন কন্যা সন্তানের গর্বিত বাবা জিয়াউর রহমান ও মা হোসনে আরা বলেন, 'আমরা গরীব মানুষ; অনেক কষ্টে এ পর্যন্ত মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে দিনে দিনে পড়াশোনার খরচ যেভাবে বাড়ছে তাতে ওদের পড়াশোনা কতদূর চালিয়ে নিতে পারবো বুঝতে পারছি না। তাই সকলের কাছে দোয়া চাই, ওরা তিন বোন যেন মানুষের মতো মানুষ হতে পারে।'
৬ জানুয়ারি ২০১৬/এমটি নিউজ২৪ডটকম/জুবায়ের/রাসেল
�