ইউপি নির্বাচনেও নিরঙ্কুশ জয় চায় আ.লীগ
রফিকুল ইসলাম রনি : পৌরসভার পর এবার নৌকা ও ধানের শীষের লড়াই হবে ইউনিয়ন পরিষদে। গত বছর পৌরসভা নির্বাচনে প্রত্যাশিত জয় পেয়ে ফুরফুরে মেজাজে এ বছর ইউনিয়ন পরিষদের দিকে দৃষ্টি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আগামী মার্চে অনুষ্ঠেয় স্থানীয় সরকারের প্রাথমিক স্তর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনেও নিরঙ্কুশ জয় চায় শাসক দল।
এ জন্য এখন থেকেই সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটিতেই একক চেয়ারম্যান প্রার্থী নিশ্চিতে কাজ শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারকরা। বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে সম্ভাব্য ইউপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থী ঠেকাতেও গ্রহণ করা হবে কৌশলী ভূমিকা।
দলীয় সূত্রমতে, পৌরসভা নির্বাচনের মতো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও বিএনপি অংশগ্রহণ করবে— এমনটি প্রত্যাশা করে আওয়ামী লীগ। শাসক দলের টার্গেট এ নির্বাচনে সর্বোচ্চসংখ্যক দলীয় প্রার্থীর জয়। জানা গেছে, সদ্যসমাপ্ত পৌরসভা নির্বাচনে বেশি সময় হাতে না থাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়নে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়। নানা পদক্ষেপ ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরও প্রায় ৬৯টি পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে ছিল। যে কারণে, অনেক পৌরসভায় দলের মেয়র প্রার্থীদের জয়লাভের সম্ভাবনা থাকলেও সেখানে ভোট ভাগ হওয়ায় বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা বিজয়ী হন।
পৌর নির্বাচনের সেই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে ইউনিয়ন পরিষদে একক প্রার্থী নিশ্চিত করতে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের আবেদনপত্র জমা নেওয়ার সময় তাদের কাছ থেকে একই সঙ্গে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদনও সংগ্রহ করা হবে। চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নাকি বিভাগীয়ভাবে মনোনয়ন বোর্ড থাকবে, সেসব নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে ৯ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে।
সূত্র জানায়, প্রার্থীদের সাক্ষাৎ শেষে এবং মাঠপর্যায়ের গোপন জরিপ মিলিয়ে ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতাদের প্রার্থী ঘোষণা করা হবে এবং প্রার্থীদের মধ্যে ‘নৌকা’ প্রতীক বরাদ্দের ব্যাপারে দলীয় সভাপতির স্বাক্ষরিত একটি চিঠিও দেওয়া হবে চূড়ান্ত প্রার্থীদের হাতে। ওই চিঠি নিয়েই দল মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় মনোনয়নপত্র দাখিল করবেন।
এ প্রসঙ্গে দুজন বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান পদে যোগ্য প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় এমপি ও জেলা নেতারা যাতে দলীয় স্বার্থ বাদ দিয়ে পরিবার বলয় সৃষ্টি করতে না পারেন সে দিকে কেন্দ্র থেকে দৃষ্টি রাখা হবে। একক প্রার্থী নিশ্চিত করাই আমাদের এখন প্রধান লক্ষ্য। মন্ত্রী-এমপিদের পরিবার-পরিজন নয়, বরং দলের ত্যাগী-পরীক্ষিত ও ইউনিয়নের সর্বজনগ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে।
বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, স্থানীয় এমপি ও তৃণমূল নেতারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সম্ভাব্য তালিকা জমা দেবেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে। তারা একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং বিকল্প হিসেবে ক্রমানুসারে কয়েকজন প্রার্থীর নাম সুপারিশ করে তালিকা জমা দেবেন। এ তালিকা এবং মাঠ পর্যায়ের জরিপ মিলিয়ে একক প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হবে।
তবে যেসব ইউনিয়ন পরিষদে দলীয় চেয়ারম্যান রয়েছেন, এবারও তাদের প্রাধান্য দেওয়া হতে পারে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে আমাদের হাতে অনেক সময় আছে। তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে সঠিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে নিরঙ্কুশভাবে বিজয় অর্জন করব। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছি। -বিডি প্রতিদিন
৭ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ/এসএস/এসবি