বৃহস্পতিবার, ০৭ জানুয়ারী, ২০১৬, ০২:৫৩:৪৭

'বস্তিশিশুদের' জন্য মারিয়ার প্রেম, অত:পর বিশ্ব রেকর্ড

'বস্তিশিশুদের' জন্য মারিয়ার প্রেম, অত:পর বিশ্ব রেকর্ড

নিউজ ডেস্ক : দুবাইয়ে বসবাসকারী স্পেনিশ নাগরিক মারিয়া কনসেকাও। দুঃসাহসী ভ্রমণপ্রিয় অথচ দৌড় যার চক্ষুশূল এই নারী-ই ম্যারাথন দৌড়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকডর্স গড়লেন! তাও একটি নয়, তিন তিনটি বিশ্ব রেকর্ড। গিনেস ওয়ার্ল্ড সম্প্রতি তার এ কীর্তির স্বীকৃতিও দিয়েছে। অবশ্য এ রেকর্ড গড়ার পেছনে মানবিক একটি উদ্যোগ মারিয়াকে অনুপ্রাণিত করেছে। তা হলো ঢাকার বস্তির শিশুদের জন্য কিছু করার তাড়া থেকে তার প্রতিষ্ঠিত 'মারিয়া ক্রিস্টিনা ফাউন্ডেশন'র জন্য তহবিল সংগ্রহ। এ লক্ষ্যে আরো দুই সহকর্মীসহ '৭৭৭ চ্যালেঞ্জ' নামে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন তিনি। মারিয়ার চ্যালেঞ্জটি ছিল মাত্র ৭ দিনের মধ্যে ৭টি মহাদেশে ৭টি ম্যারাথন দৌড় সম্পন্ন করা। সাতটি ম্যারাথন সম্পন্ন করতে গিয়েই তারা তিন তিনটি গিনেস রেকর্ড গড়েন। মারিয়ার চ্যালেঞ্জ শুরু হয় গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন থেকে। এরপর ম্যারাথন দৌড় সম্পন্ন করেন আবু ধাবি, প্যারিস, তিউনিশ, নিউইয়র্ক, চিলির পুনতা এরিনাসে। সর্বশেষ অ্যান্টার্কটিকার কিং জর্জ আইল্যান্ডে ম্যারাথনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় মারিয়ার '৭৭৭ চ্যালেঞ্জ'। যদিও অবশ্য ৭ দিনের মধ্যে ৭টি ম্যারাথন সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। কারণ খারাপ আবহাওয়ার কারণে তাদের এ চ্যালেঞ্জ চারদিন বিলম্ব হয়। তা সত্ত্বেও ৭টি অফিসিয়াল ম্যারাথন সম্পন্ন করতে মারিয়ার মোট সময় লাগে ১০ দিন ২৩ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। এর আগে এই রেকর্ড গড়তে সময় লেগেছিল ৪৮ দিন। '৭৭৭ চ্যালেঞ্জ' সফলভাবে সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে মারিয়া যে তিনটি রেকর্ড গড়েছেন সেগুলো হলো ১. প্রতিটি মহাদেশে অফিসিয়াল ম্যারাথন সম্পন্নকারী সবচেয়ে দ্রুততম নারী, ২. প্রতিটি মহাদেশে একটি ম্যারাথন ও আল্ট্রাম্যারাথন সম্পন্নকারী দ্রুততম নারী এবং ৩. সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে তিনটি মহাদেশে ম্যারাথন ও আল্ট্রাম্যারাথন সম্পন্নকারী নারী। এদিকে, 'মারিয়া ক্রিস্টিনা ফাউন্ডেশন' প্রতিষ্ঠার পেছনে একটি ছোট্ট গল্প আছে। মারিয়া একদা এমিরেটস এয়ারলাইন্সে বিমানসেবিকা হিসেবে কাজ করতেন। যাহোক, একবার একই এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে যাওয়ার সময় ঢাকায় ২৪ ঘন্টার জন্য যাত্রাবিরতি করতে হয় তাকে। এ সুযোগে তিনি রাজধানী ঢাকা ঘুরে বেড়ান। তখনই কঠিন এক বাস্তবতার মুখোমুখি হন তিনি। ঢাকার বস্তির শিশুদের দারিদ্রপীড়িত জীবন ব্যথাভরা হৃদয়ে প্রত্যক্ষ করেন। এ অভিজ্ঞতা থেকেই তাদের জন্য কিছু করার মানবিক তাড়না থেকে ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ফাউন্ডেশনটি। মারিয়ার ফাউন্ডেশনের আওতায় ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত একটি স্কুলে বর্তমানে কিন্ডারগার্টেন থেকে ১২ গ্রেড পর্যন্ত প্রায় দু'শর মতো বস্তির শিশুর পড়াশোনা করছে। স্কুলটির বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী সফলভাবে পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে দুবাইয়ে এমিরেটসে চাকরিও করছে। সূত্র : খালিজ টাইমস ও বিডি প্রতিদিন ৭ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে