মাওলানা এবিএম শরিফুল ইসলাম। বিশিষ্ট বক্তা মীর হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদীর ছাত্র হিসেবে নিজেই যুক্তিবাদী উপাধি ব্যবহার করেন। নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার বায়তুল মামুর জামে মসজিদে প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর ধরে ইমামতি করেন তিনি। কিন্তু তার ভিজিটিং কার্ড তৈরি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জামে মসজিদের খতিব হিসেবে।
সেখানে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন আন্তর্জাতিক ইসলামী চিন্তাবিদ পরিচয়ে। দাবি করেন ভারত, দুবাই, সৌদি আরবসহ আরও কয়েকটি দেশে ইসলামী চিন্তাবিদ হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েও বক্তৃতাও করেছেন তিনি। কিন্তু এতকিছুর আড়ালে তিনি মূলত একজন প্রতারক। এমনটি বলছে ডিএমপির তেজগাঁও থানা পুলিশ।
পুলিশ বলছে, নিজেকে মাওলানা মীর হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদীর পিএস পরিচয় দিয়ে মাহফিলে প্রধান বক্তা হিসেবে মাওলানা সাহেবের উপস্থিতি নিশ্চিত আশ্বাস দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এই প্রতারক। গোপন মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করে বিভিন্ন বিকাশ নম্বরে এসব টাকা নিতেন তিনি।
মাহফিলের নির্ধারিত দিনে আয়োজকরা যখন প্রধান বক্তা মীর হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদীর অপেক্ষায় থাকেন তখন মাহফিলে পৌঁছনোর নামে তখন তিনি টালবাহানা শুরু করতেন। সর্বশেষ চলতি মাসে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকায় এক মাহফিল আয়োজন এর কাছ থেকে এভাবে দুই ধাপে ৩০ হাজার টাকা নিয়েছেন তিনি।
মাহফিলে প্রধান অতিথির আসার অপেক্ষায় থেকে থেকে এক পর্যায়ে মাহফিলে উপস্থিত লোকজন মাহফিলের প্যান্ডেলও ভেঙে ফেলেন। এ ঘটনায় মাহফিল আয়োজন আল রাসেল নামে এক ভুক্তভোগী বাদী হয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ১৫৩ (১৩ মার্চ )।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি হারুন-অর-রশিদ বলেন, বেশ কয়েকটি মাহফিলে মীর হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদীর সঙ্গে এই প্রতারক পিএস হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এই প্রেক্ষিতে মাহফিল আয়োজকরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
পাশাপাশি আমরা আরও তথ্য পেয়েছি মাহফিলের নির্ধারিত দিন প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত হওয়ার জন্য মীর হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদীকে যে পরিমাণ ফি দেওয়া হতো একইদিনে অন্য কোন মাহফিলের এর চেয়ে বেশি ফির অফার পেলে তিনি বিভিন্ন অজুহাতে পূর্বনির্ধারিত মাহফিলের না গিয়ে যারা বেশি টাকা দিয়েছেন সে মাহফিলে উপস্থিত হতেন।
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে গতকাল রাতে নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানাধীন মদনগঞ্জ লক্ষারচর নমুনাবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় আসামি মাওলানা এবিএম শরিফুল ইসলাম।
ডিসি বলেন, প্রতারক গ্রেফতারের পর থেকেই মাওলানা মীর হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদী বিভিন্ন মাধ্যমে অভিযোগকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পুলিশ মনে করে এই প্রতারকের সঙ্গে মাওলানা মীর হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদীরও যোগাযোগ রয়েছে। তার বিষয়েও খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।