সোমবার, ০৩ মে, ২০২১, ০৭:৩৮:৩৭

বাস স্টপেজগুলো এখন মাইক্রো স্টপেজ!

বাস স্টপেজগুলো এখন মাইক্রো স্টপেজ!

রণবীর ঘোষ কিংকর, চান্দিনা (কুমিল্লা) : করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ রোধে সরকার তিন দফায় সারা দেশে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছেন। চলমান লকডাউনে সংক্রামণের ঝুঁকি এড়াতে গণপরিবহন বন্ধ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গণপরিবহন বলতে শুধুমাত্র বাস চলাচলই বন্ধ রয়েছে। বাসের বিকল্প হিসেবে অবাধে চলছে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মারুতি, সিএনজি অটোরিক্সা। 

মহাসড়কের বাস স্টপেজগুলো এখন মাইক্রোবাস স্টপেজে রূপ নিয়েছে। প্রতিটি স্টেশনের দুই ধারে সারি-সারি দাঁড়িয়ে আছে মাইক্রোবাস, মারুতি, প্রাইভেটকার, লেগুনা। আবার মহাসড়ক দখল করে ওই প্রাইভেট পরিবহনগুলো এলোপাতারি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় স্টেশন এলাকাগুলোতে যানজটও সৃষ্টি হচ্ছে। 

ব্যক্তিগত পরিবহন হিসেবে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও মারুতি চলাচলের কথা থাকলেও অধিকাংশ ওইসব যানবাহন সারা দেশে ভাড়ায় পরিচালিত হয়। চলমান ‘লকডাউনে’ ওইসব যানগুলোর রিজার্ভ ভাড়া কম থাকায় এখন মহাসড়কে গণপরিবহন হিসেবে চলছে।

প্রতিটি মাইক্রোবাসে ১৩-১৪ জন, মারুতিতে ৮-১০ জন, প্রাইভেটকারে ৪-৫ জন যাত্রী নিয়ে গাদাাগাদি করে ছুটে চলছে। এতে করোনা সংক্রামণ আরো বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা বিরাজ করছে। প্রতিটি স্টেশন এলাকায় টোলের নামে চাঁদা দিয়ে হাইওয়ে পুলিশের সামনেই ওইসব যানবাহনগুলো অবাধে চলাচল করছে।

সরেজমিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ময়নামতি সেনানিবাস, নিমসার, চান্দিনা, মাধাইয়া, ইলিয়টগঞ্জ, গৌরীপুর বাস স্টেশন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি স্টেশনে মহাসড়ক দখল করে সারি সারি মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকারে দূরপাল্লার যাত্রী ওঠানো ও নামানোর কাজ চলছে।

ময়নামতি সেনা নিবাস এলাকা থেকে ঢাকায় ৩৫০-৪০০ টাকায়, চান্দিনা স্টেশন এলাকা থেকে ৩০০-৩৫০ টাকা ভাড়ায় যাত্রী তুলছে। ওইসব পরিবহনগুলোর সিরিয়াল নির্ধারণের জন্য কেরারি পদবীধারী চাঁদাবাজও রয়েছে! 

মাইক্রোবাস চালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ক্যান্টনমেন্ট থেকে ৮ জন যাত্রী নিয়ে রওয়ানা হয়েছি, চান্দিনা স্টেশনে এসে আরো ৫ জন তুলি। স্টেশনে কেরানিদের যাত্রীপ্রতি ২০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। 
লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ সেখানে আপনি কেন এতো যাত্রী নিয়ে ছুটছেন? এমন প্রশ্নে তিনি জানান- কি করবো, এখন আর বিয়া-সাদিও নাই, বিদেশ থেকে যাত্রীও আইয়ে না। অবসর আছি, আর মহাসড়কে প্রচুর যাত্রী এই সুযোগে গাড়ি চালাইতাছি। 

চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তানভীর হাসান বলেন, এসব পরিবহনে যাত্রী বহন করোনা সংক্রমণে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। চলমান লডডাউনে গণপরিবহন বন্ধ রাখায় এবং আমাদের সংক্রামণের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। এই মুহূর্তে যদি প্রাইভেট পরিবহনগুলোতে গণপরিবহন বন্ধ করা না যায় সংক্রামণ আরো বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। 

হাইওয়ে পুলিশ ইলিয়টগঞ্জ ফাঁড়ির ইন-চার্জ (ইন্সপেক্টর) সালেহ আহমেদ বলেন, স্টেশন এলাকাগুলোতে যখনই আমাদের টহলটিম যাচ্ছে মুহূর্তেই খালি হয়ে যাচ্ছে। আমরা যখন চলে আসি আবার একই অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। আর যেগুলো সামনে পাচ্ছি আটক করে মামলাও দিচ্ছি।

হাইওয়ে পুলিশ ময়নামতি ক্রসিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিছুর রহমান বলেন, প্রতিদিন ওইসব যান আটক করে মামলা দিচ্ছি। বিভিন্ন অযুহাতে মানুষ ওইসব পরিবহনে ওঠে যাতায়াত করছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।-কালের কণ্ঠ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে