রবিবার, ২২ আগস্ট, ২০২১, ০১:২৯:৩৯

সরকারের সহযোগিতা ছাড়া এই ঘটনা ঘটতে পারে না: ২১ আগস্ট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী

সরকারের সহযোগিতা ছাড়া এই ঘটনা ঘটতে পারে না: ২১ আগস্ট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী

সরকারের সহযোগিতা ছাড়া ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রে'নেড হামলার মতো ঘটনা ঘটতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গতকাল সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক আলোচনাসভায় এমন মন্তব্য করেন। ২১ আগস্ট গ্রে'নেড হামলার ১৭তম বার্ষিকী স্মরণে আওয়ামী লীগের আলোচনাসভাটিতে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন শেখ হাসিনা।

আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেখানে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সাধারণত পুলিশ এগিয়ে আসে সাহায্য করতে, যারা আহত তাদের রক্ষা করতে, কিন্তু দেখা গেল উল্টো। বরং আমাদের নেতাকর্মী দূরে যারা ছিল, তারা যখন ছুটে আসছে, তাদের আসতে দেওয়া হয়নি, বরং টিয়ার গ্যাস মারা হয়েছে। ওই গ্যাসেও তো আরো অনেকে অসুস্থ হয়েছে। তার মানেটা কী? যারা আ'ক্র'মণকারী, তাদের রক্ষা করা, তাদের রে'সকিউ করার জন্যই এই টিয়ার গ্যাস মা'রা, লাঠিপেটা করা। একটা সরকারের যদি সহযোগিতা না থাকে, তাহলে এই রকম ঘটনা ঘটতে পারে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার হামলার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে জজ মিয়া নামের দরিদ্র একজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কাহিনি তৈরি করেছে তার পরিবারকে লালন-পালন করা হবে—এই আশ্বাস দিয়ে। অথচ আ'র্জে'স গ্রে'নেড সংগ্রহ করা বা গ্রে'নে'ড মা'রার মতো লোক সংগ্রহ করার সামর্থ্যই তার ছিল না। 

পাশাপাশি ওই সময় মগবাজার আওয়ামী লীগ নেতা মোখলেসকে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করাসহ আওয়ামী লীগের কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আর তাদের দিয়ে স্বীকার করানোর পরিকল্পনা হয়েছিল যে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা জানেন, একটা গ্রে'নেড পাওয়া গেল জেলখানার ভেতরে, দেয়ালের সঙ্গে। সেটা আবার আমাদের কোনো কোনো স্বনামধন্য পত্রিকা ডায়াগ্রাম এঁকে দেখাল যে জেলখানার পাশের কোনো এক বাড়ি থেকে ওই গ্রে'নে'ড ছু'ড়ে মা'রাতে ওটা ওখানে পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জেলখানার পাশে এমন কোনো বাড়ি নেই যেখান থেকে গ্রে'নে'ড মা'রলে ওই জায়গায় এসে গ্রে'নে'ড পড়বে। আসল কথা হলো এরা অনেক ক্রি'মি'নাল জোগাড় করেছিল। তার মধ্যে কিছু জেলখানা থেকে বের করে নিয়ে এসেছিল। কিন্তু সে সময় প্রত্যেকের হাতে যে গ্রে'নে'ডগুলো ছিল, সবাই সেগুলো মা'রতেও পারেনি। রমনা হোটেলের সামনের একটা গলিতে একটা পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন জায়গায় কয়েকটা আলামত পাওয়া যায়। পরে তারা নিশ্চয় (কারাগারে) ঢুকে গিয়েছিল এবং একজন কারারক্ষী এর মধ্যে জড়িত ছিল।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘হামলার দিন রাতেই সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে করে চারজনকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তার মধ্যে ওই কারারক্ষী তাজউদ্দিন ছিল। এবং সেই সঙ্গে যেটা শোনা যায়, কর্নেল রশীদ আর ডালিম (বঙ্গবন্ধুর খুনি) সেই সময় ঢাকায় এসেছিল। এবং তারা খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার তত্ত্বাবধানেই ছিল। কারণ গোয়েন্দা সংস্থা, ডিজিএফআই, এনএসআই তাদের সবাই জড়িত, পুলিশ অফিসার সবাই জড়িত। যখন জানল যে আমি মরি নাই, বেঁচে আছি। তখন তারা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘গ্রে'নেড হামলায় নিহতদের লা'শ মেডিক্যাল কলেজ থেকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিতেও গড়িমসি হচ্ছিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সেখানে ঘিরে থাকলে কর্তৃপক্ষ ভোর রাতে লা'শ দিতে বাধ্য হয়।’

তৎকালীন সরকার সেদিন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে বাধার সৃষ্টি করেছিল জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পরে আমি শুনেছি, ওখানে ডিজিএফআইয়ের একটা অফিসার নাকি ছিল ডিউটিরত। যখন এই গ্রেনেড হামলা হয়, সে হেডকোয়ার্টারে ফোন করে। তখন তাকে ধমক দেওয়া হয়। আর দু-একজন পুলিশ অফিসার, তারা পুলিশের ওখানে ছিল। তারা জানত না। তারা হয়তো পুলিশ হেডকোয়ার্টারে ফোন করেছে। তাদেরও ধ'মক দেওয়া হয়েছে। এগুলো তোমাদের দেখা লাগবে না। তোমরা ওখানে কী করো? সরে যাও।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বললাম, আমার হাতে তো কোনো ভ্যানিটি ব্যাগও ছিল না, কিছুই ছিল না। আর আমি কবে এই আ'র্জে'স গ্রে'নেড মা'রায় এক্সপার্ট হয়ে গেলাম, তাতো জানি না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আমরা কি সু'ইসা'ই'ড করতে গিয়েছিলাম ওখানে? আইভি রহমানসহ সবাইকে নাকি আমি গ্রে'নে'ড হামলা করে মে'রেছি।’ এই ধরনের কথা বলেন তিনি।

 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে