করোনাভাইরাস মহামারিকালে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সারা দেশে পাঠানো একটি চিঠি নিয়ে দলটির মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে। গত নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ার জন্য যাঁরা ফরম সংগ্রহ করেছিলেন, তাঁদের ওই চিঠি দেওয়া হয় দলের করোনা হেল্প সেলের কার্যক্রমে সহযোগিতা করার জন্য। কিন্তু অনেকেই একে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার পাশাপাশি নানাভাবে তাঁরা প্রচারেও নেমেছেন। ওই চিঠি দেখিয়ে বলছেন, আগামী দিনে তাঁদেরই মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
সূত্র মতে, ওই ঘটনা কোথাও কোথাও দলের স্থায়ী কমিটির নেতা থেকে শুরু করে সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জেলা নেতা, সর্বোপরি গত নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে। তবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ওই চিঠি দেওয়ায় কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেন না। অবশ্য কেউ কেউ আবার চিঠি দেওয়ার ঘটনাকে ইতিবাচক হিসেবেও দেখছেন। তাঁরা বলছেন, ওই চিঠিতে বিএনপি কিছুটা হলেও চাঙ্গা হবে।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নের জন্য নেতাকর্মীসহ মোট দুই হাজার ৬০০ জন ফরম কেনেন। যদিও শেষ পর্যন্ত ২৪১ জনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। কিন্তু প্রার্থিতা বাতিল হতে পারে—এমন আশঙ্কায় বেশির ভাগ আসনেই একাধিক ছায়া প্রার্থী রাখার কৌশল গ্রহণ করে বিএনপি। যদিও শেষ পর্যন্ত ওই কৌশল সফল হয়নি।
জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘করোনা সেলের সহযোগিতার জন্য দলীয় প্রার্থী ও মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দেওয়া চিঠির সঙ্গে আগামী নির্বাচনের মনোনয়নের কোনো সম্পর্ক নেই। যাঁরা এ নিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন, সেটি তাঁদের কল্পনাপ্রসূত।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী আসনে চূড়ান্তভাবে মনোনয়নপ্রাপ্তদের মন খারাপ করার এখানে কিছু নেই। যাঁরা দুর্বল তাঁরাই কেবল এ নিয়ে চিন্তা করতে পারেন।’
বিএনপির করোনা পর্যবেক্ষণ সেলের আহ্বায়ক দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘দুই হাজার ৬০০ জনের মধ্যে যাঁরা ভালো কাজ করবেন এবং করোনার এই সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াবেন, দল তাঁদেরই মূল্যায়ন করবে।’ তিনি বলেন, ‘চিঠি দেওয়া খারাপ কিছু হয়নি। এমন মহামারির সময়ে মানুষের পাশে না থাকলে তাঁরা কেমন নেতা?’