মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৬, ০১:৩৫:৫৩

ব্যাংক কর্মকর্তা নির্যাতন ও হুমকি

ব্যাংক কর্মকর্তা নির্যাতন ও হুমকি

আলী রীয়াজ : ঢাকায় একজন সাবেক সাংবাদিক, যিনি বর্তমানে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা, অভিযোগ করেছেন যে ‘ক্রসফায়ারের হুমকি’ দিয়ে পুলিশ তাকে নির্যাতন করেছে এবং তাকে আটক করে তার কাছ থেকে ‘মোটা অঙ্কের’ অর্থ (কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী পাঁচ লাখ টাকা) দাবি করেছিল।

ওই সাবেক সাংবাদিককে উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে যে, তার কাছে ইয়াবা আছে এ অভিযোগে পুলিশ তাকে আটক করে বা করার চেষ্টা করে।

তিনি বলেছেন, তাকে পুলিশের গাড়িতে তুলে নেওয়া হয় একটি এটিএম বুথের কাছ থেকে, টাকা তোলার পরপর। আমরা বলতে পারি— সৌভাগ্য যে, এই ব্যাংক কর্মকর্তা প্রাণে বেঁচে গেছেন, অক্ষত না থাকলেও তিনি মারাত্মক কোনো রকম শারীরিক ক্ষতির শিকার হননি। গণমাধ্যমে একজন পুলিশ অফিসারকে এ জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সামাজিক মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে।

(ঘটনার সত্যতা বিষয়ে প্রশ্ন তুলে ওই কর্মকর্তার পক্ষে তার ফেসবুকে পোস্টিং দিয়েছেন, মন্তব্য করেছেন কয়েক জন)। যারা প্রতিবাদ করছেন তাদের কারও কারও বক্তব্য এমন যেন এ ব্যক্তিটি এমন কোনো আচরণ করেছে যা মানুষ আগে কখনোই শোনেনি; আবার অন্যদিকে অনেকেই মন্তব্য করছেন যে, পুলিশের হাতে হেনস্তার অভিজ্ঞতা তাদের আছে।

এ ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ করা অবশ্যই নাগরিকের দায়িত্ব, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ‘পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন নিবারণের জন্য ২০১৩ সালের আইন’ স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছেন যে, ‘কান্নাকাটি কিংবা থানার ওসির কাছে অভিযোগ নয় বরং পরদিন মহানগর দায়রা জজের কাছে অভিযোগ করুন।’

কিন্তু এ নিয়ে যে প্রতিবাদ উঠছে তা দেখে আমার মনে প্রশ্ন জেগেছে এ ধরনের ঘটনা কি আগের এ ধরনের ঘটনাসমূহ থেকে ভিন্ন বা বিচ্ছিন্ন? অতীতে এ ধরনের অভিযোগ উঠলে অফিসারের বিরুদ্ধে তদন্তের ফলাফল বা গৃহীত ব্যবস্থা কি গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে? ঘটনা প্রমাণিত হলে তার পরিণতি কি হয়েছিল গণমাধ্যমে তা কি প্রচারিত হয়েছে? যদি নির্যাতিত ব্যক্তি সাংবাদিক বা গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না হতেন তার জীবন রক্ষার সম্ভাবনা কতটা ছিল?

এ ধরনের ঘটনা যদি আপনার/আমার অপছন্দের একজন রাজনৈতিক কর্মীর ক্ষেত্রে ঘটত আমরা কি একইভাবে প্রতিবাদী হতাম? অভিযুক্ত অফিসার এবং তার সঙ্গে যেসব পুলিশ ছিলেন তারা যে এ ধরনের আচরণ করার সাহস পান তার সঙ্গে কি প্রাতিষ্ঠানিক আচরণের কোনো সম্পর্ক আছে?

লেখক : অধ্যাপক, ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা -বিডি প্রতিদিন

১২ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে