বৃহস্পতিবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০২১, ০৪:৫৯:৩৭

মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সে বোমা আতঙ্ক, যেভাবে চলে অভিযান

মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সে বোমা আতঙ্ক, যেভাবে চলে অভিযান

কুয়ালালামপুর থেকে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট গতকাল বুধবার ঢাকার হয়রত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর আগেই খবর আসে ফ্লাইটের দুই যাত্রীর কাছে বো'মা রয়েছে। মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের সঙ্গে কথা বলে কিংবা গোয়েন্দা তথ্য যাচাই করেও বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছিল না। তবে বিষয়টি নিয়ে ‍ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জো'রদার করা হয়। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে ব্যা'পক ত'ল্লা'শি শেষে জানানো হয় সেখানে বো'মা বা বি'প'জ্জনক কিছু পাওয়া যায়নি।

১৩৫ জন যাত্রী নিয়ে মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের নিয়মিত ফ্লাইটটি রাত ৯টা ৩৮ মিনিটে শাহজালালে নামে। ফ্লাইটটিতে বোমার খবরে বিমানবন্দরে উ'ত্তে'জনা বেড়ে যায়। বিমান বাহিনীর বম ডি'সপো'জাল ইউনিট, স'ন্ত্রা'স দ'মন ইউনিট, আ'র্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যদরা সত'র্ক অবস্থান নেন। বাইরে অবস্থান নেন সেনাবাহিনী ও র‌্যাব সদস্যরা।

পরে তল্লাশি শেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বুধবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদুল আহসান জানান, মালেয়েশিয়ার একটি ফোন নম্বর থেকে বার্তা এসেছিল, পাকিস্তানি দুই যাত্রীর সঙ্গে বো'মা রয়েছে। তবে ফ্লাইটে পাকিস্তানি কোনো যাত্রী ছিলেন না।

তিনি জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে র‍্যাবকে মালয়েশিয়ার একটি নম্বর থেকে ওই বার্তাটি দেওয়া হয়। র‍্যাব থেকে জানানো হয়, মালয়েশিয়া থেকে একটি বিমান আসবে, সেখানে কিছু যাত্রীর সঙ্গে ‘ব'ম থ্রে'ট’ আছে।

বিমানটি পরে স্বাভাবিকভাবেই অবতরণ করে জানিয়ে তৌহিদুল আহসান বলেন, ‘আমরা মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা জানায় আমাদের তথ্যের সঙ্গে মিল আছে এমন কোনো যাত্রী উড়োজাহাজে নেই।’

বিমানের ১৩৫ জন যাত্রীর মধ্যে ১৩৪ জন বাংলাদেশি ছিলেন বলে জানান বিমানবন্দরের পরিচালক। বাকি একজন মালয়েশিয়ার নাগরিক ছিলেন তৌহিদুল আহসান বলেন, ‘বিমানবন্দরে বো'মার হু'মকি দেখা দিলে কী করতে হবে, তা আগেই নির্ধারণ থাকে। সে কারণে বিষয়টি হালকাভাবে না দেখার সিদ্ধান্ত নেন তারা। বিয়টি নিয়ে মিটিং হয়। সিভিল এভিয়েশনের সদস্যসহ বিভিন্ন গোয়ে'ন্দা সংস্থা ও বাহিনীর সদস্যরা সেখানে ছিলেন। মিটিংয়েও মালয়েশিয়া থেকে আসা তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে জানান গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।’

তিনি বলেন, ‘তারপরও সবার পরামর্শ মতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বিষয়টি হালকাভাবে না নেওয়ার। এরপর এসওপি (স্ট্যান্ডা'র্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হই। ঘোষণা করা হয়, আমরা অ্যা'ক'শনে যাব, ত'ল্লা'শি চা'লাব।’

বিমানবন্দরের পরিচালক জানান, ফ্লাইটটি রাত ৯টা ৩৮ মিনিটে শাহজালালে নামার পর সেটাকে একটু দূরে ট্যাক্সিওয়েতে পার্ক করে শুরু হয় ত'ল্লা'শি। এয়ারক্রাফট ল্যান্ডিংয়ের পর চে'কলি'স্ট অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়। বিমান বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সবাইকে খবর দেওয়া হয়।

অভিযানে মূল ভূমিকা পালন করে বিমান বাহিনীর ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুর ব'ম ডি'সপো'জাল ইউনিটের সদস্যরা। তাদের সহায়তা করে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। বাইরের প্রস্তুত ছিল সেনাবাহিনী ও র‍্যাব। এ ছাড়া বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও ছিলেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এজেন্টের কর্মীরা যাত্রীদের নামানো ও লাগেজ নামানোর কাজটি করেন। ড'গ স্কো'য়াডের কুকুরগুলোকেও ত'ল্লা'শিতে কাজে লাগানো হয়।

গ্রুপ ক্যাপ্টেন তৌহিদুল বলেন, ‘প্রথমে আমরা যাত্রীদের নামিয়ে দিই। এরপর যাত্রীদের নিরাপত্তা ত'ল্লাশি করা হয়। বিমান বাহিনীর ব'ম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা তাদের সরঞ্জাম নিয়ে ত'ল্লাশি চালায়। যাত্রীদের কাছে সন্দে'হজনক কিছু না পেয়ে তাদের টার্মিনাল ভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তারপর উড়োজাহাজটির সামনের ও পেছনের দুটি চেম্বার থেকে মালামাল (কার্গো) নামানো হয়। নামানোর সময় মালামালগুলোতেও তল্লাশি করা হয়।’

শাহজালাল পরিচালক আরও বলেন, ‘একটি একটি করে লাগেজ স্ক্যান করে ট্রলিতে ভরে বে এরিয়ায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। লাগেজগুলো ডগ স্কোয়াডের কুকুর দিয়েও স্ক্যান করা হয়। তবে বি'পদ'জনক বা বো'মাস'দৃশ কিছু পাওয়া যায়নি।’ সূত্র: আমাদের সময়

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে