মঙ্গলবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২১, ১১:০৮:৩৩

বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি বেশি লাভের আশায় পেঁয়াজ মজুদ করে ধরা খেলেন অসাধু ব্যবসায়ীরা

বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি বেশি লাভের আশায় পেঁয়াজ মজুদ করে ধরা খেলেন অসাধু ব্যবসায়ীরা

অতি লোভে তাঁতি নষ্ট, এটা আবারো প্রমাণ হলো। এবার ধরা খেলেন কিছু অসাধু পেঁয়াজ ব্যবসায়ী। অনৈতিক মুনাফার আশায় বাজারে না ছেড়ে পেঁয়াজ মজুত করেছিলেন তারা। চেয়েছিলেন কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে। কিন্তু বিধি বাম। পুঁজি ওঠানোই এখন দায়। বাজারে আসতে শুরু করেছে নতুন পেঁয়াজ। দাম বাড়ার কোনও সুযোগই এ বছর আর নেই। মজুত করা পেঁয়াজ নিয়ে তাই ভালোই বিপদে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত অক্টোবরের মাঝামাঝিতে দুর্গাপূজার সময় কয়েক দিন বন্ধ ছিল ভারতের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের কর্মকাণ্ড। এ সময় পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ রেখেছিলেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা। যার ফলে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসছে না—এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে। ‘সুযোগ’ লুফে নিয়েছিল বাংলাদেশের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। তারা চেয়েছিলেন, তিন বছর আগের মতো এবারও পেঁয়াজের কেজি ২৫০-৩০০ টাকা হোক। এমনটা ভেবে পেঁয়াজ মজুত করতে শুরু করেছিলেন তারা। এক রাতের ব্যবধানে ৪০ টাকার পেঁয়াজ ৮০ টাকায়ও উঠেছিল। তখন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানিয়েছিলেন, ডিসেম্বরের আগে নতুন পেঁয়াজ না আসা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই। সচিবের এমন বক্তব্যেও অসাধু ব্যবসায়ীরা উৎসাহ পেয়েছিল। কিন্তু শেষতক আর কোনও গুজবই স্থায়ী হয়নি।

দুর্গাপূজার ছুটি শেষ হতেই হিলি স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহও বাড়তে থাকে। একই সঙ্গে আবার পেঁয়াজ থেকে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে সরকার। হু হু করে কমে যায় দাম। মজুত করা পেঁয়াজও ততদিনে ‍শুকিয়ে গেছে বেশ।

হিলি স্থলবন্দরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক রাখতে তারা বেশি করে আমদানি করেছিলেন। এই পেঁয়াজ নিয়েও তারা চিন্তায় আছেন। কারণ, দেশে কৃষকের ঘরেও নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। পাইকাররাও তেমন একটা আসছে না। গরমে নষ্ট হবে বলে কম দামেই পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন আমদানিকারকরা। অন্যদিকে মজুত করা পেঁয়াজ এখনও পড়ে আছে গুদামেই।

হিলির পাইকারি বাজার থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, প্রতিকেজি আমদানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩২ টাকায়। হিলি কাস্টমসের তথ্যমতে, ওই স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতীয় ৪০০-৪১৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আসছে। এদিকে দেশের অভ্যন্তরের বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের হাটে উঠতে শুরু করেছে পাতা পেঁয়াজ। এতেও কমতে শুরু করেছে আগের পেঁয়াজের বাজার দাম। চাষিরা বলছেন, ফলনও এবার ভালো। নতুন পেঁয়াজের চাহিদাও বেশি। তাই তারা লাভবান হচ্ছেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে