মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:৪৭:৩০

মায়ের লাশের সামনে বসে কাঁদছে অবুঝ দুই শিশু!

মায়ের লাশের সামনে বসে কাঁদছে অবুঝ দুই শিশু!

মায়ের মতো আপন কেউ নেই। যার মা আছে তার নাকি দুনিয়া আছে। সন্তানকে নিঃস্বার্থ ভালোবাস দেওয়ার ক্ষেত্রে মায়ের সাথে তুলনায় আর কেউ নেই এই দুনিয়ায়। মা শব্দটির মতো মধুর এই ভুবনে আর কিছু নেই। 

আট বছরের আব্দুর রহমান ছিল পঙ্গু মা-বাবার একমাত্র ভরসাস্থল। মা আম্বিয়া খাতুনকে হুইল চেয়ারে করে বেড়াত সে। তবে আর হুইল চেয়ার ঠেলতে হবে না তাকে। সোমবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ফার্মপাড়ার ভাড়া বাড়িতে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে যান মা। মাকে হারিয়ে মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে অবুঝ দুই শিশুর। আড়াই বছরের আব্দুল্লাহকে কোলে নিয়ে রহমানের গগণবিদারী কান্নায় চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি উপস্থিত জনতা।

স্থানীয়রা জানায়, সন্তান প্রসবের সময় খিঁচুনি হয়ে আম্বিয়ার শরীরের কোমর থেকে নিচের অংশ অবশ হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় একটি চোখ। প্রায় দেড় বছর আগে স্বামীকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় চলে আসেন আম্বিয়া। এখানে রেল বস্তিতে ১২০০ টাকা ভাড়ায় একটি ঘরে বসবাস করতেন। স্বামী শহরের বিভিন্ন স্থানে ফেরি করে বাদাম বিক্রি করতেন। কিন্তু ১১ মাস আগে সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণ করেন তিনিও। তাই বাধ্য হয়ে আম্বিয়া ছোট ছেলেকে কোলে নিয়ে হুইল চেয়ারে বসে শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে মানুষের কাছে সাহায্য চাইতেন। আর হুইল চেয়ার ঠেলত শিশু আবদুর রহমান। এভাবেই চলছিল তাদের সংসার।

স্বামী আকতার হোসেন বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম আম্বিয়ার জীবন কেড়ে নিল ঘাতক জন্ডিস। এখন আমি দুই সন্তানকে নিয়ে কী করব? এক সপ্তাহ ধরে জন্ডিসের চিকিৎসা করানো হচ্ছিল। সোমবার সকালে মারা যায় আম্বিয়া। মায়ের লাশের সামনে বসে কাঁদছে অবুঝ দুই শিশু! এদিকে সন্ধ্যায় জানাজা শেষে চুয়াডাঙ্গা জান্নাতুল মাওলা কবরস্থানে দাফন করা হয়।

আকতার হোসেন আরও বলেন, আমার কাজ করার ক্ষমতা নেই। এখন দুটি সন্তানকে নিয়ে কী করে সংসার চালাব বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে