শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ০৬:৩৩:৫৮

ছেলে সাঁতার জানে না, তাই মা তাকে ছাড়া লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দিতে চায়নি! আল্লাহর রহমতে তারপর বাঁচার গল্প

ছেলে সাঁতার জানে না, তাই মা তাকে ছাড়া লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দিতে চায়নি! আল্লাহর রহমতে তারপর বাঁচার গল্প

আগুনের সঙ্গে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন লঞ্চ। শরীরেও আগুন। দিশেহারা সবাই। দিগ্বিদিক ছোটাছুটি। জীবন বাঁচাতে কী করবেন? যাওয়ার কোনে পথ নেই। উপায় একমাত্র নদীতে ঝাঁপ দেওয়া। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে শীতের গভীর রাতে বহু মানুষই ঝাঁপ দেন

আগুনের সঙ্গে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন লঞ্চ। শরীরেও আগুন। দিশেহারা সবাই। দিগ্বিদিক ছোটাছুটি। জীবন বাঁচাতে কী করবেন? যাওয়ার কোনে পথ নেই। উপায় একমাত্র নদীতে ঝাঁপ দেওয়া। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে শীতের গভীর রাতে বহু মানুষই ঝাঁপ দেন। তাদের অনেকে বেঁচে ফিরেছেন। এখন হাসপাতালে ভর্তি।

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংবাদমাধ্যমকে তাদের কয়েকজন এমন পরিস্থিতির কথা জানান। তারা আরও জানান, অনেকে পদদলিত হয়ে আহত হন। যে যেভাবে পেরেছেন আত্মরক্ষার চেষ্টা চালিয়েছেন। প্রাণে বাঁচাতে অনেকেই স্বজনদের রেখে নদীতে ঝাঁপ দেন। কয়েকজনকে শরীরে আগুন নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিতে দেখেছেন তারা।

এক নারী তার সাঁতার না জানা ১৩ বছর বয়সী ছেলেকে রেখে ঝাঁপ দিতে চাননি। এই নরক থেকে বেঁচে ফেরার আশা অনেকটা হারিয়েই ফেলেছিলেন তিনি। বলেন, ছেলে সাঁতার জানে না। সবাই নদীতে ঝাঁপ দিচ্ছিল। ছেলে না বাঁচলে আমি বেঁচে কী করব?
মধ্য বয়সী ওই নারী বলেন, আগুন যখন এখানে আসে, তখন আমি ঘুমেছিলাম। আমার ছেলেকে ঘুম থেকে উঠাইছি। ওরে টাইন্না এইখান থেকে ওইখানে নিছি।

বরগুনার ওই যাত্রী বলেন, আমরা দোয়া কালাম পড়ে রেডি হইছি, বাচ্চারে কোলে নিছি, আর কোনোদিন দেখা হবে না। আমার ছেলে আমারে ধইরে বসছে চুমু দিয়া, বলে ‘আম্মু, তোমারে ছাড়া বাঁচব না’।

তবে শেষ পর্যন্ত আরও অনেকের মতো নদীতে ঝাঁপ দেন ওই নারী এবং তার ছেলে। আল্লাহর রহমতে আস্তে আস্তে স্রোতে ভাসতে ভাসতে লঞ্চ পারে যখন আসছে, যখন দেখলাম যে গাছ দেখা যায়, ছেলেরে বললাম যে বাবা, তুমি পানির নিচ দিয়া হাঁটবা। হাইট্টা দেখবা গাছ পাইলে গাছ ধইরা উরপে উইঠ্ঠা যাইতে পারবা। ও লাফ দিছে, আমি বোরকা ছিড়ড়া ঝাঁপ দিছি। আমি মনে হয় ৫ ফুট না কয়ফুট গেছি জানি না, হঠাৎ কইরা ভাইসা উঠছি, সাঁতার দিয়া ছেলেরে ধরছি। তিনি আরও জানান, লঞ্চে তার লাগেজ ছিল। কাপড়চোপড়ের সঙ্গে আইডি কার্ড ছিল, আর ছিল ৬৫ হাজার টাকা।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে