ইংরেজি নববর্ষের শুরুর লগ্নে শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) রাত ১২টার পর রঙিন হয়ে ওঠে রাজধানীর আকাশ। থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন করতে হাজার হাজার আতশবাজি ফোটায় নগরবাসী। সেই সঙ্গে বিভিন্ন রংয়ের ফানুসের আলোতেও ঝলমলে হয়ে ওঠে ঢাকার আকাশ।
এই উদযাপন শুরুর কিছু সময়ের মধ্যে ঘটে যায় অনেকগুলো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। একসঙ্গে ফায়ার সার্ভিস ও জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর হট লাইন নম্বরগুলো ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে সারা দেশ থেকে প্রায় ২০০টি অগ্নিকাণ্ডের খবর আসে ফায়ার সার্ভিস ও ৯৯৯-এর কন্ট্রোল রুমে। ফায়ার সার্ভিস প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারে, এসব অগ্নিকাণ্ডের বেশিরভাগ ঘটেছে ফানুসের কারণে। তবে কয়েকটি আগুন আতশবাজির কারণেও লেগেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও ৯৯৯ সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর প্রায় ১০টি জায়গা থেকে তারা আগুন লাগার খবর পান। যার মধ্যে যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে লাগা তিনতলা একটি ভবনের আগুন ছিল সবচেয়ে ভ'য়াব'হ। এছাড়া ঢাকার বাইরে থেকে ১৯০টি আগুন লাগার ঘটনার ফোন আসে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীতে লাগা প্রতিটি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের অনেকগুলো ইউনিট রওনা হয়ে যায়। রাত ১২টা ৩০ মিনিট থেকে ২টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ২০টি ইউনিট এসব আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে কেউ হতাহত না হলেও অনেক বাড়িতে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক (ঢাকা) দিলমনি শর্মা বলেন, ফানুস ওড়ার সময় আগুনের শিখা বহন করে। কাগজে বানানো বেলুন আকৃতির ফানুসের ভেতরে আগুন জ্বলতে থাকে। যখন ফানুসটা ফেটে যায় তখন আগুনটা বাড়ির ছাদে গিয়ে পড়ে। ঢাকার ভবনগুলোর ছাদে মানুষ মালামাল রাখে, ছোট টিনশেডের ঘর তৈরি করে, আবার অনেকে বাগান করে। এ কারণে ফানুসের আগুন ছাদে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে অগ্নিকাণ্ডের জন্য যথেষ্ট জ্বালানি পায়। আর তাতেই বড় আগুনের সৃষ্টি হয়।
ফানুস নববর্ষ উদযাপনের কোনো অনুষঙ্গ নয় জানিয়ে তিনি বলেন, আগামীতে ফানুস ওড়ানো বন্ধ করা উচিত। নববর্ষ মানুষ কীভাবে উদযাপন করে তা পুলিশ দেখে। তবে এবারের অবস্থা দেখে আমাদের মনে হয়েছে নববর্ষের উদযাপন অনুষ্ঠানে ফানুস ওড়ানো বন্ধ করা উচিত। গতকাল রাতে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় দাউদাউ করে আগুন ধরেছে।