স্পোর্টস ডেস্ক : বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বে মুসলমান ক্রিকেটারের সংখ্যা একেবারে কম নয়।কিন্তু কঠোরভাবে ইসলাম মেনে ক্রিকেট মাঠে নামা ক্রিকেটার হাতেগোনা কিছু সংখ্যক। অনেকে মুসলিম হলেও সেভাবে ইসলাম মেনে চলেন না। কোরআনের স্পর্শে যান না। এমন পরিস্থিতিতেও আল কোরআনের আলোয় বেশ কিছু ক্রিকেটারের জীবনই বদলে গেছে। তারা শুধু যে কঠোরভাবেই ইসলাম মেনে চলেন তাই নয়, তারা এখন একজন খাদেম হিসেবে ইসলাম প্রচারের কাজ করে যাচ্ছেন। এমন ১০ ক্রিকেটারের জীবন পাল্টে যাওয়া কথা নিম্ন পরিচয় তুলে ধরা হলো-
১. সাইদ আনোয়ার : পাকিস্তানী সফল ব্যাটসম্যান ও বাহাতি ব্যাটসম্যানদের আইডল সাইদ আনোয়ার ক্যারিয়ার শেষে জীবনের সবচেয়ে বড় একটা ধাক্কা খেয়ে বসেন। তার মেয়ের মৃত্যুতে শোকাহত এই পাকিস্তানী ক্রিকেটার ইসলামের মধ্য শান্তি খুজে পান। আর বর্তমানে এই শান্তি ছোঁয়া ইসলামী ধর্মপ্রচারক সংগঠন তাবলীগে জামাতের মাধ্যমে তিনি সারা বিশ্বে পৌঁছে দিচ্ছেন ইসলামের বাণী।
২. মোহাম্মাদ ইউসুফ : পাকিস্তানী ক্রিকেটের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান মোহাম্মাদ ইউসুফ ক্যারিয়ারের শুরুতে ছিলেন একজন খ্রিষ্টান, নাম ছিল ইউসুফ ইউহানা। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর ক্যারিয়ারের শ্রেষ্ঠ সময় পার করেছেন তিনি।বর্তমান ইসলামী ধর্মপ্রচারক সংগঠন তাবলীগে জামাতের অন্যতম সদস্য হিসেবে নিয়মিত ধর্মপ্রচারের কাজ করে যাচ্ছেন।তিনি এখন একজন ধার্মিক মুসলিম, কঠোরভাবে ইসলামের নিয়মকানুন মেনে চলেন।
৩. হাশিম আমলা : বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হাশিম আমলা একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান। শুধুমাত্র ধর্মের নিষেধাজ্ঞার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের প্রধান স্পন্সর 'ক্যাসেল' কোম্পানির লোগো গায়ে টি-শার্ট পরেন না, আর এই লোগো গায়ের সাথে না জোড়ানোর কারণে তিনি প্রতি মাসে ৫০০ ডলার করে ক্ষতিপূরণ স্বরূপ দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বোর্ডকে
দেন।
৪. ইনজামাম-উল-হক : পাকিস্তান ক্রিকেটের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যানের নাম ইনজামাম-উল-হক।তিনি ইসলাম ধর্মপ্রচারক সংগঠন তাবলীগই জামাতের অন্যতম সদস্য হিসেবে ইসলাম প্রচার করে যাচ্ছেন এবং পাকিস্তান ক্রিকেটে তিনি একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি।
৫. মইন আলী: বর্তমান ইংলিশ দলের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার মইন আলীর পারফরমান্স চোখে পড়ার মত। সম্প্রতি ইসলাম ধর্মের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি আমার দাঁড়িকে ইসলামের পরিচয় হিসেবে পড়েছি, আর ধর্ম আমার কাছে অনেক গুরুত্বপুর্ণ একটা বিষয়। কোরআন আমার জীবনবিধান।
৬. সোহরাওয়ার্দী শুভ : বাংলাদেশ ক্রিকেটের অলরাউন্ডার সোহরাওয়ার্দী শুভ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু করার পর দলের হয়ে বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছেন। সম্প্রতি দলের একাদশে সুযোগ না আসলেও নিজেকে একজন পরিপূর্ণ মুসলমান হিসেবে সচল রেখেছেন। তিনি নিয়মিত কোরআন ও নামাজ পড়েন।
৭. মুশতাক আহমেদ : পাকিস্তানের বর্তমান বোলিং কোচ এবং পাকিস্তান ক্রিকেটের অন্যতম সেরা বোলার ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর পরবর্তি জীবনের কথা চিন্তা করে নিজেকে সম্পুর্ণ ইসলামিক ধ্যানধারণায় মনোনিবেশ করেছেন। তার ধারণা ইসলাম এবং ক্রিকেট তার জীবনকে বদলে দিয়েছে।
৮. সাকলাইন মুশতাক: আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর পাকিস্তানী গ্রেট ও ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অফ স্পিনার দাওয়াত-ই-ইসলামের বরাত দিয়ে নিজেকে সম্পুর্ণভাবে ইসলামিক আইনকানুনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছেন।
৯. ইমরান তাহির : পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করা দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার বর্তমান দলে না থাকলেও দলের অন্যতম সেরা বোলার হিসেবে বেশ কিছুদিন প্রভাব বিস্তার
করেন। এই ক্রিকেটার তার টেস্ট অধিনায়ক হাশিম আমলার কাছ থেকে অননুপ্রাণিত হয়ে নিজেকে ইসলাম ধর্মের দিকে সম্পুর্ণ সোপর্দ করেছেন, আর নিজেকে কঠোরভাবে ইসলাম ধর্মের দিকে মনোনিবেশ করার কারণে তার ক্যারিয়ারও বেশ ফুলে ফেপে উঠেছিল, এক কথায় বলতে গেলে কঠোরভাবে ইসলাম ধর্মের দিকে মনোনিবেশ করার পর এই প্রোটিয়া বোলার ক্যারিয়ারের শ্রেষ্ঠ সময় পার করেছেন।
১০. আদিল রাশিদ: পাকিস্তানী বংশদ্ভুত আদিল রাশিদ ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের হয়ে খেলেছেন বেশ কিছুদিন। দলে অভিষেক হওয়ার পর তেমন কঠোর ইসলাম ভক্ত না হলেও সম্প্রতি ইসলামিক নিয়ম কানুন মেনে নিজের জীবন পরিবর্তন করে নিয়েছেন। আল কোরআন তার জীবন পাল্টে দিয়েছ বলেই মনে করেন এই ক্রিকেটার। হে আল্লাহ, এই সব ক্রিকেটারদের আরো বেশি ইসলামের খেদমত করার তৌফিক দিন।
২১ জানুয়ারি ২০১৬/এমটি নিউজ২৪ডটকম/এসএম/ডিআরএ