বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৬, ১২:০১:০১

সেই রহস্যের বরপুত্র মুসা বিন শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদ

সেই রহস্যের বরপুত্র মুসা বিন শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদ

ঢাকা : সেই ‘রহস্য পুরুষ’ ও ড্যাটকো গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. মুসা বিন শমসেরকে (প্রিন্স মুসা) জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নী‌তি দমন ক‌মিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে তিনি নিজস্ব নিরাপত্তা ইউনিট নিয়ে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে গিয়ে হাজির হন।

এরপর বেলা ১১টার দিকে মুসা বিন শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন দুদকের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী। দুপুর পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ চলবে বলে জানা গেছে।

দুদক সূত্রের খবর, অনুসন্ধান চালিয়ে সুইচ ব্যাংকে মুসার ১২ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি প্রায় ৯৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা) আটকে থাকা হিসাব নম্বর জানতে পারেনি দুদক। এজন্য গতবছর ৪ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় তাকে তলব করা হয়।

সে অনুসারে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা কথা ছিল। তবে, অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সময় আবেদন করলে আজকের এই দিন দিয়েছিল দুদক।

২০১৫ সালের ৭ জুন দুদকে সম্পদ বিবরণী জমা দেন মুসা বিন শমসের। সম্পদ বিবরণীতে তিনি সুইচ ব্যাংকে তার ১২ বিলিয়ন ডলার ফ্রিজ অবস্থায় থাকার কথা উল্লেখ করেন।

সুইচ ব্যাংকে ৯০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের (বাংলাদেশি প্রায় ৭০০ কোটি টাকা) অলংকার জমার তথ্য দিয়েছেন তিনি। এছাড়া দেশে তার সম্পদের মধ্যে গুলশান ও বনানীতে দুটি বাড়ি, সাভার ও গাজীপুরে ১২০০ বিঘা জমির কথাও বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে মুসার বিরুদ্ধে স্বনামে/বেনামে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেলে ২০১৫ সালের ১৯ মে তার বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করে কমিশন।

প্রিন্স মুসার বিরুদ্ধে ২০১১ সালে অবৈধ সম্পদের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই সময় বিজনেস ম্যাগাজিন ফোর্বস’র প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে এ অনুসন্ধান শুরু করা হয়। তবে অজ্ঞাত কারণে দুদকের ওই অনুসন্ধান আলোর মুখ দেখেনি।

তিন বছর পর ২০১৪ সালের শেষের দিকে ‘বিজনেস এশিয়া’ ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে অবারো নতুন করে মুসার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক।

২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর দুদকের ওই কর্মকর্তাকে এ অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। একই বছরের ৪ ডিসেম্বর মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠায় দুদক। ১৮ ডিসেম্বর হীরার জুতা থেকে শুরু করে আপাদমস্তক মূল্যবান অলঙ্কারে সজ্জিত হয়ে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হন প্রিন্স মুসা। সঙ্গে ছিল নারী-পুরুষের ৮০ জনের এক দেহরক্ষী বহর।

দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সুইচ ব্যাংকে জব্দ করা অর্থ ফেরত পেলে পদ্মা সেতু নির্মাণে বিভিন্ন খাতে তা বিনিয়োগ করবেন বলে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান মুসা।

এদিকে, মুসা ধন-সম্পদ অর্জনের বিষয়ে দুদকে যে তথ্য দিয়েছেন তা সঠিক নয় বলে আগেই জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান।

তিনি বলেছেন, ‘মুসা যত গর্জে, তত না। দুদকের কাছে তিনি বিশাল জমি-জমার হিসাব দিয়েছেন। তবে কোনো জায়গাই তার দখলে নেই। আবার বিদেশে আটক ১২ বিলিয়ন ডলারের যে তথ্য দিয়েছেন, সেখান থেকে সে তথ্যও পাচ্ছি না। আবার তিনিও (মুসা) কিছু দিতে পারছেন না।’
২৮ জানুয়ারি ২০১৬ এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে