বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৬, ০১:৪১:০২

স্ত্রীর কেনা একটি ছাগলই বদলে দিল নজরুলের ভাগ্যের চাকা

স্ত্রীর কেনা একটি ছাগলই বদলে দিল নজরুলের ভাগ্যের চাকা

নিউজ ডেস্ক : একটি ছাগলই ভাগ্য বদলে দিয়েছে শার্শার নাভারনের নজরুল দম্পতির। এ এক অন্যরকম গল্প। নজরুল ইসলামের স্ত্রী মনুয়ারা বেগম ৫ বছর আগে ৫ হাজার টাকায় দুইটি মেরি জাতের ছাগল কেনেন। ৬ মাস পর ছাগল দুইটি বাচ্চা দেয়। এভাবে বাড়তে থাকে ছাগলের সংখ্যা।বর্তমানে তার খামারে ছাগল আছে ১৮টি, যার আনুমানিক মূল্য ৪ লাখ টাকা।এর মাঝে বেশ কয়েকটি ছাগল তিনি বিক্রিও করেছেন।

মনুয়ারা বলেন, অভাবের সংসারে পাঁচ বছর আগে রাজশাহী থেকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে কেনেন মেরি জাতের দুইটি ছাগল।ছাগলগুলো ৬ মাস পর তিন থেকে চারটি করে বাচ্চা দেয়। এভাবে বাড়তে থাকে তার ছাগলের সংখ্যা। ২ বছর বয়সেই এ জাতের একটি ছাগলে ৩০ থেকে ৪০ কেজি মাংস হয়। প্রতিটি ছাগল ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়।

তাছাড়া ৬০ টাকা কেজি দরে ছাগলের দুধও বিক্রি করা যায়।দুইটি ছাগল থেকে তার ১৮টি ছাগল হয়েছে। ছাগল পালন করেই সংসারে ফিরেছে সুদিন। একই পেশায় যুক্ত হয়ে মনুয়ারার মতো শত শত নারীর সংসারেও সুদিন ফিরেছে।

কৃষিপল্লী খ্যাত শার্শা উপজেলার অধিকাংশ মানুষ নিম্ন আয়ের ও মধ্যবিত্ত। অনেক কৃষক ও যুবক সংসার চালাতেন ভারতীয় গরুর ব্যবসা করে। বর্তমানে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কড়াকড়িতে কমে যায় গরু পারাপার। এখন ছাগল ও গরু পালন করে তাদের সংসার চলে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য মতে, শার্শা উপজেলায় ৬০৮টি স্থায়ী ছাগলের খামারসহ ১৭৮টি গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে ছাগল পালন শুরু হয়েছে। অনেকে বাড়িতেই গড়ে তুলেছেন ছাগলের খামার। বিভিন্ন জাতের ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন বেকার যুবক ও নারীরা। কানাডা থেকে ছাগল পালনের প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরে ঘিবা গ্রামের মাহমুদুল হাসান বেনাপোলের শাখারীপোতা পল্লীতে গড়ে তুলেছেন ছাগলের খামার।

অল্প খরচে স্বল্প সময়ে অধিক লাভের প্রকল্প ছাগল চাষে এখন স্বাবলম্বী যুবক হাসান। তিনি বলেন, আড়াই বছর আগে ৫০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু। বর্তমানে তার খমারে ছাগল আছে প্রায় ১০ লাখ টাকার।একই গ্রামের আবদুল হালিম বলেন, ১০ হাজার টাকার বিদেশি মেরি জাতের ছাগল পালন করে দেড় বছরে তার খামারে ১ লাখ টাকার ছাগল হয়েছে।

শার্শা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জয়দেব কুমার সিংহ বলেন, ছাগল পালনে প্রশিক্ষণ ও উদ্বুদ্ধকরণের ফলে এ এলাকায় বাড়ছে ছাগল পালনের সংখ্যা। এতে উপকৃত হচ্ছেন নারী-পুরুষসহ বেকার যুবকরা।

যশোরের শার্শা বেনাপোল এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে অস্ট্রেলিয়ার মেরি ও ক্রিস্টিনা জাতের ছাগল পালন শুরু হয়েছে। স্বল্প পুঁজিতে অল্প সময়ে ছাগল পালনে অধিক লাভ হওয়ায় এ পেশায় ঝুঁকছেন নারী ও পুরুষ। ছাগল পালন করে তারা ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন। সংসারে এনেছেন সুদিন। তাছাড়া ছাগল পালনে এক দিকে যেমন দূর হচ্ছে বেকারত্ব, অন্যদিকে বাড়ছে মাংসের জোগান।
২৮ জানুয়ারি ২০১৬ এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে