শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৬, ১০:২৬:৫৮

এক টাকার জমিতে দেড়শ’ কোটি টাকার ট্রেড সেন্টার

এক টাকার জমিতে দেড়শ’ কোটি টাকার ট্রেড সেন্টার

ঢাকা : মাত্র ১ টাকায় ৭৫ কাঠা জমি দিয়েছিল সরকার। চিটাগং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এ জমিতে নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি করেছে ২৪ তলা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার। সময় লেগেছে ১০ বছর। ব্যয় হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা। ছাদের ওপর হেলিপ্যাড, মাঝখানে ১০টি ফ্লোরে পাঁচ তারকা হোটেল, এর নিচের ১০টি ফ্লোরে রয়েছে বিশ্বমানের বাণিজ্যিক সুবিধার নানা আয়োজন।

অফিসপাড়া থেকে শুরু করে এক্সিবিশন হল, শপিংমল, ফুডকোর্ট, সুইমিংপুল, টেনিস কোর্ট ও কনফারেন্স রুম। এছাড়া রয়েছে আইটি জোন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইনস্টিটিউট, সভাকক্ষ, মিডিয়া সেন্টারও। আবার দেশের ১৩৮টি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্যের প্রদর্শনী করতে স্থাপন করা হয়েছে আলাদা কেন্দ্র।

৩০০ ফুট উঁচু এই একটি ভবনের ভেতরই করা হয়েছে বিশ্ববাণিজ্যের সব আয়োজন। ভবনটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় গড়ে তোলা বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার কাল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২৪ তলা এই ভবনের ছাদের ওপর স্থাপন করা হয়েছে হেলিপ্যাড। নিচতলায় থাকবে ব্যাংক ও এক্সিবিশন হল। দ্বিতীয় তলায় রয়েছে শপিংমল ও ফুডকোর্ট। তৃতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম তলা হবে অফিসপাড়া। চতুর্থ তলায় স্থাপন করা হয়েছে স্থায়ী ও অস্থায়ী এক্সিবিশন হল। আইটি জোন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইনস্টিটিউট, সভাকক্ষ ও মিডিয়া সেন্টার হিসেবে ব্যবহার হবে পঞ্চম তলা। অষ্টম তলায় থাকছে হেলথ ক্লাব, ব্যাঙ্কুইট হল আর স্নোকার রুম। সুইমিংপুল, টেনিস কোর্ট ও কনফারেন্স রুমের দখলে গেছে নবম তলা। আর দশম তলা থেকে বিশতলা পর্যন্ত প্রতিটি ফ্লোর মিলে করা হয়েছে পাঁচ তারকা মানের হোটেল। দেশের ১৩৮ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্যের প্রদর্শনী করতে স্থাপন করা হয়েছে আলাদা কেন্দ্র। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ২৪ তলা ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে রয়েছে ২০০ গাড়ির পার্কিং ব্যবস্থা। প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু এই বাণিজ্যিক ভবন উদ্বোধনের মাধ্যমে বিশ্বের মোট ৩২৭টি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

জানা গেছে, ১৯৯৩ সালে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের অনুরোধে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার নির্মাণের জন্য ৭৫ কাঠা জমি বরাদ্দ দেয় তৎকালীন খালেদা জিয়ার সরকার। চিটাগং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের কাছে এ জমি হস্তান্তর করা হয়। ২০০৬ সালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার নির্মাণ শুরু হয়। গোটা প্রকল্পের ব্যয় ২০০ কোটি টাকা হলেও ১৫০ কোটি টাকাতেই শেষ হয়ে যায় এই ভবনের মূল অংশের নির্মাণ কাজ।

কাল চিটাগং চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে একই সঙ্গে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এ উপলক্ষে বুধবার দুপুরে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনভেনশন সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে চিটাগং চেম্বার অব কমার্ম অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। এতে উপস্থিত ছিলেন চেম্বারের শতবর্ষ উদযাপন কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, চিটাগং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম, সহ-সভাপতি জামিল আহমেদ প্রমুখ।

এসময় মাহবুবুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার উদ্বোধনের পাশাপাশি ওইদিন চিটাগং চেম্বারের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত পাঁচ দিনব্যাপী উৎসবেরও উদ্বোধন করবেন।

সিডিএ’র ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প : চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) হাতে নেয়া ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কাল শনিবার সিডিএ’র মোট পাঁচটি প্রকল্প উদ্বোধন করা হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এসব তথ্য জানান সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। এর মধ্যে রয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম টাইগারপাস থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ভিত্তি স্থাপন, পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত চিটাগং সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্প, বায়েজিদ থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত লুপ রোডের নির্মাণ কাজ, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ও ৫৮ কদমতলী ওভারপাস এবং কুয়াইশে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্বোধন।
২৯ জানুয়ারি ২০১৬ এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে