শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৬, ১২:২৮:১১

মালয়েশিয়ায় লুকিয়ে থাকা বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য সুখবর

মালয়েশিয়ায় লুকিয়ে থাকা বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য সুখবর

নিউজ ডেস্ক : মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশিসহ বিদেশি শ্রমিকদের বৈধতা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক।

এমন ঘোষণার পরই বন জঙ্গলসহ নানা স্থানে লুকিয়ে থাকা বাংলাদেশিদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

শুক্রবার দৈনিক নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

এ ব্যাপারে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার শহীদুল ইসলাম বলেন, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক গতকাল তাদের সংসদে দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিয়েছেন, মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত অবৈধ যত শ্রমিক রয়েছে তাদের বৈধতা দেয়া হবে। তবে কত দিনের মধ্যে অবৈধরা বৈধ হতে পারবে, সে ব্যাপারে দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

তিনি বলেন, এখানে দুষ্ট লোকের সংখ্যা বেশি। এর আগে মালয়েশিয়া সরকার অবৈধদের বৈধ হওয়ার সুযোগ দিয়েছিল। তখন বহু শ্রমিকের পাসপোর্ট, টাকা নিয়ে দালালেরা সটকে পড়ে। এবার যাতে তারা যোগাযোগ না করে সরাসরি হাইকমিশনে যোগাযোগ করে, সে ব্যাপারে তিনি সাধারণ শ্রমিকদের কাছে অনুরোধ জানান।

মালয়েশিয়া ভিত্তিক একটি গবেষণা সংস্থা ক্যারাম এশিয়া বলছে, দেশটিতে অবৈধ শ্রমিকদের মধ্যে বাংলাদেশ এবং ইন্দোনেশিয়ার লোকদের সংখ্যাই বেশি।

মালয়েশিয়ায় তিন থেকে সাড়ে তিন লাখের মত অবৈধ বাংলাদেশি শ্রমিক রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।

২০০৮ সালে হঠাৎ মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া বন্ধ করে দেয়। এমন ঘোষণার পর অর্ধলক্ষাধিক শ্রমিকের নামে ঢাকায় কলিং ভিসা আসার পরও তারা আর বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়নি। এ অবস্থায় মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর নামে মানবপাচারকারী চক্র গড়ে উঠে দুই দেশে।

ওই চক্রের সদস্যরা গ্রামের সহজ সরল লোকজনকে স্টুডেন্ট, ট্যুরিস্ট, ভ্রমণ ভিসার নামে মালয়েশিয়া পাঠানো শুরু করে। একপর্যায়ে টেকনাফ দিয়ে ট্রলারে অসংখ্য মানুষকে মালয়েশিয়ায় পাচার করে দেয়। এতে পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটে।

থাইল্যান্ড আর মালয়েশিয়ার সীমান্তে পাওয়া যায় মানুষের গণকবর। এসব ঘটনার পর মালয়েশিয়া সরকার পেশাভিত্তিক ভিসা ইস্যু শুরু করে। এ ভিসায় শুধু ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আর্কিটেক্টসহ দক্ষ লোক যাওয়ার কথা থাকলেও দেশ থেকে গণহারে অদক্ষ শ্রমিক মালয়েশিয়া যাওয়া শুরু করে, যা এখনো অব্যাহত আছে। এতে অনেকেই সেখানে গিয়ে ঠিকমতো কাজ পাচ্ছেন না। আবার অনেকেই দেশটির বিভিন্ন জেলখানায় আটকে থেকে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।

হাইকমিশনার শহীদুল ইসলাম বলেন, এবার বৈধ করার প্রক্রিয়ায় যেসব কোম্পানিকে দায়িত্ব দেয়া হবে তাদের সাথে আমি ইতোমধ্যে একাধিক বৈঠক করেছি। বিগত সময়ে মালয়েশিয়া সরকারের সাধারণ ক্ষমার ঘোষণায় দুই লাখ ৬৪ হাজার অবৈধ শ্রমিক বৈধ হলেও বাকি অনেকেই পাসপোর্ট ও টাকা ঠিক জায়গায় দিতে না পারায় বৈধ হতে পারেনি। অনেকেই প্রতারিত হয়েছেন।

তিনি বলেন, সবাইকে অনুরোধ জানাব, কেউই যাতে দালালদের শরণাপন্ন না হয়। যেকোনো সমস্যার জন্য সরাসরি হাইকমিশনে যোগাযোগ করে। নতুবা এবারো বৈধ হওয়ার নামে অনেকেই প্রতারিত হতে পারেন বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
২৯ জানুয়ারি ২০১৬ এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে