সোমবার, ০৭ আগস্ট, ২০২৩, ০৮:৪৪:৩৭

তৃণমূলের নেতাদের যে নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী

তৃণমূলের নেতাদের যে নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী

এমটিনিউজ ডেস্ক: দলের তৃণমূলের নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা যাকেই মনোনয়ন দিই—ভালো-মন্দ, কানা-খোঁড়া যা-ই হোক—প্রতিজ্ঞা করতে হবে, আপনারা তাকেই জয়ী করার জন্য কাজ করবেন।’ শেখ হাসিনা গতকাল রবিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় সমাপনী বক্তব্যে এ কথা বলেন। তিনি দলের মনোনীত প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার জন্য উপস্থিত নেতাদের দুই হাত তুলে প্রতিজ্ঞা করতেও বলেন। এ সময় নেতারা হাত তুলে প্রতিজ্ঞা করেন।

সভায় উপস্থিত একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সভাদলের নেতাদের সতর্ক করে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মনোনয়ন দেওয়ার পর কেউ যদি মনে করেন, এই একটা সিট পেলেই কী হবে আর না পেলেই কী হবে, অন্য সিট পেলেই তো ক্ষমতায় যাব; কিন্তু দেখা যাবে এভাবে সব সিটে হেরে যাবেন। তারপর ২০০১-এর নির্বাচনে হারার পর বিএনপির যে অত্যাচার-নির্যাতন—মনে আছে সবার? নাকি ভুলে গেছেন? তাহলে এবার বোঝেন যদি আপনারা সামনের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসতে না পারেন, তাহলে আমাদের নেতাকর্মী—তাদের সঙ্গে কী নির্যাতন হবে। আর বাংলাদেশটার অবস্থা কী হবে।

ওরা তো লুটে খাবে। এরা তো লুটেরা। হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করে এখন লন্ডনে বসে যত রকম অপকর্ম করে যাচ্ছে।’ গতকাল রবিবার সকালে ‘শত সংগ্রামে অজস্র গৌরবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে’ শীর্ষক বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

সকাল ৯টা থেকেই তৃণমূলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা গণভবনে প্রবেশ করতে শুরু করেন। সকাল সাড়ে ১০টার কিছু পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা মঞ্চে আসেন। শুরুতে বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সভাটি সঞ্চালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ। দলের নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বক্তব্য দেওয়ার পর তৃণমূলের নেতাদের কথা শোনেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

আট বিভাগের প্রতিটি থেকে একাধিক জেলা, উপজেলার নেতারা বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পান। সভায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদ, আওয়ামী লীগের জেলা, মহানগর, উপজেলা ও পৌরসভা ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের মনোনয়নে অথবা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়র, সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় তৃণমূলের নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘মনোনয়ন যাকেই দিই। আমি কিন্তু ঘরে বসে থাকি না, সারা দিন কাজ করি। সংগঠনের কাজও করি। কোথায় কার কী অবস্থা সেটা কিন্তু ছয় মাস পর পর জরিপ করি। আমাদের এমপিদের কী অবস্থা, অন্য জনপ্রতিনিধিদের কী অবস্থা, তার একটা হিসাব নেওয়ার চেষ্টা করি। জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এর ওপর নির্ভর করছে আমাদের ক্ষমতায় যাওয়া বা না যাওয়া। সে কথাটা মাথায় রেখে, আমাদের ওপর ভরসা রাখতে হবে। আমরা যখন মনোনয়ন দেব অবশ্যই আমাদের একটা হিসাব থাকবে যে কাকে দিলে আমরা আসনটা ফিরে পাব।’

দলের নেতাদের অনেকেই একে অন্যের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার কাছে অভিযোগ জানান। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক এসএমএস দিলে, গিবত গাইলেই কিন্তু আমি তাদের কথা শুনব এমন না। এটা আমি স্পষ্ট বলে দিচ্ছি। কারণ আমার নিজের হিসাব-নিকাশ আছে। ৪২ বছর আপনাদের সঙ্গে আছি। ১৯৮১ সালে সভাপতি নির্বাচিত করেছেন। এরপর কিন্তু আমি প্রতিটি এলাকায় ঘুরে ঘুরে দেখেছি। ফলে আমার কিন্তু ধারণা আছে। কার অবস্থা কী সেটা বুঝেই কিন্তু আমরা মনোনয়ন দিই।’

বিরোধী দলের আন্দোলনের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের গণভবনে একটা ছাগলের তিনটা বাচ্চা আছে। দুইটা দুধ খায় আর একটা এমনিতেই লাফায়। বিএনপি-জামায়াত হলো ওই দুইটা। বাকিরা এমনিতেই লাফায় আর আন্দোলন আন্দোলন করে। এ ক্ষেত্রে আমাদের একমাত্র শক্তি আমাদের জনগণ।’

সরকার দল-মত-নির্বিশেষে সবার জন্য উন্নয়ন করছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঘর দিয়েছি। কে আওয়ামী লীগ, কে বিএনপি তা দেখিনি। কে ভূমিহীন সেটা দেখেছি। আমরা সেভাবেই উন্নয়ন করতে চাই।’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে